আব্দুল্লাহ আল মামুন, যশোর
মণিরামপুর শহর থেকে ২.৫০কিঃমিঃ দূরে ১৩নং খানপুর ইউপির ঋষিপাড়ার পরেই মাঠের ভিতর ধূলর পুকুর পাড়ে ঐতিহ্যের প্রতীক দন্ডায়মান ২টি হাজার বছরের বটবৃক্। মাসনা খানপুর গ্রামের সর্দার পাড়ার মৃত হাজী নজরুল সরদার, মৃত হাজী গোলাম আকবর মাস্টার, হাজী মোঃ হাফিজুর রহমান সহ সাত (৭) শরীকের জমিতে এ ২টি বটবৃক্ষের ছায়াতলে স্থানীয় কয়েক গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি ঈদগাহ দৃশ্যমান। লোকমুখে প্রচার আছে এ বটবৃক্ষের বৃহৎটিতে সকল ধর্মের কমবেশি মানুষ "মানদ" করে আসছে হাজার বছর ধরে, কেউ বটগাছের সঠিক বয়স বলতে না পরলেও সবারই বাপ-দাদারা এ বটবৃক্ষের ছায়াতলে পরিশ্রান্ত হয়েছে।
এ গাছের ক্ষতি তো দূরের কথা এখানকার একটি পাতা দিয়ে নেতিবাচক কিছু করতে গেলেও তার অমঙ্গল হয়েছে। হঠাৎই গত ২ মার্চ রবিবার রাত আনুমানিক ১০ঃ৩০-১১টা নাগাত কে বা কারা আগুন লাগায়ে দেই বৃহৎ ঐ বটগাছে। ভোর রাতে খবর পেয়ে সকাল৬টা নাগাত মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের ৩সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে বটবৃক্ষ রক্ষায় মণিরামপুর ফায়ারসার্ভিসকে অবগত করে। কালক্ষেপন না করে মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ সাফায়েত আলম দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘ ১ঘন্টা ৩০মিঃ যাবত প্রচেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। সহস্র বছরের বটগাছটি প্রাণ ফিরে পায়।ঐতিহ্যের বাহক ধূলর পুকুর পাড়ের হাজার বছরের ২টি বটগাছের একটিতে যে বা যাহারা এ অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে এটাকে জঘন্য ও শাস্তিযোগ্য অপরাধের সমতূল্য মনে করছেন স্থানীয় সাধারন মানুষেরা।
জমির এক শরীক হাজী মোঃ হাফিজুর সর্দারের ছেলে মোঃ মারুফুজ্জামান জানান, আনুমানিক ১০ঃ৩০ থেকে ১১টা নাগাত আগুনের সূত্রপাত হয়ে সারা রাত গাছে আগুন জ্বলে।সুনির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও, জায়গাটি নিরিবিলি হওয়াতে এখানে বিকাল হতে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেনীর যুবকেরা মটরসাইকেল যোগে আসে, আবার চলেও যায়।
মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারন সম্পাদক এস এম তাজাম্মুল জানান, বৃক্ষ আমাদের সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করে, বেঁচে থাকার অক্সিজেন যোগায়, তাছাড়া ধূলর পুকুর পাড়ের এ বটবৃক্ষ মণিরামপুরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। ভোর রাতে খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে হাজির হয়।
মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিসও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ইনচার্জ মোঃ সাফায়েত আলম জানান, তাজাম্মুল ভাইয়ের ফোন পেয়ে আমরা দূত ধূলর পুকুর পাড়ে পৌঁছে দীর্ঘ সময় পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আজ সাংবাদিক ভাইয়েরা বৃক্ষ প্রেমে যে নজীর স্থাপন করলো সত্যি এটা গর্বের।