মাহফুজ রাজা, স্টাফ রিপোর্টার
কিশোগঞ্জের হোসেনপুরে চলতি মৌসুমে বিভিন্ন জাতের আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি ফুটে উঠেছে।গত বছরের তুলনায় এ বছর চাষাবাদও হয়েছে বেশি।
আলু উৎপাদনে বাজিমাত করেছেন উচ্চ শিক্ষিত সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দীন। তিনি এবার
১১ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন, আনুমানিক খরচ ১৫ লাখ টাকা।যদি ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় তাহলে ২২লাখ টাকা বিক্রি হতে পারে বলে আশা করছেন।যা থেকে তার লাভ হবে ৭ লাখ টাকা।
গত বছর শীত মৌসুমে আবহাওয়া প্রতিকুলতায় আলু চাষে নানা ধরনের রোগ বালাই থাকায় কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন হয়নি।চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।
আলু সংরক্ষণের জন্য এ এলাকায় একটি হিমাগার থাকলে কৃষকরা আরো বেশি লাভবান হতে পারতেন বলেও মন্তব্য করছেন আলুচাষীরা।
শনিবার সরেজমিনে সিদলা ইউনিয়নের চর বিশ্বনাথপুর মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কাক ডাকা ভোর থেকে শ্রমিকদের সাথে তপ্ত দুপুরেও আলু তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উচ্চ শিক্ষিত সফল চাষী সিরাজ উদ্দীন ।
একজন উচ্চ শ্রেণীর মানুষ হয়েও চাষের সাথে যুক্ত থেকে যেন মডেল হিসেবে আগ্রহ বাড়াচ্ছেন আলু চাষীদের। সিরাজ উদ্দীনছোট বেলা থেকেই সবসময় নিজেকে পরোপকারে নিয়োজিত রেখেছেন, পাশাপাশি কৃষি খাতের সাথে জড়িয়ে আছেন।
জানা যায়, সিরাজ উদ্দিন ইউপি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায়, মানব সেবাই একাধিক বার জেলার সেরা চেয়ারম্যান পদক পেয়েছেন। মানুষের প্রতি যেমন তার নিবিড় ভালোবাসা, স্বদেশের মাটির প্রতিও রয়েছে অনবদ্য টান। তাইতো মানব সেবার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন রকম ফসল ফলিয়ে থাকেন। তার পাশাপাশি তিনি একজন সফল খামারিও বটে।
স্থানীয়রা জানায়, এতো উচ্চ শিক্ষিত, চেয়ারম্যান হয়েও তার মাঝে অহংকারের লেশমাত্র নেই, সবসময়ই হাসি খুঁশিতে সবার সাথে মিশে চলেন। খেটে খাওয়া মানুষদের অন্তরের গভীরে তার বসবাস।
একজন কৃষক হিসেবে গর্ববোধ করে সিরাজ উদ্দীন বলেন, কৃষি আমার আদর্শ পেশা। সর্ব মহলে সবাই জানে আমি কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি।এতে আমার কোন খারাপ লাগেনা।
তিনি জানান, আমি যখন মাষ্টার্স করেছি। তখন আমাদের গ্রামে মাষ্টার্স কেউ করে নাই। সেটা ১৯৯৯ ব্যাচ।তখন গ্রামের মানুষ কৃষি কাজকে ভালোভাবে নিতো না। আমি চিন্তা করেছি কৃষি থেকে দেশের মানুষের জন্য কিছু করা সম্ভব।টাকা দিয়ে বিক্রি করলেও দেশের উৎপাদনশীল কাজে অংশ গ্রহণ করা যায়।ছোট করে শুরু করেছিলাম, আজ আমি সফল উদ্যোগক্তা হিসেবে আমার প্রজেক্টে ৬মাস ১২ জন কৃষিশ্রমিক নিয়মিত কাজ করে । এখন চলছে আলু উত্তোলন কার্যক্রম, কিছু দিন পর হারভেস্ট হবে মিষ্টি কুমড়া।
তিনি জানান, ভালো ফসল উৎপাদন করে আগামীর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে তার এ কর্মযজ্ঞ।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ একেএম শাহজাহান কবির জানান, এ বছর অনুকূল আবহাওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।গত বছর আলু আবাদ হয়েছিলো ৪০০ হেক্টর জমিতে এ বছর ৪১০ হেক্টর,আমাদের অফিস সার্বক্ষণিক মাঠে পরামর্শ ও সহায়তা করছেন।