মোঃ ইমতিয়াজ উদ্দিন সরদার
ক্রাইম রিপোর্টার
২৮ জানুয়ারি, রোজ মঙ্গলবার, লিপি আক্তার নামে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ২য় বর্ষের বিএম কলেজের এক শিক্ষার্থী তাওহীদ পরিবহনে অর্ধেক ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন লিপি অর্ধেক ভাড়া দিতে চাইলে তা না নিয়ে ফুল ভাড়ার দাবি করেন বাস গাড়ির হেলপার এবং তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এ বিষয়ে লিপি তার কলেজের সহপাঠীদের জানালে বিএম কলেজের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনার পর্যালোচনা করতে আসেন এসময় বাস শ্রমিকদের কিছু লোক তাদের উপর হামলা করে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা একটি বাস ভাংচুর করে তাদের দাবি আদায়ের জন্যে রাস্তা অবরোধ করে রাখে।
এসময় মো: নাইমুল ইসলাম হাওলাদার নামে এক বিএম কলেজের শিক্ষার্থী জানান, আমরা শিক্ষার্থীরা বাসে অর্ধেক ভাড়া দিতে গেলে প্রায় সময়ই বাস শ্রমিকদের হেনস্তার স্বীকার হতে হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি বেশিই হয়ে থাকে। এ বিষয়ে সমাধানে আমাদের সকলেরই সহযোগিতা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের এমন হেনস্তা বন্ধ হওয়া উচিত।
বাস শ্রমিকরা জানান, অনেক যাত্রী মেয়াদ উত্তীর্ণ স্টুডেন্ট আইডি কার্ড দেখিয়ে হাফ ভাড়া দাবি করেন এতে তাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত দাবি সমূহ:-
১) বি.এম কলেজের শিক্ষার্থীদের ও নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্থার সাথে জড়িত বাস কর্মচারী ও সংশ্লিষ্টদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনতে হবে।
২) ২৮ জানুয়ারী ২০২৫ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৩) বরিশাল বিভাগের সকল রুটে শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড প্রদর্শনপূর্বক বাধ্যতামূলক হাফপাস বাস্তবায়ন করতে হবে ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর করতে হবে।
৪) ২৮ শে জানুয়ারির ঘটনার পরে, আর কোন শিক্ষার্থীর হেনস্তার প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট বাসের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে এবং অভিযুক্তের দৃষ্টান্ত শাস্তি দিতে হবে।
৫) অনির্বাচিত নয় বরং দ্রুত নির্বাচিত বাস মালিক সমিতির কমিটি দিতে হবে।
৬) আধুনিক বাস সেবা ও ডিজিটাল ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
৭) প্রশিক্ষিত ড্রাইভার ও হেলপারের মাধ্যমে আধুনিক বাস সেবা চালু করতে হবে।
৮) বরিশালের সকল স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব বন্ধের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল, বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বেলাল হোসাইন, মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান ও মালিক সমিতির বৈঠকে এ সমস্যার সমাধান হয়।