গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেইনের গাড়ি বহরে হামলায় সম্পৃক্ততা নেই বলে সংবাদ সম্মেলন দাবী করা ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ এর বক্তেব্যের প্রতিবাদ করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইঞ্জিয়ার এম ইকবাল হোসেন এ পক্ষে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য এডভোকেট আব্দুস সোবহান সুলতান।
বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি হেটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এই প্রতিবাদ করা হয়। গত সোমবার উপজেলার সিধলা ইউনিয়নের টেঙ্গুরিপাড়া গ্রামে ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেইনের গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে দুবৃর্ত্তরা। এতে ৫জন আহত হয়। ঘটনার পর বিএনপি নেতা ইকবালের অভিযোগ করেন, হামলার সাথে বিএনপি নেতা আহাম্মদ তায়েবুর রহমানের লোকজন জড়িত। এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে আহাম্মদ তায়েবুর রহমানকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এনিয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে হামলার ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ। হিরণ বলেন, সিধলা ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া গ্রামে একটি আকিকার দাওয়াত নিয়ে পারিবারিক মতবিরোধ এবং তাত্রাকান্দা গ্রামের জমিসংক্রান্ত স্থানীয় বিরোধ নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইনের বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষ একধরনের সামাজিক বয়কটের পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার কারণে লোকজন গ্রামে ঢুকতে বাধা দেয় এবং গ্রামবাসী ও ইকবাল হোসাইনের বহরের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আমাকে জড়ানোর অপচেষ্টা হয়। টেংগুরিপাড়া গ্রামে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার নাম জড়িয়ে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া তথ্য পরিবেশন করে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ এর সংবাদ সম্মেলনের বক্তেব্যের প্রতিবাদ করে ইঞ্জিয়ার এম ইকবাল হোসেন এ পক্ষে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য এডভোকেট আব্দুস সোবহান সুলতান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ৬ জানুয়ারি উপজেলা সিধলা ইউনিয়নে বালিয়াপাড়ায় যুবদল নেতার বাড়িতে নিমন্ত্রণে গাড়ি বহর নিয়ে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইন। অনুষ্ঠানস্থলের আড়াই কিলোমিটার দূরে টেঙ্গুরিপাড়া বাজারের একটু পরে একদল লোক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ হৈ চৈ, ইট-পাটকেল মারতে মারতে গাড়ী বহরে আক্রমন করে। তারা আমাদের নেতার একটি গাড়ী একদম ভেঙ্গে চুরমার করে এবং ৭/৮টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে এবং রামদা দিয়ে কোপ দিয়ে ৫জনকে আহত করে। যারা এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি আছে। আরো ১০/১২জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছে। যারা এই মারামারি ও ভাংচুর করে তাদের প্রায় সবাই ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপি'র সদস্য আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ এর অনুসারী।
এই আক্রমন ইতিপূর্বে পরিকল্পিত ছিল যে, সমস্ত কার্যকলাপ আধা ঘন্টার মধ্যে শেষ করে আমাদের নেতার গাড়ির ভিতরে রক্ষিত কাগজপত্রসহ গাড়ীর স্প্যায়ার চাকা ও জ্যাক এবং অন্যান্য যন্ত্রপাটি লুণ্ঠন করে নিয়ে চলিয়া যায়। হামলার প্রতিবাদে ওইদিন সন্ধ্যা ৭টায় গৌরীপুর বাজারে বিএনপি, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং অন্যান্য নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল করিলে উক্ত মিছিলটি আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণের এর বাসার সামনে আসিলে আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ ও তার ছোট ভাই কার্জন সহ আনুমানিক ২০-২৫জন রামদা লাঠিসোটা নিয়ে মিছিলে আক্রমণ করে।
তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার গৌরীপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ বলেছেন, ২০১৮ সনের নির্বাচনে তিনি আমাদের দলীয় প্রার্থীকে সহযোগিতা করেছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বরং তিনি ওই নির্বাচনে ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইন এর বিরোধীতা করেছেন। তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে, আদাজল খেয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাঠে কাজ করেছেন। শুধু তাই নয়, তার ভাই কামরুল ইসলাম কিরণ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। এডভোকেট আব্দুস সোবহান সুলতান এ হামলায় জড়িতদের সনাক্তকরণ ও তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানান।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্যা মাযহারুল আনোয়ার বলেন, এই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলা রেকর্ডের প্রক্রিয়াধীন আছে।