বিশেষ প্রতিনিধি: মুসাব্বির মাহমুদ সানি'র সাথে ছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গভীর সখ্যতা এবং তাদেরকে ব্যবহার করে চলেছে বীর দর্পে। এমনকি গভীর সখ্যতা গড়ে সান্নিধ্য পেয়েছিল পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সংসদ সদস্যের।
বিগত সময়ে এভাবে চরম দাপটে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন পিরোজপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার মুসাব্বির মাহমুদ সানি, তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন করে নানামুখী অত্যাচার নির্যাতনের শিকার, তখনো পাওয়া যায়নি তাকে।
কিন্তু হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ২-৩ দিন আগে রাস্তায় নামেন তিনি, ফটোসেশন শেষে আবারও আত্মগোপনে। তবে ৫ আগস্টের পর সানি বনে যান একজন বড় সমন্বয়ক। এ পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন অফিস আদালতে প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি নামেন চাঁদাবাজিতে।
পাশাপাশি বিশাল বাহিনী নিয়ে বিভিন্ন স্থানে হামলা ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাটও করেন, সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া সানি। এরপর সে যোগ দেয় জাতীয় নাগরিক কমিটিতে। জেলা প্রশাসকের কাছে সেই প্রভাবের জোর খাটিয়ে বাধ্য করেন ঢাকায় যাওয়ার জন্য তার নামে ৫টি বাস রিকুইজিশন দিতে। সর্বশেষ পিরোজপুর শহরে নির্মানাধীন একটি মডেল মসজিদের ঠিকাদারের কাছে দাবি করেন মোটা অংকের চাঁদা। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সেখানে সানির নেতৃত্বে করা হয় হামলা।
এর পাশাপাশি সেখান থেকে লুটে নেওয়া হয় ৫ লক্ষ টাকা, এছাড়া নিজেই নেতৃত্ব দিয়ে পুড়িয়ে দেয় পিরোজপুর শহরের বলেশ্বর সেতুর টোল ঘর। আর এসব কর্মকান্ডের কারণে সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে বাড়তে থাকে তার দূরত্ব। এ দূরত্বের জেরে একবার মারও খেয়েছে সানি। এমনকি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনেই নিজের সমর্থকদের নিয়ে জড়িয়েছিলেন হাতাহাতি।
এভাবে নানা অপকর্মের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্টের পর আলোচনায় রয়েছে সানি, শুক্রবার নির্মানাধীন মডেল মসজিদে হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর শনিবার দুপুরে পিরোজপুর শহর থেকে গ্রেফতার হয়েছে সানি। এ মামলায় সহযোগী হিসেবে রয়েছে তার ছোট ভাই সানজিদ। সানি গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তবে সমন্বয়কের পরিচয় ব্যবহার করে সানি সহ আর কেউই যেন কোন অপকর্ম করতে না পারে এজন্য দাবি জানিয়েছে সচেতন ছাত্রসমাজ।