নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আমার অহংকার”এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণ প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১০/০৩/২০২৫ তারিখ সময় আনুমানিক ১৮.৩০ ঘটিকার সময় ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আড়াই মাস বয়সের একটি শিশু সন্তান হারিয়ে যায়। এসংক্রান্তে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি মামলা রুজু হয়। পরবর্তীতে শিশুর পিতা সিপিসি-১, দিনাজপুর কোম্পানী কমান্ডার এর নিকট একটি অভিযোগ দেন এবং তার সন্তানকে উদ্ধারের জন্য জানান। এরই ধারাবাহিকতায় সিপিসি-১, দিনাজপুর ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং হারিয়ে যাওয়া শিশু সন্তানকে উদ্ধার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে।
ঘটনার বিবরণঃ গত ০৯/০৩/২০২৫ তারিখ বেলা অনুমান ১৪.০০ ঘাটিকার সময় শিশু ভিকটিম “সায়ান আহামেদ” (২মাস ১৭) দিন নিউমনিয়া জনিত অসুস্থতার কারণে শিশু ভিকটিমের পিতা বাদী মোঃ শিমুল ইসলাম (২৪), পিতা-মৃত সোলেমান আলী, মাতা-মৃত জমিলা বেগম, সাং-মুজাবল্লী, ডাকঘর-খলিসাকুড়ী, থানা-ভুল্লী, জেলা-ঠাকুরগাঁও সহ তার স্ত্রী মোছাঃ হাসি আক্তার (২০), শিশু ভিকটিমকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। বাদীর স্ত্রীর সেবা যত্ন ও সহযোগীতা করার জন্য বাদীর শ্বাশুড়ী পারভীন বেগমও ছিলেন।পূর্ব হতে চুরির উদ্দেশ্যে অবস্থান করা মহিলা ভিকটিমের পরিবারের পাশে থেকে তাদের যত্ন নেয় এবং বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করে।ইং ১০/০৩/২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ১৮.৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিমের মাতার ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলে শিশু বাচ্চাটিকে অপরিচিত উক্ত মহিলাকে দিয়ে ওয়াশরুমে যান। ভিকটিমের মাতা ওয়াশরুম শেষ করে শিশু ওয়ার্ডে এসে তার শিশু বাচ্চাটি সহ অপরিচিত মহিলাটিকে খুঁজে পান না। সংবাদটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাদীকে জানালে তিনি তাৎক্ষনিক ঠাকুরগাঁও থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশের মোবাইল টিম তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা ও হাসপাতালের সামনে ফার্মেসীর দোকানের সিসি ক্যামেরা যাচাই বাচাই করে অপরিচিত মহিলাকে সনাক্ত করে।এই সংক্রান্তে বাদী ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী এন্ট্রি করেন, যার সাধারণ ডায়েরী নং- ৭০৭, তারিখ- ১০/০৩/২০২৫ খ্রিঃ।পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানার মামলা নং-১১, তারিখঃ ১২/০৩/২০২৫, ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৭/৩০ দায়ের করেন। উক্ত ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারিত হয় এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।ঘটনার প্রেক্ষিতে র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং ভিকটিম উদ্ধার সহ আসামীদেরকে গ্রেফতার উদ্দেশ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায়ঃ অদ্য ১২ মার্চ ২০২৫খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ০১.৪৫ ঘটিকার সময় র্যাব-১, সিপিএসসি, গাজীপুর এবং র্যাব-১৩, সিপিসি-১, দিনাজপুর এর যৌথ আভিযানিক দল র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর, ইন্ট উইং এর তথ্যের ভিত্তিতে সূত্রোক্ত মামলায় তদন্তেপ্রাপ্ত আসামীদের অবস্থান নির্ণয় করতঃ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন মুলাইদ এলাকায় বিশেষ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। সোনালী আক্তার শিরিন(২০), পিতা-মোঃ সামছুদ্দিন, স্বামী-মোঃ রাজু কবিরাজ, সাং-নুলতলা বড়বাড়ী, থানা- গোবিন্দগঞ্জ, জেলা- গাইবান্ধা, ২। মোঃ রাজু কবিরাজ(২২), পিতা-মোঃ সানোয়ার, মাতা- মোছাঃ লাভলী বেগম, সাং-নুলতলা বড়বাড়ী, থানা- গোবিন্দগঞ্জ, জেলা- গাইবান্ধা, ৩। মোঃ লিটন মিয়া(৩৫), পিতা- মোঃ আক্কাছ আলী, মাতা-মোছাঃ রোকেয়া বেগম, সাং- চকপাড়া, থানা-কমলাকান্দা, জেলা- নেত্রকোনা, ৪। মোছাঃ লাভলী বেগম(৩৯), পিতা- মৃত লুৎফর রহমান, স্বামী- মোঃ লিটন মিয়া, সাং- চকপাড়া, থানা-কমলাকান্দা, জেলা- নেত্রকোনাদেরকে গ্রেফতার করে এবং তাদের হেফাজত হতে ভিকটিম সায়ান আহামেদকে সহ ০৪ (চার) টি মোবাইল ফোন, নগদ ১,০৫০/- (এক হাজার পঞ্চাশ) টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীরা উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীগন ও ভিকটিমকে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।