
বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি:
বানারীপাড়ায় সনাতন ধর্মানুসারীদের সূর্য পূজা-কে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের আহমাদাবাদ বেতাল এলাকার একটি মাঠে আয়োজন করা হয় সূর্যমনির মেলার। ঐতিহ্যবাহী এই মেলাকে কেন্দ্র করে স্বার্থন্বেষী একদল লোক মাসব্যাপী চালান অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও মাদকের রমরমা বানিজ্য।
স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, স্থানীয় মৃত খবির হোসেন মোল্লার পূর্বপুরুষগণ হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আহমাদাবাদ বেতালের এই কৃষি জমিটি স্থাপনাসহ কিনে নেয়। বিক্রয়ের সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মাঠের এক কোনে একটি সূর্যদেবের মন্দির স্থাপনা ও প্রতি বছর এই পূজা উপলক্ষে মাসব্যাপী মেলা উদযাপনের শর্তারোপ করেন। মৃত খবির হোসেন মোল্লা তাদের এই প্রস্তাব গ্রহন করেই উক্ত জমি ক্রয় করেন।
সময়ের পালাচক্রে সূর্যপূজাকে কেন্দ্র করে উদযাপিত এই উৎসব আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের মিলন মেলা হিসেবে গড়ে উঠেছে। মোল্লা পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক সহচর গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, 'বর্তমানে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মাসব্যাপী যাত্রাপালা ও পুতুল নাচের নামে চলে জীবন্ত পুতুলদের অশ্লীলতা, নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা। চলে হাউজি, লটারি, জুয়া আসর ও মাদকের রমরমা ব্যবসা। বিগত ১৭ বছর এই আক্তার হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে মোল্লা পরিবার আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কালো টাকার পাহাড় গড়ে তোলেন।
গত ৫ই আগস্ট ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানের পরে ২০২৫ সালে সূর্যদেবের পূজা ও মেলার আয়োজনকে কেন্দ্র করে এলাকায় গড়ে ওঠেছে জন ক্ষোভ। স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা বলেন, 'হিন্দু ভাইদের পূজা উপলক্ষে তারা একটি বাজারের আয়োজন করতেই পারে। কিন্তু আমাদের সমস্যাটা অন্য জায়গায়। মেলার কিনারেই আমাদের বসবাস। আমরাই এর ক্ষতিকর দিকগুলোর সবচেয়ে বড় সাফারার। মাসাধিক কাল ধরে এখানে বিতর্কিত যাত্রাপালা (অশ্লীল), লটারি, হাউজি, পুতুলনাচ (পুতুলনাচ নামে অশ্লীল নৃত্য) চলার কারণে এলাকার যুব সমাজের সামাজিক অবক্ষয় সহ স্বার্থন্বেষী অপরাধীচক্রের অপরাধের প্রবণতা সহ মাদকের উৎপাত বেড়ে যায়। বিগত মেলায় ঘুরতে আসা স্থানীয় যুবক শামীমের স্ত্রী হত্যা ও বানারীপাড়া পৌরসভাধীন কলেজ মোরের মিল্টনের হাত পায়ের রগ কর্তনসহ এলাকাবাসীর নানান অভিযোগ আছে এই মেলাকে ঘিরে।
তারা আরো বলেন, বিগত দিনে অসংখ্যবার আশপাশের মসজিদের দানবাক্স চুরি, স্থানীয় দোকান থেকে ছিনতাই ইত্যাদির একাধিক প্রমান রয়েছে। এমনকি মেলার সিজন আসলেফ বাসা বাড়ির রান্নাঘরের হাড়ি-পাতিল, সাইকেল সহ ছোটখাটো জিনিস পর্যন্ত চুরির হিড়িক পড়ে যায়। এই মেলাকে অনূর্ধ্ব ৭ দিনে নামিয়ে আনা ও অশ্লীলতার ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোরতা আরোপই এর সমস্যার একমাত্র সমাধান হতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে মেলা নিয়ে একটা চাপা ক্ষোভ টের পাওয়া যাচ্ছে। এ ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটার আগেই একটা পাকাপোক্ত সমাধানের প্রত্যাশা করছেন এলাকাবাসী।