রাজশাহীতে বাবার লাশ মর্গে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে হাজির মেয়ে আলফি

আপলোড সময় : ১৯-০৪-২০২৫ ০২:০৭:০৩ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৯-০৪-২০২৫ ০২:০৭:০৩ পূর্বাহ্ন




মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে বাবার লাশ। বাড়ির চারপাশে শোকের ছায়া আর কান্নাকাটি। তবু চোখ মুছে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হলো মেয়ে আলফি আক্তার। আলফিকে উত্ত্যাক্তের প্রতিবাদ করায় বুধবার বাবা আকরাম হোসেনকে ইট দিয়ে আঘাত করে হত্য করা হয়েছে। তিনি নগরীর তালাইমারি এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় বাসচালক ছিলেন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।

আর ঠিক পরদিন, বৃহস্পতিবার সকালে এসএসসি পরীক্ষা দিতে যায় তার মেয়ে আলফি। বাবার লাশ দাফনের আগেই পরীক্ষার হলে বসতে হয় তাকে। রাজশাহীর অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের ছাত্রী আলফি। তার পরীক্ষা কেন্দ্র রাজশাহীর শিরোইল উচ্চ বিদ্যালয়ে। বৃহস্পতিবার ছিল ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা।

অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোঃ সাইফুল ইসলাম চাঁদ বলেন, আলফি খুবই মেধাবী ছাত্রী। আমরা তার বাবার হত্যাকাÐের দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করছি।

আলফির মা মুক্তি বেগম বলেন, কোনোভাবেই পরীক্ষা দিতে চাইছিল না আলফি। ‘সারারাত মেয়েটা কেঁদেছে। বারবার বলেছে ‘বাবা নেই, পরিক্ষা দিতে আমার পরিক্ষা দিতে ইচ্ছে করছে না। পরে আত্মীয়-স্বজনরা অনেক বুঝিয়ে পরীক্ষার হলে পাঠায়।

মুক্তি জানান, তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যাক্ত করছিল তালাইমারির বাবর আলী রোডের নান্টু ও তার সহযোগীরা। বুধবার বিকালে রাস্তায় চলার সময় আলফিকে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ওই বখাটেরা।

আকরাম এ বিষয়ে নান্টুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে নান্টু। এদিন রাতে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তারা এসে প্রথমে আকরামের ছেলে ইমাম হাসান অনন্তকে মারধর করে। ছেলের চিৎকার শুনে ছুটে গেলে আকরামকে ঘিরে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হামলাকারীরা।

মারাত্মক আহত অবস্থায় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আকরামকে ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার লাশ দাফনের আগে বিকাল ৫টায় তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় মহা-সড়কের পাশে এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা লাশ নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধন থেকে আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও বিচার দাবি করেন।

এ ঘটনায় আকরামের ছেলে অনন্ত বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। আসামিরা হলো-নান্টু, বিশাল, খোকন মিয়া, তাসিন হোসেন,  অমি, নাহিদ ও শিশির। মামলায় আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

নগরীর বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহাম্মেদ বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টায় লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।




 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]