সিরাজুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি,
আধুনিকতার ছোয়ায় আর যান্ত্রিক যানবাহনের কারণের ফলে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামীণ গরু মহিষের গাড়ি, সুরেলা কণ্ঠে গাড়োয়ানের ওকি গাড়িয়াল ভাই গান আজ কানের মধ্যে ভেসে আসেনা। ধান গম সরিষা বিভিন্ন ধরনের মালামাল আনা নেওয়া, বিয়ে বাড়ির বরযাত্রী আনা নেওয়ার প্রধান বাহন ছিল এই গরু মহিষের গাড়ি। হরিপুর উপজেলার প্রবীণ আব্দুর রহমান (৭৫)জানান একসময় মানুষ অনেক দুরদুরান্তর পাড়ি দিয়ে কৃষকেরা জমি চাষাবাদ এবং মালামাল বহনের জন্য গরু গাড়ি বাহন হিসেবে ব্যবহার করত।
অনেক অঞ্চলে রাস্তা পাকা না থাকায় এক সময় যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করত না। ফলে গরু গাড়িই ছিল একমাত্র ভরসা। তবে বর্তমানে নানা ধরনের মোটরযান চলাচলের কারণে অপেক্ষাকৃত ধীর গতির এই যানটির ব্যবহার অনেক কমে এসেছে। তাই এখন আর তেমন চোখে পড়ে না।
বর্তমান যুগ হচ্ছে যান্ত্রিক যুগ। মানুষ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় মালামাল বহনের জন্য বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে ট্রাক, পাওয়ার টিলার, লরি, নসিমন-করিমনসহ বিভিন্ন মালগাড়ি।
মানুষের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মোটরগাড়ি, রেলগাড়ি, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা ইত্যাদি। ফলে গ্রামাঞ্চলেও আর চোখে পড়ে না গরু আর মহিষের গাড়ি। অথচ গরু আর মহিষের গাড়ির একটি সুবিধা হলো, এতে কোনো জ্বালানি লাগে না। ফলে ধোঁয়া হয় না। পরিবেশের কোনো ক্ষতিও করে না। এটি পরিবেশবান্ধব একটি যানবাহন। রিকশা বা ঠেলাগাড়ির মতো গরু কিংবা মহিষের গাড়িও একটি পরিবেশবান্ধব যান। এতে কোনো জ্বালানি খরচ নেই। শব্দ দূষণ নেই। তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ এসব কিছুই এই যানে ব্যবহার হয় না।
এই গরু আর মহিষের গাড়ি ধীর গতিতে চলে বলে তেমন কোনো দুর্ঘটনাও নেই। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে আমাদের প্রিয় এই গরু আর মহিষের গাড়ির প্রচলন আজ হারিয়ে যাচ্ছে।বর্তমান প্রজন্ম ও আজ এই গরু মহিষের গাড়ি ইতিহাস সম্পর্কে তেমন একটা অবগত নয়।