নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ছাত্র “পারভেজ” হত্যা মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামী মেহেরাজ ইসলাম’কে গাইবান্ধা জেলারসদর থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সব সময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে এ পর্যন্ত মাদক ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, ধর্ষণকারী, পর্ণোগ্রাফি বিস্তারকারী, চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১৯/০৪/২০২৫ তারিখ প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির সামনে ইউনিভার্সিটি অব স্কলারস এর দুই জন ছাত্রীকে নিয়ে ইভটিজিং এর ঘটনায় উক্ত ছাত্রীদ্বয় বিষয়টি তাদের ছেলে বন্ধুদের অবগত করলে তারা প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ছাত্র পারভেজের সাথে তর্ক বিতর্ক ও মারামারি শুরু করে। বিষয়টি ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ মিমাংসা করে দেওয়ার পর উভয় পক্ষ ভার্সিটির বাহিরে বের হয়ে গেলে বিবাদীগণ পূণরায় পারভেজকে চাকু, ছুরি ও লাঠিসোঠা দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরবর্তীতে পারভেজকে চিকিৎসার জন্য কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পারভেজকে মৃত ঘোষণা করে।
উক্ত ঘটনায় ডিএমপি ঢাকার বনানী থানায় হত্যা মামলা নং-১৯, তাং-২০/০৪/২০২৫ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু হওয়ার পর র্যাব-১ মামলার বিষয়টির রহস্য উদঘাটন এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। র্যাব-১, সিপিসি-১ এর কোম্পানী কমান্ডার, লেঃ কমান্ডার মোহাম্মদ জাকিউল করিম এবং সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ এর নেতৃত্বে প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধান ও মামলার ঘটনাস্থল প্রাইম ইউনিভার্সিটি সরজমিনে পরিদর্শন করে এবং ভার্সিটি কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে জানা যায় এজাহারনামীয় আসামীদের অনেকেই ঢাকা ছেড়ে চলে গেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রযুক্তিগত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় উক্ত হত্যা মামলার ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান আসামী মেহেরাজ ইসলাম বগুড়া জেলার সাতমাথা এলাকায় অবস্থান করছে। র্যাবের আভিযানিক দল বগুড়া জেলায় তার গতিবিধির উপর নজরদারী অব্যাহত রাখে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জানতে পারে আসামী মেহেরাজ স্থান ত্যাগ করে গাইবান্ধা জেলায় অবস্থান করছে। অতঃপর র্যাব-১৩ এর সহযোগিতায় মামলা রুজু হওয়ার ৭২ ঘন্টার মধ্যে ২৩/০৪/২০২৫খ্রিঃ সন্ধ্যা বেলায় গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন সাহা পাড়া ভবানীপুর এলাকা হতে মামলার প্রধান আসামী মেহেরাজ ইসলাম, পিতা-নুরুল ইসলাম সরদার, মাতা-পারভীন বেগম, সাং-বাসা-গ ১২৬/১ হাজারীবাড়ী , মহাখালী, বনানী, ডিএমপি, ঢাকা’কে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, উক্ত আসামী তার মামা শ^শুরের বাড়ীতে আতœগোপনে ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী মেহেরাজ বর্ণিত হত্যা মামলার ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে। উক্ত আসামী’কে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বনানী থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলমান।
এছাড়াও ইতি পূর্বে প্রযুক্তিগত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে র্যাব-১ এর চৌকস আভিযানিক দল উক্ত মামলার এজাহারনামীয় ৫ নং আসামী হৃদয় মিয়াজী’কে মামলা রুজু হওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ২২/০৪/২০২৫খ্রিঃ তারিখে কুমিল্লা জেলা হতে র্যাব-১১ এর সহায়তায় গ্রেফতার করে ইতোমধ্যে বনানী থানায় হস্তান্তর করেছে। আপনারা অবগত আছেন যে উক্ত আসামীকে বিজ্ঞ আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।