
তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে জুলাই শহীদ দিবস যেন এক আবেগঘন শোকের আবরণে ঢেকে দিয়েছিল পুরো এলাকা। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের স্মরণে এক ব্যতিক্রমী আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
স্মরণ সভায় প্রদর্শিত হয় ৮ মিনিটের হৃদয়ছোঁয়া প্রামাণ্যচিত্র ‘জুলাই অনির্বাণ’। প্রামাণ্যচিত্র শুরু হতেই শতাধিক দর্শকের ভিড়ে নেমে আসে নীরবতা। মুহূর্তেই আবেগে থমকে যায় পুরো হলরুম। কারও চোখে টলমল অশ্রু, কেউ ফুঁপিয়ে কাঁদেন, কেউ আবার নিঃশব্দে চোখের জল মুছতে থাকেন। বক্তৃতা, স্লোগান বা করতালির বদলে কান্নার সুর ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। বক্তব্যে তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলনের শহীদদের রক্তের ঋণ কখনও শোধ করার নয়। আমাদের দায়িত্ব, তাদের স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় নিজেদেরকে গড়ে তোলা। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এই স্মরণ যেন আমাদের নতুন করে জাগ্রত করে।
শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি ও শহীদ জুয়েলের মা বলেন, আমরা শুধু ভাই হারাইনি, হারিয়েছি ন্যায্য অধিকারের সংগ্রামী এক সৈনিককে। আজকের এই প্রজন্ম যেন সেই আত্মত্যাগকে মনে রাখে।
যুদ্ধাহত এক শিক্ষার্থী আবেগ ধরে রাখতে না পেরে বলেন, আজকের এই শোকের নীরবতা আমার কাছে শুধু কান্না নয়, বরং এক অনুপ্রেরণা। আমরা যে লড়াই শুরু করেছিলাম তা চলবে যতদিন বৈষম্য থাকবে।
সভায় জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধারা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তাসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভার শুরুতে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে জুলাই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নারী যোদ্ধাদের ফুল দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।