ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ ও কাস্টম কর্মকর্তা শফিউলের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির টাকায় শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ 

আপলোড সময় : ৩১-০৮-২০২৫ ০৬:১০:১৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ৩১-০৮-২০২৫ ০৬:১০:১৫ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক 
বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট বানিয়ে অনেকেই হাতিয়ে নিয়েছেন সোনার হরিণ সরকারি চাকরি ও সার্টিফিকেটের কল্যাণে বিভিন্ন তদবির বাণিজ্য করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন অনেকে, আর গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধিকাংশ প্রকৌশলী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগের শেষ নেই অধিকাংশ প্রকৌশলী ও রাজস্ব কর্মকর্তা ঘুষ দুর্নীতি টেন্ডার বাণিজ্য কমিশন বাণিজ্য করে হয়েছেন শত শত কোটি টাকার মালিক সম্প্রতি এমন একটি অভিযোগ এসেছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলী ও বড় ভাই শফিউল বসর কাস্টমস কর্মকর্তা হয়ে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ।


স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর একে একে বেরিয়ে আসছে তাদের দোসরদের নানা অনিয়ম অপকর্ম আর দুর্নীতির তথ্য, ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদে অনেকেই হাতিয়ে নিয়েছেন সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের  সোনার হরিণ সরকারি চাকরি। অনেকেই হয়েছেন নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ফ্যাসিবাদের প্রভাব খাটিয়ে শূন্য থেকে অনেকে বনে গেছেন শত শত কোটি টাকার মালিক।


গণপূর্তের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ ও কাস্টমস কর্মকর্তা শফিউল বসরের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগর ইউনিয়নের কাঠিরপাড়া গ্রামে। 


পিতা ইউনুস আলী ছিলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য, মাসুম বিল্লাহ ছাত্র অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন সেই সুবাদে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাত ধরে দুর্নীতির বর পুত্র ফ্যাসিবাদের দোসর ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর আশীর্বাদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় (যদিও একাধিক অভিযোগ মাসুম বিল্লার বাবার একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা) গণপূর্তের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন এবং বড় ভাই শফিউল বসর জাতীয় রাজস্ব বিভাগের সহকারী রেভিনিউ অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। 


পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ নেতা আমুর আশীর্বাদে পেয়ে যান পদোন্নতি মাসুম বিল্লাহ। কাঠিরপাড়া গ্রামে তাদের একটি ভাঙ্গা টিনের ঘর ছিল কিন্তু প্রকৌশলী হওয়ার পরে হাতে পেয়ে যান আলাদিনের চেরাগ আওয়ামী লীগের পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিয়ে করতেন কমিশন বাণিজ্য, বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচার প্রকল্পে অনিয়ম ঘুষ দুর্নীতি করে শত শত কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন।


একই অভিযোগ বড় ভাই শফিউল বসরের বিরুদ্ধে কাস্টমসের ঘুষ বাণিজ্যের টাকায় স্ত্রী নাইমা আক্তার সুমা শশুর শাশুড়িসহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামি করেছেন বিপুল পরিমাণ সম্পদ।


অভিযোগ আছে, দুই ভাই মিলে গ্রামের ভাঙ্গা টিনের ঘর ভেঙে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেছেন বাবা মা স্ত্রী বড় ভাই সহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামে রাজাপুর উপজেলায় প্রায় ১০০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন ও রাজধানী ঢাকা উত্তরা বনশ্রী সাভারসহ বিভিন্ন জায়গায় করেছেন একাধিক ফ্ল্যাট নামে বেনামে বিভিন্ন সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। 


দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকে তার বিরুদ্ধে জমা হয়েছে একাধিক অভিযোগ পত্র সম্প্রতি দুদক তার ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মাসুম বিল্লাহ বড় ভাই শফিউল বসর ও তার স্ত্রী নাইমা আক্তার সুমার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে ।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাঠিরপাড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ আমলে এরা অবৈধভাবে প্রচুর অর্থ আয় করেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন উপজেলা ও সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক অর্থ ব্যয় করতেন, তাদের বাসায় সব সময় বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও স্বর্ণ মজুদ থাকতো ২০২৪ সালের ৫ অক্টোবর তাদের নগদ অর্থের সন্ধান পেয়ে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়, বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন তাদের বাড়ি থেকে আনুমানিক ১৫-২০ কোটি টাকা ও কয়েকশো ভরি স্বর্ণ লুট হয়, কিন্তু থানার এজাহারে মাসুম বিল্লাহ ও সফিউল বসর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করেছিলেন ১৩ ভরি সোনার গহনা,নগদ ৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ও চারটি মোবাইল ফোন, কারণ এত পরিমান অর্থ ও স্বর্ণের বৈধ হিসাব তাদের কাছে ছিল না ধরা পড়ার ভয়ে তারা মিথ্যার আশ্রয় নেন, একটু ভেবে দেখুন এত বাড়ি থাকতে কেন ডাকাতরা তাদের বাড়ি চিহ্নিত করল কারণ তাদের কাছে সঠিক তথ্য ছিল এই বাড়িতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও স্বর্ণালংকার গচ্ছিত আছে, এবং এই সবকিছু করেছেন দুই ভাই মিলে ঘুষ দুর্নীতি করে। আরো বেশ কয়েকজন বলেন ৫ ই আগস্ট শেখ হাসিনার পতন হলে অনেক আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে যাওয়ার আগে তাদের বাড়িতেও বিপুল পরিমাণ অর্থ রেখে গিয়েছিলেন।


এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আসলেও অর্থ ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তা অদৃশ্য করে দিতেন, তার বাবা ইউনুস আলী ছিলেন একেবারেই দরিদ্র সামান্য একটু কৃষি জমি ছাড়া এদের তেমন কোন সম্পদ ছিল না অথচ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজে ছেলেদের সরকারি চাকরি দিয়েছেন এবং শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণপূর্তের বেশ কয়েকজন প্রকৌশলী ও খুলনা কাস্টমসের  ও কর্মকর্তা  কর্মচারীরা বলেন, মাসুম বিল্লাহ ও শফিউল বসর আমির হোসেন আমুর আত্মীয় হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন এবং সেই প্রভাবের তাদের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খুলতো না ফ্যাসিবাদ চলে গেলে ও ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বহাল তবিয়তে তাদের মত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিরা এখনো কিভাবে চাকরিতে বহাল আছেন এই ধরনের দুর্নীতিবাজ লোককে দ্রুত চাকরি থেকে অপসারণ করে গ্রেফতার করা উচিত। 


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে অনেকেই ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদ তৈরি করে মুক্তিযুদ্ধ কোঠায় চাকরি নিয়েছেন ও ফ্যাসিবাদের প্রভাব খাটিয়ে যারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে আবার অনেকের বিরুদ্ধেই অনুসন্ধান চলমান আছে কোন অপরাধী ছাড় পাবে না। 


এ বিষয়ে কথা বলার জন্য উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ ও শফিউল বসরের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনেই তিনি ফোন কেটে দেন ।


 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]