রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
লালন স্মরণোৎসব-২০২৫ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়ায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩মার্চ) বিকেলের দিকে লালন একাডেমি অডিটোরিয়ামের ২য় তলায় উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি উক্ত স্মরণোৎসবের আয়োজন করে।
পবিত্র মাহে রমজানের কারণে দর্শনার্থীদের আনাগোনা কম থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি মো. তৌফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত, এ অনু্ষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য, রেখেছেন কবি ফরহাদ মজহার।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান।
অনু্ষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রশিদুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম।
প্রধান অতিথি কবি ফরহাদ মজহার তার বক্তব্যে বলেন, আমরা ফকির কখনোই লালনবাদ প্রচার করি না। এটা পরিষ্কার থাকা উচিত। লালনবাদ বলে কোনো ধর্ম নেই। এটা গুরুবাদী ধর্ম।
লালন ভক্তদের উদ্দেশে ফরহাদ মজহার বলেন, এই ধারাতে কোনো তথাকথিত চিরন্তন, চিরস্থায়ী, শ্বাশ্বত মতাদর্শে বিশ্বাস করে না। তারা গুরুবাদী। গুরুবাদী মানে তারা শুধু জীবন্ত মানু্ষের ভোজন করে। গুরু আপনাকে যেটা করতে বলেছেন, এটা করবেন। আপনার গুরু আপনাকে যে মন্ত্র দিয়েছেন, সেই মন্ত্রে চলবেন। এটাকে লালনবাদ বানাবেন না।
তিনি আরও বলেন, লালন আমাদের গঠন করতে চেয়েছিলেন। নতুন ধরনের সমাজ গড়ার কথা বলেছেন। নতুন ভাবে রাষ্ট্র বানানোর কথা বলেছেন। সেই রাষ্ট্রে বা সমাজে কোনো পুলিশ লাগে না। এমন একটি সমাজের স্বপ্ন লালন দেখেছেন সেখানে পুলিশ লাগে না। কারণ আপনার মনে যদি পুলিশ থাকে, তাহলে বাইরে পুলিশ লাগবে কেন? তার মানে মনে পুলিশ নেই। আপনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। আপনি উচ্ছৃঙ্খল।
এ সময় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, প্রতিবছর দোলপূর্ণিমা তিথিতে মরমি সাধক ফকির লালন শাহের তিন দিনব্যাপী স্মরণোৎসব অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ ও সাড়ম্বরে উদযাপন হয়। তবে এ বছর দোলপূর্ণিমা পবিত্র রমজান মাসে হওয়ায় লালন স্মরণোৎসবে শুধু আলোচনা সভা ও বাউল আপ্যায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা ও যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য রক্ষার্থে এ বছর বাউলদের মাগরিবের পরে এবং রাতে সেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।