পটুয়াখালী প্রতিনিধি; মনজুর মোর্শেদ তুহিন
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জাল পাতা নিয়ে গভীর সমুদ্রে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন তিন জেলে। এদের একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকি দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের গভীরে চরবিজয় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহত জেলেরা হলেন- মো. নাসির (৩৪) ও মাঝি ইলিয়াস ফকির (৩১)। তারা দুজনই মম্বিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাদেরকে বরিশালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহত অন্য জেলে আ. মালেক (৫০) প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আছেন।
আহত জেলে ও আড়তদার সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে সাগরে বিচরণ করা বেহুন্দি জাল নিয়ে মাছ ধরতে যাওয়া উপজেলার নিজামপুর এলাকার সোবহান মাঝি নেতৃত্বে শত-শত ট্রলার জাল ফেলে। এর কিছু জাল গঙ্গামতি এলাকার আহত জেলেদের পুতে রাখা ইলিশের জালের উপরে ফেলানো হয়। এতে ইলিশের জালের ক্ষতি হয়। পরে এটা নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে সোবহান মাঝির নেতৃত্বে ৭টি ট্রলারের প্রায় ১৫-২০ জনের একটি দল তাদের ওপর হামলা করে মাছ ধরার ট্রলার ডুবিয়ে দেয় এবং জেলেদেরকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়। পরে তারা অন্য ট্রলারের সহযোগিতায় তীরে আসেন।
আহত জেলে ইলিয়াস ফকির জানান, আমাদের জাল নষ্ট করলে আমরা তাদেরকে ডেকে এটা নিয়ে তীরে এসে সমাধানের প্রস্তাব দেই। তারা প্রথমে রাজি হলেও পরে হঠাৎ করেই হামলা করে। আমার নাক ও কপাল ফেটে যায়। পরে আমি ড্রলার থেকে পরে যাই। এরপর আমার ভাই নিচ থেকে অন্য ট্রলারে উঠায়। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কুয়াকাটা পৌর মেয়র ও আড়তদার সভাপতি মো. আ. রহিম খান বলেন, তারা অবৈধ বেহুন্দী জাল দিয়ে পুরো সমুদ্র বিচরণ করেন। তারা বৈধ ইলিশের জেলেদেরকেও ক্ষতি করে। আজকে তারা জেলেদেরকে হামলা করেছে। এর লাগাম না টানলে সমুদ্রে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা এ নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, আহত জেলেরা যদি আইনের আশ্রয় নেন তাহলে বিষয়টি নৌ-পুলিশ ক্ষতিয়ে দেখবে। এছাড়া বাকি যত সহযোগিতা ও এই অবৈধ জাল বন্ধে আমরা সার্বিক ব্যবস্থা নিবো।
কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি। তবে আহতরা যদি আইনের আশ্রয় নেয় তাহলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবো।