কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি।
পিরোজপুরের কাউখালী হাট বাজারগুলোতে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গুঁড়া মসলা। বিশেষ করে হলুদ, মরিচ, দুনিয়ার গুড়াই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়।
এই সমস্ত মসলা বিক্রির জন্য একটি অসাধুচক্র সবসময় বাজারের প্রাণকেন্দ্রে দোকান সাজিয়ে প্রকাশ্যে এসব মসলা বিক্রি করছে।
এই সমস্ত মসলা সামান্য কিছু কম দামে পেয়ে সাধারণ ক্রেতারা হুমরি খেয়ে পড়ে।
উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোম্পানির মসলা গুড়া বাজারজাত করেন প্রকার ভেদে ১ কেজি মরিচের গুঁড়া ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, ১ কেজি হলুদের গুড়া ৬৫০ টাকা থেকে ৬৮০ টাকা, ১ কেজি ধুনিয়ার গুড়া ৪০০ টাকার বেশি দাম দিয়ে ভোক্তাদের ক্রয় করতে হয়। অথচ খোলা বাজারে ১ কেজি মরিচের গুঁড়া ৩৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা এবং ১ কেজি হলুদের গুড়া ২৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় এবং ১ কেজি ধুনিয়ার গুড়া ২৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় পাওয়া যায়।
যে কারণে সচেতন মহলের প্রশ্ন হল একই হলুূদ মরিচ সহ অন্যান্য গুড়া মশলা কোম্পানির মূল্যর চেয়ে অর্ধেক মূল্য এরা কিভাবে বিক্রি করেন। এছাড়া এই সমস্ত খোলা বাজারে বিক্রি করা মসলাগুলোর মান সঠিক আছে কিনা এ বিষয়ে তাদের কাছে কোন সনদপত্র বা কাগজপত্র মিলছে না। অথচ সকলের চোখের সামনেই কাউখালী উপজেলার দক্ষিণ বাজার বড় মসজিদের সামনে শুক্র ও সোমবার সাপ্তাহিক বাজারের দিনে বিভিন্ন মসলা ব্যবসায়ীরা দোকান সাজিয়ে বসে এবং শত শত কেজি হলুদ, মরিচ,সহ বিভিন্ন প্রকারের গুঁড়া মসলা বিক্রি করেন। খোলা বাজার থেকে হলুদ মরিচের গুঁড়ো ক্রয় করা ভোক্তা নাজমুল হুদা বলেন খোলা বাজার থেকে গুড়া মসলা ক্রয় করে রান্না করলে কোন স্বাদ পাওয়া যায় না। এছাড়া খাবার পরে হাতে রং মিশে থাকে। এই সমস্ত খাবার ফ্রিজে রাখলে তরকারির রং এ পরিবর্তন দেখা যায়। কম দামে পাওয়া যায় বলে গরীব ও সাধারণ মানুষ খোলা বাজার দিয়ে গুড়া মশলা ক্রয় করে থাকে।
দক্ষিণ বাজারে শুক্র ও সোমবার হাটের দিন দেখা যায় ইন্দেরহাট, স্বরূপকাঠি ও কাউখালীর স্থানীয় কিছু মসলা ব্যবসায়ী নিয়মিত দোকান বসিয়ে হাজার হাজার টাকার মসলা বিক্রি করেন। এমনকি এই সমস্ত মসলা ছোট বড় দোকানগুলোতে পাইকারি ক্রয় করে ভোক্তাদের মাঝে খোলা মশলা হিসেবে খুচরা বিক্রি করেন। নিয়ম অনুযায়ী নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর ও বিএসটিআই কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে সনদপত্র দিলে খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা কথা। তবে ব্যবসায়ীদের কাছে অনুমতি পত্র যেমন নাই তেমনি ভাবে কাউখালীতে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তাকে কখনো অভিযান চালানোর সংবাদ পাওয়া যায় নাই। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক অনেকেই জানিয়েছেন
বিভিন্ন ঘাসের বীজ, চাল ও ডালের গুঁড়া, ধানের তুষে রঙ মিশিয়ে ভেজাল মসলা তৈরি ও বিক্রি করা হয়। ভেজাল মসলার বড় ক্রেতা হচ্ছে হাটবাজারের মুদি দোকানি ও বন্দরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ লিল্লাহ বোর্ডিং ও এতিমখানা।
এ ব্যাপারে কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার দীপ্ত কুন্ডু বলেন, এই জাতীয় ভেজাল খাবার খাওয়ার ফলে পাকস্থলীতে নানা ধরনের জটিল রোগ সৃষ্টি হতে পারে। ভেজাল খাবার হৃদয়, লিভার, কিডনি নষ্ট হয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা বলেন, ভেজাল অথবা অবৈধ খাদ্যদ্রব্য বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।