মোঃ অপু খান চৌধুরী।।
ব্রাহ্মণপাড়ায় সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে দু-চোখ জুরিয়ে যায়। মাঠজুড়ে প্রকৃতির অপরূপ অলংকার সরিষার হলুদ ফুল। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে সরিষার মাঠ। চারপাশে হলুদ ফুল আর সবুজ পাতার সমারোহে প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে। এ যেন ঘন কুয়াশার মধ্যে যেন হলুদ চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে রেখেছে। এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য চারদিকে এক আবেশি পরিবেশের সঙ্গে মাধুর্যতায় ভরে দিয়েছে সরষে ফুলের ঘ্রাণ।
এবার ব্রাহ্মণপাড়া সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের চোখে মুখেও আনন্দের রেখা ফুটে উঠেছে। সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত হয়ে গুনগুন শব্দে ছুটে চলছে এক ক্ষেত থেকে আরেক ক্ষেতে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে উপজেলার ফসলি মাঠ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আর্জিত না হলেও ভাল ফলন পাবে বলে আশা করছেন চাষিরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কিছু কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যে কোনো ফসলের চেয়ে সরিষার আবাদ অনেক লাভজনক ও খরচ তুলনামূলক অনেক কম। তাছাড়া এ ফসলের বাজার সবসময় ভালো থাকে, ফলনও ভালো হয়।চান্দলা ইউনিয়নের বড়ধুশিয়া গ্রামের কৃষক মতি মিয়া জানান, বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর পৌষ মাসের প্রথমদিকে আমি সরিষার বীজ বুনেছি। আমরা খুব কম সময়ে সরিষা ঘরে তুলতে পারেন।
একই এলাকার আজাদ হোসেন বলেন, ৪৬ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি আশা করি ভাল ফলন হবে দামও ভালো পাবেন। তবে বিভিন্ন কৃষি পণ্যের পাশাপাশি সরিষার ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকলে এখানকার কৃষক আরও বেশি উপকৃত হতো। সিদলাই ইউনিয়নের পোমকাড়া গ্রামের কৃষক ফারুক মিয়া জানালেন, ৬০ শতাংশ জমিতে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে সরিষা আবাদ করেছেন। ঠিকঠাক মতো ফসল উঠলে তার ২০ হাজার টাকা লাভ থাকবে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাসুদ রানা জানান, বন্যার পর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ১ শত ১১ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। যদিও ভয়াবহ বন্যার ফলে আমাদের উপজেলায় সরিষার জমি তৈরি করতে সমস্যা হয়েছে এবং লক্ষ মাত্র অর্জিত না হলেও তবে মাঠে আবাদ কৃত সরিষা ফলন ভালো হবে বলে তিনি আশা করেন। এ ছাড়া কম খরচে অধিক মুনাফা পাওয়া যায় বলে প্রতি বছরই সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। সরকারিভাবে ও বিভিন্ন প্রকল্পের সহায়তায় উচ্চফলনশীল জাতের সরিষার আবাদ ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।