বুড়িচংয়ে যুবদল নেতার দাপটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে বসছে গরুর হাট, অধ্যক্ষকে হুমকি

আপলোড সময় : ০২-০৬-২০২৫ ১১:১৪:১৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০২-০৬-২০২৫ ১১:২৬:১৫ অপরাহ্ন


বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ফকিরবাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে বসানো হচ্ছে কুরবানির গরু-ছাগলের হাট। জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ভিন্ন নামে ইজারা নিয়ে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠকে গরুর হাট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 


অভিযোগ রয়েছে, বুড়িচং উপজেলা যুবদলের সদস্য ও সদর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল বাজার ইজারা নিয়ে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয় মাঠে এই হাট বসাচ্ছে। 


জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের ফকিরবাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে গবাদিপশুর হাটের জন্য খুঁটি বসানো হয়েছে। মাঠের একপাশে ঝোলানো হয়েছে ‘বিশাল গরু–ছাগলের হাট’ নামে সাইনবোর্ড, চলছে মাইকিংও। আগামী ৪ জুন বুধবার এই হাট বসার কথা রয়েছে। 


ফকিরবাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বৃষ্টির মধ্যে মাঠে খুঁটি বসানোর কারণে খেলাধুলা করা যাচ্ছে না, মাঠের সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। ঈদের পর ছুটি শেষে ফিরে এসেও তারা মাঠে দুর্গন্ধ, মশা–মাছি ও পোকামাকড়ের উপদ্রব পান, যা সহজে দূর করা সম্ভব হয় না।


জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বুড়িচং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৯টি ইউনিয়নে মোট ২১টি অস্থায়ী গরু-ছাগলের হাটের আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে দরপত্র দাখিল হয় ১৯টি। এর মধ্যে রয়েছে, শংকুচাইল, দক্ষিণগ্রাম, কালিকাপুর, ফকিরবাজার, বাকশীমূল, বুড়িচং, পূর্ণমতি, খাড়াতাইয়া নতুন বাজার, পয়াত, ষোলনল বাবুর বাজার, গোবিন্দপুর, কন্ঠনগর, কোরপাই, পরিহলপাড়া, আবিদপুর, কংশনগর, কামারখাড়া ব্রীজ সংলগ্ন, পূর্বহুড়া ও লাটিয়ারপুল গবাদী পশুর অস্থায়ী হাট। 


এছাড়াও, ইজারা না দেয়া ২টি বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ভাবে অস্থায়ী হাট বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল। এতে করে সরকার যেমন রাজস্ব হারাবে অন্যদিকে বৈধ ভাবে ইজারা নেয়া বাজারগুলো লোকসানের মুখে পাড়বে। 


এই হাটগুলোর মধ্যে ফকিরবাজারসহ চারটি বাজারের ইজারাদার হয়েছেন, জগতপুর গ্রামের মৃত ইউনুস মিয়ার ছেলে মোস্তফা কামাল। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু ব্যক্তি অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে একাধিক বাজার ইজারা নিয়ে পরে বেশি লাভে অন্যদের কাছে হস্তান্তর করে। ফলে বাজারে গরু ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হয়, যা ক্রেতাদের অসন্তোষের জন্ম দেয়।


স্কুল মাঠে বাজার বসানো নিয়ে ফকিরবাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পিজিউল আলম জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের মাঠে গত তিন বছর গরু-ছাগলের হাট বসতে দেওয়া হয়নি। এবার মাঠে হাট ঠেকাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একাধিকবার খুঁটি তুলে ফেলেছেন, তবে ইজারাদার স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রভাব খাটিয়ে পুনরায় খুঁটি বসিয়েছেন। তিনি বলেন, “আর বাঁধা দিলে আমাকে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হবে।” আমি আর কিছু বলতে চাইনা আপনারা স্থানীয়দের কাছে জেনে নিয়েন।


এ বিষয়ে ইজারাদার মোস্তফা কামাল মোবাইল ফোনে বলেন, “আমি স্থানীয় লোকজন ও প্রতিষ্ঠানকে ম্যানেজ করেই মাঠে খুঁটি বসিয়েছি।” প্রশাসন অবগত কিনা জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।


বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হোসেন বলেন, “আমরা কোনো স্কুল–কলেজের মাঠে পশুর হাটের অনুমোদন দিইনি। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”





 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]