
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহীতে হঠাৎ করেই পানের বাজারে ধস নেমেছে। পানের দাম না থাকায় পান চাষিরা পড়েছেন বিপাকে। বর্তমানে পান বিক্রি করে চাষিদের লেবার খরচতো দুরের কথা গাড়ির ভাড়াটাও উঠছে না। ফলে চাষিরা পানবরজ নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। গত ১৫ দিন ধরে পানের বাজারে এ অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়াও অনেক পানচাষি বাজারে পানের দাম না পাওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে ডোবায় ফেলে দিচ্ছেন পান।
তবে কৃষি বিভাগ বছলেন, এসময় পানের বাজার একটু কম থাকে। তবে অন্য সময় যে দাম পায় চাষিরা তাতে পান চাষিদের লোকশান পুষিয়ে যায়।
জানা গেছে, দূর্গাপুর উপজেলায় দুই হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে পান বরজ রয়েছে। এ উপজেলার সুস্বাদু পান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত হয়ে থাকে। গড়ে প্রতিদিন পানের আড়ৎগুলোতে প্রায় দুই কোটি টাকার পান কেনা বেচা হয়। বিশেষ করে উপজেলার আলীপুর বৃহত্তর পানের আড়তে বেশি পান কেনা বেচা হয়।
এছাড়াও, দূর্গাপুর বাজার, আলীপুর, শ্যামপুর, কানপাড়া, আমগাছি, তেবিলা, গোপালপুর, পানানগর পানের আড়ৎগুলোতে পানের কেনাবেচা হয়। আর এই আড়ৎগুলোতে গত ১৫ দিন থেকে দেখা দিয়েছে পানের দরপতন। আড়ৎদাররা বলছেন, প্রতিবছরই কম বেশি এসময় পানের বাজার ভালো থাকে না। কারণ, এ সময় সবাই পান ভাঙ্গে। ইচ্ছে করলেও পান রেখে দিতে পারে না চাষিরা।
এসময় পানের উদৎপাদন বেড়ে যায় দ্বিগুণ। পান গাছগুলো বেঁধে দিতে হয়। যার কারণে পানের বাজার কম। তাছাড়াও পানের চাহিদাও অনেক কম থাকে। এসময় বড়বড় পাইকেড়রাও তেমন পান কেনেন না। তবে গতবছর এসময় পানের বাজার এত কম ছিলো না। বর্তমানে তাদের আড়তে ২ টাকা বিড়া থেকে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা বিড়া পান বিক্রি হচ্ছে।
মাড়িয়া গ্রামের পান চাষি রাজিব বলেন, ‘১ পোয়া (৮ বিড়া) পান দূর্গাপুর বাজারে বিক্রি করে পেয়েছি ৩০০ টাকা। গাড়িভাড়া আর লেবার খরচ দিয়েছি ৩৫০ টাকা। আমার পান বিক্রি করে লোকসান হয়েছে ৫০ টাকা।
তিনি আরো বলেন, এসময় যদিও পানের বাজার কম যায় তার পরেও এবছরে পানের দামটা একটু বেশি কম।’ শ্যামপুর পান আড়তে নাটোর থেকে পান কিনতে আসা ব্যবসায়ী সুলতান আলী জানান, এ সময়ের পান খুব ঝাঁঝালো হয়। সবাই খেতে চায় না। দামটাও কম হয়। চাহিদা কম থাকায় পান কিনেও আমাদের তেমন পরতা হয় না। গাড়িভাড়াও অনেক। তার পারেও ১৫০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকা পোয়া দরে পান ক্রয় করেছেন তিনি।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার সাহানা পারভীন লাবনী বলেন, পানের বিভিন্ন সময়কাল আছে। বিশেষ করে বর্ষাকাল আষাঢ় মাসে পানের দাম একটু কমই হয়। এসময় পানের গাছ খুব দ্রুত বেড়ে যায়। পানের উৎপাদন বেড়ে যায় অনেক। ফলে চাষিদের পান বাধ্য হয়ে ভাঙতে হয়। তবে একটা মাস দাম কম পেলেও চাষিরা পুরো বছর ধরেই বেশি দামে পান বিক্রি করে থাকেন।