
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: আওয়ামী কর্মী পিন্টু। পেশা সাবেক স্বর্ণকার ও মুদি দোকানী। তবে পরিচয় দেয় সাংবাদিক। নিজের দোকান ভেঙ্গে এলাকার বিএনপি’র অঙ্গ সংগঠনের ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছিলেন তিনি। পরে ৩৬ হাজার টাকা ক্ষতিপূরুণ আদায় করে। পুলিশ দিয়ে এলাকার বিএনপি জামায়াতের লোকজনকে ধরিয়ে দেওয়া। বাঁচানোর নামে অর্থ অত্মসাৎ করা সেই পিন্টুকে গণধোলাই দিয়েছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার দিনগত রাত ১১টা ৫৪ মিনিটি রাজশাহী মহানগরীর মাতিহার থানার তালাইমারী ট্রাফিক মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে, এদিন রাত ১১টার তালাইমারী ট্রাফিক মোড়ে দিকে পিন্টুকে ট্রাফিক মোড়ে আটকায় স্থানীয়রা। তার বিরুদ্ধে ৫আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, বিস্ফোরণ ঘটানো, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অভিযোগে বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা রয়েছে। তাকে আটকানোর লক্ষ্যই ছিলো সেই মামলায় পুলিশে সোপর্দ করা। ফোন দেয়া হয় পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি এসআই মিজানকে আসামী আটকের নির্দেশ দেন ওই কর্মকর্তা। কিন্তু ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আওয়ামী লীগ কর্মী পিন্টুর ছেলে মুন পৌঁছায়। এ সময় জনতার উদ্দেশ্যে পিন্টুর ছেলে বলে আমার আব্বাকে ছাড় নইলে একেক সালাকে দেখে নিব। যেমন হুমকি তেমন কাজ। সাথে সাথে উত্তেজিত জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ে পিন্টু ও তার ছেলে মুনের উপর। চলে চড় থাপ্পড় লাথি ঘুষি। সেখানে থাকা স্থানীয় বিএনপি নেতা মোঃ খাসদার আলী ও মোঃ নূরুল ইসলাম উত্তেজিত জনতাকে থামায়। এ সময় ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পিন্টুকে তাদের হেফাজতে নেয় এবং তার ছেলে মুনকে মতিহার থানা পুলিশ হেফাজতে নেয়।
উল্লেখ্য, সাবেক স্বর্ণকার ও মুদি দোকানী পিন্টু নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রত্যান্ত গ্রামঞ্চলে গিয়ে মানুষকে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে নিউজের হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় করে থাকে। ইতিপূর্বে সে ও তার ৩জন সহযোগী একটি প্রাইভেটকার নিয়ে নাটোর জেলার একটি পুকুরে গিয়ে চাঁদা চায়। টাকা না পেয়ে পুকুরের মাছ চাঁদা নেয়। একই দিনে আরেক পুকুরে চাঁদা চাইলে গণধোলাই দিয়ে নাটোর সদর থানায় পুলিশে সোপর্দ করে নাটোরের জনতা। এরপর তাহেরপুরে একটি পুকুরে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয় পিন্টু ও তার সহযোগীরা। ওই সময় গণধোলাইয়ের শিকার হয় তার সহযোগীরা। কিন্তু পিন্টু কৌশলে পালিয়ে যায়। এই হলো সাবেক স্বর্ণকার, মুদি দোকানী ও কথিত সাংবাদিক পিন্টু। এদের এই ধরনের কর্মকান্ডের উদাহরণের শেষ নেই।
স্থানীয় যুবদল কর্মী ভুক্তভোগী আজিম জানায়, আমাকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে ছাড়ানোর নাম করে ৪হাজার টাকা নিয়েছে পিন্টু। কিন্তু আমাকে পুলিশের কবল থেকে মুক্ত করতে পারেনি আবার টাকাও ফেরত দেয়নি। আমাকে জেলে যেতে হয়েছে। জেলে থানাকালীন আমার দাদা মারা গেছেন। মৃত দাদার মুখ দেখতে পাইনি। এছাড়া একাধিক স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা জানায়। নিজের দোকান ভেঙ্গে ৪৬ হাজার টাকার মামলা দেয় পিন্টু পরে ৩৬ হাজার টাকা নিয়ে মামলা তুলে নেয়। এছাড়াও তার বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম শেষ নাই বলেও জানায় স্থানীয়রা।