হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গরু দিয়ে হাল চাষ

আপলোড সময় : ২৪-০১-২০২৫ ১১:৩০:৩৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৪-০১-২০২৫ ১১:৩০:৩৮ অপরাহ্ন



মোঃ আবদুল্লাহ বুড়িচং প্রতিনিধি।। 

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বিলুপ্তির পথে গরু দিয়ে হালচাষ। হারিয়ে যাচ্ছে একসময়ের ঐতিহ্যবাহী গরু দিয়ে হাল চাষের সেই চিত্র। কৃষকের ঘরে গরু থাকলেও হালচাষে তেমনটা ব্যবহার করা হচ্ছে না।


একসময় গ্রামবাংলার স্বাভাবিক চিত্র ছিল গরু দিয়ে হাল চাষ। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন বিলুপ্তির পথে এই পদ্ধতি। হালচাষের পরিবর্তে এখন ট্রাক্ট  দিয়ে অল্প সময়ে জমি চাষ করা হয়। অথচ দুই যুগ আগেও নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হালচাষ করে সংসারের ব্যয়ভার বহন করত দরিদ্র কৃষক। কাক ডাকা ভোরে কৃষক গরু, মহিষ, লাঙল, জোয়াল নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন। এ দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না।

উপজেলায় বিভিন্ন  স্থানেই আধুনিকতার ছোঁয়া কৃষি সেক্টরও এর থেকে পিছিয়ে নেই। যান্ত্রিকতা এবং আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে লাঙল ও গরু দিয়ে হালচাষ। ভোর বেলা কৃষকরা বের হত জমি চাষ দেয়ার জন্য গরু এবং হাল নিয়ে। হাল দিয়ে চাষের পরে দেওয়া হতো মই। এখন সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না।

ষোলনল ইউনিয়নের ভবানী পুরের চাষি মনু মিয়া বলেন, গরুর হাল ও লাঙল দিয়ে প্রতি বিঘা জমি ৫০০-৬০০ টাকা পাওয়া যায়। বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে তিনি গরু দিয়ে হালচাষ করছেন।

তিনি বলেন, এমন একটা সময় ছিল গরু ছাড়া হাল চাষের কথা চিন্তাই করা যেত না। এখন গরুর দাম বেশি এবং ট্রাক্টর যন্ত্রের সাহায্যে চাষ করায় সময় ও খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা এখন আর গরু দিয়ে জমি চাষ করেন না। তবে ঐতিহ্য হিসেবে কেউ কেউ ধরে রেখেছেন গরু দিয়ে জমি চাষের বিষয়টি। আবার অনেকে হাল এবং মই পুরনো দিনের স্মৃতি হিসেবে বাড়ির আঙ্গিনায় রেখে দিয়েছেন।

কৃষিবিদদের মতে, গ্রাম বাংলা থেকে গরুর হাল ও মই বিলুপ্তির প্রধান কারণ হলো আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার।

আধুনিক প্রযুক্তি এখন সহজ লভ্য হওয়ায় কেউ সময়, পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় করছে না গরুর হালে। এছাড়া গরুর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আগের মত ঘরে ঘরে গরু পালনের বিষয়টিও কমে গেছে। এক সময় চাষ দেয়ার জন্য নির্দিষ্ট গরু পালন করা হত। 

 যারা এখন গরু লালন-পালন করছেন তারা বাণিজ্যিকভাবে গরু পালন করছেন। গরুকে এখন আর কৃষি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না।


রাজাপুর ইউনিয়নের লড়িবাগ গ্রামের কৃষক আশিক জানান, এখন হালচাষের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতির বিভিন্ন মেশিন আবিষ্কার হয়েছে। মেশিন দিয়ে অল্প সময়ে অনেক বেশি জমি চাষ করা গেলেও দিন দিন গ্রামীণ ঐতিহ্য থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গরু, লাঙ্গল, জোয়াল ও মই দিয়ে হালচাষ।

 
পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের দঃ শ্যামপুরের  কৃষক আবুল হোসেন জানান, তিনি গরু, জোয়াল, লাঙ্গল দিয়ে হাল চাষ করেছেন। এখন মেশিনে করেন। মেশিনের চেয়ে গরুর হালেই ভালো চাষ হতো। কিন্তু সময় ও খরচ কমাতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেড়েছে। দেশীয় কৃষির ঐতিহ্যটি এখন আর দেখা যায় না।



 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]