নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বাধীনতাহীন জাতির কোন অধিকারের গ্যারান্টি থাকে না, তাই অর্জিত স্বাধীনতা সুসংহত ও অর্থবহ করে গণমানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে দলমত, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা।
তিনি আজ বিকাল ৩.৩০টায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য আবু সাঈদ মণ্ডল, জামিল বিন হোসাইন ও আবু জাওয়াদ প্রমূখ।
আব্দুর রহমান মূসা বলেন, স্বাধীনতা প্রত্যেক জাতির আরাধ্য। আর আমাদের স্বাধীনতা জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। জামায়াত একটি গণমুখী, কল্যাণকামী ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসাবে দেশের অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ ও টেকসই করার জন্য জনগণের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার চেষ্টা করেছে। ৫আগস্ট বিপ্লবেও আমরা ছাত্র-জনতার সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন- সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। ফলে এক ঐতিহাসিক বিজয় আমাদের হাতে এসে ধরা দিয়েছে। আমরা দেশকে ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। একইভাবে আমরা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছি।তিনি মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে শাহাদাত বরণকারী জাতীয় বীরদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন এবং তাদের স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন, সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ, আইনের শাসন ও উদার গণতন্ত্রই ছিলো মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। কিন্তু আওয়ামী-বাকশালীরা নিজেদের অবৈধ ক্ষমতালিপ্সা চরিতার্থ ও জনগণের ওপর অপশাসন-দুঃশাসন চালানোকেই মুক্তিযুদ্ধির চেতনা বানিয়ে দীর্ঘ পরিসরের জনগণর ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। তারা দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়ে দেশকে একটি মাফিয়াতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলো। বাকশালীরা পরিকল্পিতভাবে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের মুখে ঠেলে দিয়েছিলো। কিন্তু ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদেরকে লজ্জাজনকভাবে পালাতে হবে।
তিনি জামায়াতের রাজনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সম্পর্ক বলেন, আমরা দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে জনপ্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই। আমরা এমন এক সমাজ প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন যে সমাজ হবে গণমুখী, মানবিক ও কল্যাণকামী। যেখানে সকল নাগরিকের অধিকারের সমান নিশ্চয়তা থাকবে। তিনি সে স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
মাহফুজুর রহমান বলেন, অনেক ত্যাগ ও কোরবানীর বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাই দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা দলমত, জাতিধর্ম ও গ্রোত্র নির্বিশেষে সকলকেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কিন্তু মহল বিশেষ আমাদের জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ ও বিতর্কিত করতে নানাবিধ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু এসব বিভিষণদের মনে রাখা উচিত আমরা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করিনা।
মূলত যারা আগস্ট বিপ্লব ও দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপতৎপরতা চালাবে তাদেরকেও পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদের ভাগ্য বরণ করতে হবে। তিনি অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।