
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী:
রাজশাহী মহানগরীর মতিহারে আদালতে চালান দেওয়া আসামীকে পথে থেকে ফিরিয়ে এনে থানা থেকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মতিহার থানা সেকেন্ড অফিসার এসআই আশিক এর বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারী) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে থানা থেকে আসামীকে ছেড়ে দেয়া হয়। ওই আসামীর নাম মোঃ সাফিয়ান সাফি (৩০), সে চারঘাট থানার নন্দনগাছী এলাকার বাসিন্দা, সে পেশায় একজন সিএনজি চালক।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে নগরীর মতিহার থানাধীন অক্ট্রয় মোড়ে মোটরসাইকেলের সাথে একটি সিএনজি’র সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেল চালক আহত হয়। খবর পেয়ে মতিহার থানার এসআই আশিক ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে সিএনজি চালক সাফিয়ান সাফিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
ওই সময় স্থানীয়ভাবে বিষয়টি আপোষ-মিমাংসার চেষ্টা করে সিএনজি চালক। কিন্তু সেকেন্ড অফিসার আশিক তার ক্ষমতার জোরে তাকে জোরপূর্বক থানায় নিয়ে যায়। পরের দিন শুক্রবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ না করে দিনভর আপোষ-মিমাংসার জন্য দেন দরবার চালায়।
অবশেষে সন্ধ্যার আগে মামলা দিয়ে সিএনজি চালককে আদালতে সোপর্দ করার জন্য নিয়ে যায় মতিহার থানার এসআই মিজান ও সঙ্গীয় ফোর্স। পুলিশের পিকআপ যখন মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার পঞ্চবটী এলাকায় ঠিক সেই সময় এসআই মিজানকে ফোন দিয়ে আসামী থানায় ফিরিয়ে আনার জন্য নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট থানার কর্মকর্তা। পরে থানায় সিএনজি চালকের লোকজনের সাথে দেনদরবারের মাধ্যমে সিএনজি চালক সাফিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে মতিহার থানার এসআই মিজান জানান, পিকআপ যোগে আসামী আদালতে সোপর্দ করতে যাচ্ছিলাম। পথে পঞ্চবটী এলাকায় পৌঁছালে আমাকে ফোন দিয়ে আসামী থানায় ফিরিয়ে আনার জন্য বললে আমি আসামী থানায় নিয়ে আসি। পরে থানা থেকে ওই আসামীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সিএনজি চালক সাফিয়ান সাফিকে মামলা দেওয়া হয়েছিল কী ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলা ছাড়া আসামী আদালতে চালান দেওয়া হয় না।
মতিহার থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আশিকের নিকট জানতে চাইলে তিনি দাম্ভিকতা প্রকাশ করে বলেন, আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে আরএমপি মিডিয়ার কাছে পারমিশন নিতে হবে। এ ব্যাপারে আরএমপি পুলিশের মূখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর), সাবিনা ইয়াসমিন জানান, চালান দেওয়া আসামীকে পথে পথে থেকে থানায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া চালান দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। মতিহার থানার ওসি’র সাথে কথা বলে জানতে হবে।
পরে তিনি এ প্রতিবেদককে ফোন দিয়ে জানান, মতিহার থানার ওসি মোঃ আব্দুল মালেক বলছেন, থানা থেকে কোন আসামী আদালতে চালান দেওয়া হয়নি। মামলাওদেয়া হয়নি। তারপরেও আমি মতিহার বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এর সাথে আলাপ করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে মতিহার থানার একজন এসআই ও দুইজন কনস্টবল জানান, মতিহার থানার দূর্নীতিগ্রস্থ অফিসার এসআই আশিক। যে আসামী দুপুর ২টার মধ্যে চালান হওয়ার কথা, তাকে সন্ধ্যায় চালান দেয় কেন ? এছাড়াও তিনি বিভিন্ন ধরনের দেনদরবার করে থাকেন বলেও জানান তারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মতিহার থানা অঞ্চলে মাদকের ছড়াছড়ি। প্রকাশ্যে মাদক কেনা বেচা চললেও অজ্ঞাত কারণে মাদক বিক্রেতা আটকে কোন প্রকার অভিযান নেই মতিহার থানা পুলিশের। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র/জনতার আন্দোলনের পরবর্তীতে সময় পুলিশ যেন মাদক পল্লি গুলিকে মাদক বিক্রি ও সেবনের জন্য পুরোপরি স্বাধীন করে দিয়েছে এমনই মন্তব্য একাধীক স্থানীয়দের।