
এম এ কুদ্দুছ, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন বিষয়ক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১২টায় কটিয়াদী উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন বিষয়ক সমন্বয় সভায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ শাহরিয়ার অনিক সভাপতিত্বে এবং উপজেলা হেলথ ইন্সপেক্টর উত্তম কুমার সেনের উপস্থাপনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কটিয়াদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাবনী আক্তার তারানা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল হোসেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তালুকদার, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আছমা আক্তার, উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আমির মোজাম্মেল হক জোয়ারদার, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মাহবুবুল আলম মাসুদ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমটি (ইপিআই) মোঃ রিয়াজ মাহমুদ মুক্তারসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ও উপজেলার অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।
স্বাগতিক বক্তব্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ শাহরিয়ার অনিক বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা দেবে সরকার। টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে দেশব্যাপী ৯ মাস হতে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশুকে বিনামুল্যে এক ডোজ টিসিভি টিকা প্রদান করা হবে। বিনামুল্যে এ টিকা নেয়ার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের পর ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধন করলে সরাসরি ভ্যাকসিন কার্ড পাওয়া যাবে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে এবং স্কুল ক্যাম্পেইন শেষ হলে পরবর্তী ৮ দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’সহ উপজেলার সকল টিকাদান কেন্দ্রে ইপিআই সেন্টারে স্কুলে না যাওয়া শিশুদের টিকা দেওয়া হবে। এসময় তিনি টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন ব্যবহারের গুরুত্ব ও এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এবং টাইফয়েড ভ্যাকসিন কাদের জন্য প্রযোজ্য, কিভাবে এটি দেওয়া হয় এবং এর সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও) বর্তমানে টাইফয়েড জ্বর নিয়ন্ত্রণে স্থানীয়ভাবে স্থায়ী (এনডেমিক) এবং প্রাদুর্ভাব (এপিডেমিক) উভয় পরিস্থিতির জন্য তিন ধরনের ভ্যাকসিন সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) সব বয়সের জন্য রুটিন টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহারে অগ্রাধিকার পাচ্ছে, কারণ এটি উন্নত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে এবং কম বয়সী শিশুদের জন্য উপযোগী এবং দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দেয়। যেকোনো ওষুধের মতো এরও কিছু সাইড ইফেক্ট থাকতে পারে, তবে বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এটি একটি নিরাপদ ভ্যাকসিন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাবনী আক্তার তারানা বলেন, টাইফয়েডের ভ্যাকসিন দেশে অনেক আগে থেকেই দেওয়া হতো। আগে এটি অভিভাবকেরা বেসরকারিভাবে কিনে দিতেন কিন্তু এবার সরকার বিনামূল্যে দিচ্ছে। টাইফয়েড মূলত এমন অঞ্চলে বেশি হয় যেখানে স্যানিটেশন ব্যবস্থা দুর্বল এবং নিরাপদ পানির অভাব রয়েছে। টাইফয়েড জ্বর হলো পানিবাহিত, স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার কারণে সৃষ্ট একটি সিস্টেমিক সংক্রমণ, যা সাধারণত দূষিত খাদ্য বা পানি গ্রহণের মাধ্যমে হয়ে থাকে।