
আশরাফুর রহমান হাকিম,নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সরকারি ডিউটি রেখে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়মিত সময় দেন। এর ফলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা পড়েন চরম ভোগান্তি ও বিড়ম্বনায়। ওইসব চিকিৎসকের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছেন তারা।
ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানে গিয়ে পাওয়া যায় ঘটনার সত্যতা। বুধবার সকাল ১১ টার দিকে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত হাওলাদার ডায়গনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখছিলেন কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডাঃ সুস্মিতা রায়।এসময় স্থানীয় সাংবাদিকরা তাকে অফিস সময়ে বাইরে কেন চেম্বার করছেন? জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে রোগী দেখা ফেলে কৌশলে পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে পরবর্তীতে অভিযুক্ত ঐ চিকিৎসকের সাথে কথা হলে তিনি তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান এবং পরবর্তীতে এমনটা আর হবে না বলে জানান।
ঘটনার বিষয় উল্লেখ করে অফিস সময়ে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোন সরকারি ডাক্তার বসতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হাওলাদার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর মালিক খোকন হাওলাদার জানান,"ডাক্তার সুস্মিতা রায় সকাল এগারোটার দিকে তার ডায়াগনস্টিকে চেম্বার করেছেন। তবে সে সময় তিনি ডিউটিতে ছিলেন কিনা তা জানিনা।"
বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এ কে এম শিবলী রহমানকে জানানো হলে তিনি মুঠোফোনে জানান,"এর আগেও কয়েকবার মৌখিক ও লিখিতভাবে ডাঃ সুস্মিতা রায়কে এ বিষয়ে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। তারপরও তিনি পুনঃরায় সরকারি সময়ে বাইরে চেম্বার করে যাচ্ছেন।এবার তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।"
তিনি আরো জানান,"অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যে ঐ চিকিৎসককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে।একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি করায় কেন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা আগামী তিনদিনের মধ্যে তাকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে নোটিশে।"
হাসপাতালে আসা সেবা প্রত্যাশী রোগী ও তার স্বজনরা জানান, প্রায় সময়ই সরকারি হাসপাতালে এসে চিকিৎসক পাওয়া যায় না।চিকিৎসকরা এখানে চিকিৎসা না দিয়ে নিজেদের স্বার্থের জন্য হাসপাতালের বাইরে প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখেন। এছাড়া সরকারি হাসপাতালে রোগী দেখলেও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা বাইরে তাদের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে পাঠান। এতে করে রোগীদের ভোগান্তি ও খরচ দুটোই বেশি হয়। তাই দ্রুত সরকারি হাসপাতালের এসব অনিয়মের প্রতিকার চান তারা।