
মোঃ আব্দুল্লাহ আল মুকিম রাজু
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। নির্মাণের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যার জেরে উপজেলা প্রকৌশল অফিসের কার্য-সহকারী জাহিদুল ইসলাম স্থানীয়দের গণরোষের মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাস্তার কার্পেটিং শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই নতুন বিছানো অংশ উঠে যেতে দেখা যায়। এতে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।
স্থানীয় ইউসুফ আলী বলেন, “আমি রিকশা নিয়ে যাচ্ছিলাম, দেখি সামনেই নতুন পিচ উঠে যাচ্ছে। পাশেই থাকা মিস্ত্রি বললেন-হাতুড়ি দিয়ে মেরে ঠিক করতে হবে। এটা কি মানসম্মত কাজ?”
নির্মাণে নিয়োজিত শ্রমিক আবুল কালাম স্বীকার করেন, “বৃষ্টির কারণে কিছু বালু ও ময়লা জমেছিল। তা না সরিয়েই কাজ শুরু হয়। এতে দুর্বলতা এসেছে।”
প্রতিবাদকারী এক যুবক মাসুদ রানা অভিযোগ করেন, “রাস্তার ওপর কাদা আর ধুলা থাকতেই পিচ ঢালছে। প্রতিবাদ করলে তারা ভিডিও করে রাখে ও হুমকি দেয়। পরে সবাই মিলে কাজ বন্ধ করি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, “এই রাস্তার কাজ বহুদিন ধরে ঝুলে আছে। মান যাচাই করতে গিয়ে দেখি, নির্মাণ খুবই নিম্নমানের। তাই কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হই।”
ঘটনার সময় উপস্থিত উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমি তখন সাংবাদিকদের বলছিলাম-কাজে অনিয়ম নেই। তখনই কয়েকজন উত্তেজিত ব্যক্তি আমাকে ঘিরে ধরে। আঘাত করে। আমি পালিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচাই।
তিনি আরও জানান, “১০ দিন আগে প্রাইম কোট দেওয়া হয়েছিল। তবে বৃষ্টির পর জমে থাকা বালু ঠিকভাবে পরিষ্কার না করেই কার্পেটিং শুরু হয়—যা সঠিক পদ্ধতি নয়।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমআর ট্রেডার্সের প্রতিনিধি মিজানুর ইসলাম জানান, “এই প্রকল্পটি ২০২০-২১ অর্থবছরের। আমি সাব-ঠিকাদার হিসেবে যুক্ত। বিস্তারিত খেয়াল করে বলতে হবে।” তবে তার সঙ্গে পরে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান বলেন, “সড়ক নির্মাণে গাফিলতির অভিযোগ পেয়েছি। স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করেছে বলেও শুনেছি। তবে কোনো কর্মকর্তা গণপিটুনির শিকার হয়েছেন-এমন কোনো তথ্য আমাদের হাতে নেই। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।