মোঃ শহিদুল ইসয়াম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি আঞ্চলিক সড়কের সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় লাখো মানুষের চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের পালিমা থেকে ঘাটাইলের লোকেরপাড়া পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কটির সংস্কার কাজ নির্ধারিত সময়ের দেড় বছরেও শেষ হয়নি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে আশপাশের অন্তত ২৫ গ্রামের বাসিন্দা।
ঘাটাইল উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২ কোটি ৯৮ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে ৪ দশমিক ৯৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি সংস্কারের কাজ পায় ‘এম/এস ইসলাম ব্রাদার্স লিমিটেড’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দরপত্র অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেছে ১ বছর ৮ মাসেরও বেশি সময় আগে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পালিমা থেকে লোকেরপাড়া পর্যন্ত সড়কটি গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী ও ঘাটাইল উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম। টাঙ্গাইল জেলা শহরে যাতায়াতে প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করে লাখো মানুষ। এছাড়া এই পথ দিয়েই শিয়ালকোল হাট, খায়েরপাড়া হাটসহ আশপাশের ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পিচ ঢালাই সড়কটির স্থানে স্থানে গর্ত সৃষ্টি হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছিল। এ অবস্থায় সড়কটি সংস্কারে প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্প কাজের শুরুতেই পুরো সড়কের কার্পেটিং উঠিয়ে ফেলা হয়। আর তাতে যেন জনভোগান্তিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। কেননা এরপর আর কাজের কোনো অগ্রগতি নেই। সড়কটি এভাবে দীর্ঘদিন ধরে যানবাহন ও মানুষ চলাচলের অযোগ্য করে ফেলে রেখে কার্যত লাপাত্তা হয়ে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে দিন দিন সড়কটির অবস্থা আরও করুণ হয়ে পড়ছে।
পথচারীরা জানান, এই রাস্তায় চলতে গেলে মনে হয় পেটের ভেতর নাড়িভুঁড়ি বুঝি ছিঁড়ে যাচ্ছে। আর নাক-মুখে রুমাল চাপা দিয়েও ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। এই ধুলাবালি নাক-মুখ গিয়ে প্রতিনিয়ত প্রবেশ করায় অসুস্থ হয়ে পড়ছি। রোগীকে হাসপাতালে নেওয়াও আরেক বিপদ ডেকে আনছে।
একাধিক চালকরা জানান, এই রাস্তা দিয়ে যানবাহন চালানো খুবই কষ্টসাধ্য। যানবাহনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ক্ষতিসহ প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএস ইসলাম ব্রাদার্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে এই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. হারুন বলেন, প্রকল্পকাজে গতি আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং দ্রুত কাজ সম্পন্ন হবে।
ঘাটাইল উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু সাঈদ বলেন, সড়কটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই কাজ পুনরায় শুরু হবে।