এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে বোয়ালখালী অভি মালচিং পদ্ধতিতে প্রথম বারের মতো গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে সফল হয়েছেন। তার বাড়ি উপজেলার ৯ নং আমুচিয়া ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষক অভি বড়ুয়া। উচ্চ মূল্যের সবজি উৎপাদনে স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারাল কন্টিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি) প্রকল্পের আওতায় এবার প্রথম বারের মতো বোয়ালখালীতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ করেছেন তিনি। যা দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন অন্যান্য কৃষকরাও।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত মে মাসের শেষের দিকে স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারাল কন্টিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি) প্রকল্পের আওতায় এবার প্রথম বারের মতো বোয়ালখালীতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর দুটি প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। টমেটো সাধারণত শীতকালীন ফসল। তবে বর্তমানে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে গ্রীষ্মকালে টমেটোর আবাদ করা যায়। অসময়ে বাজারে টমেটোর চাহিদার সাথে দামও ভালো পাওয়া যায়। এতে কৃষকরা লাভবান হন। গতকাল সকালে উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক অভি বড়ুয়ার টমেটো ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় দুলছে কাচা, পাকা/আধাপাকা টমেটো।
কৃষক অভি বড়ুয়া বলেন, গত মে মাসের শেষের দিকে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় ৮ শতক জমিতে প্রথম বারের মতো মালচিং পদ্ধতিতে হাইব্রিড বারি -৮ জাতের ৫০০ টি গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চারা লাগিয়েছেন তিনি। এতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বেশ কয়েকটি চারা নষ্ট হয়েছে বলে জানান তিনি।
অভি বলেন, জমি প্রস্তুত, সার, ওষুধ ও পরিচর্যার জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনজুর আলমের কাছ থেকে সহযোগিতা ও নিয়মিত পরামর্শ পেয়েছেন। ইতোমধ্যে বাজারে টমেটো বিক্রি শুরু করেছেন। বর্তমানে পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০/১০০ টাকা। এ পর্যন্ত ৬০ কেজি মতো বিক্রি করেছেন। আরো ৮০/১০০ কেজির মতো বিক্রির আশা করছেন তিনি। এতে করে খরচ বাদে ১২ হাজার টাকা তার মুনাফা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে অল্প জমিতে অনেক লাভবান হওয়া যায়। কীটনাশক ও রাসায়নিক সারও কম লাগে, যার কারণে খরচ কম লাভ বেশি। টমেটো সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাহিদার সাথে দামও বেশি বাজারে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ বলেন, মালচিং হলো বিশেষ পলিপেপার দিয়ে গাছের গোড়ার মাটি ঢেকে দেওয়ার একটি বিশেষ পদ্ধতি। যা আগাছার বৃদ্ধি রোধ করে এবং মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখে। মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও মাটির গুণাগুণ উন্নত করতে সাহায্য করে। প্রয়োজনীয় পানি ধরে রাখতে এবং ফেলে দিতে সাহায্য করে। স্কাইনেট ব্যবহারে ফসলের ফুল, ফল ও চারাকে অতি রোদ-বৃষ্টি. পোকা, পাখি থেকে রক্ষা করে।এই পদ্ধতিতে সবজির আবাদ খুবই লাভজনক। সঠিক পদ্ধতি জেনে চাষাবাদ করলে অবশ্যই অল্প জায়গায় অধিক মুনাফা পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ উপজেলা কৃষি অফিস সব ধরনের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছে বলে জানান তিনি।