ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ফজরের নামাজ পড়ে রাস্তায় হাটতে বের হলে প্রতিপক্ষের তান্ডব ও হামলায় চারজন আহত হয়েছে। এঘটনায় এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজাপুর উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া গ্রামে শুক্রবার ভোরে এঘটনা ঘটে। এরপূর্বে ক্রয়কৃত জমি মধ্যরাতে অবৈধভাবে দখল করে মালামাল লুট করেছে প্রতিপক্ষরা। ক্রয়সূত্রে মালিক মোয়াজ্জেম হোসেন মনোয়ার সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে নির্দেশনা দিলে তাও উপেক্ষা ও অমান্য করেছে দখলকারীরা।
এরই জের ধরে শুক্রবার সকালে প্রতিপক্ষরা হামলা চালায় ক্রয়সূত্রে মালিকের উপর। এতে তিনিসহ তার সাথে থাকা পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম নান্না রাজাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এঘটনায় রাজাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
ক্রয়সূত্রে জমির মালিক মোয়াজ্জেম হোসেন মনোয়ার জানান, ২০১২সালের ১০সেপ্টেম্বর সাবকবলা ১৯৯২ নং দলিলমূলে জেএল ১১নং নারিকেল বাড়িয়া মৌজার এসএ ৫৫২ নং খতিয়ানের ২৪০ ও ২৪২নং দাগের বিএস ২৯৩/২৯৫নং দাগের ১৩.৬১শতাংশ জমি ক্রয় করি। জমির দখল বুঝে নিতে মূল মালিকের ওয়ারিশদের সাথে শালিশ বৈঠকেও বেশ কয়েকবছর পার হয়ে যায়।
স্থানীয় বিজ্ঞ ৫জন শালিশদারের মধ্যস্থতায় ২০২২সালের শেষে দিকে সকল ওয়ারিশদের উপস্থিতিতে শালিশী সম্পন্ন হয়। বিজ্ঞ শালিশগণ ২৯৩নং দাগের মধ্যে ১২.০৯ এবং ২৯৫ দাগের মধ্যে ১.৫২শতাংশ জমির দখল সার্ভেয়ার দিয়ে মেপে দখল বুঝিয়ে দেন। সাম্যক জমিতে তারকাটা ও টিনের বেড়া দিয়ে ২বছর ধরে সুরক্ষিত রাখা হয়। নভেম্বর মাসের মধ্যম দিয়ে জমিতে কাজ করানোর জন্য ইট, রড ও সিমেন্ট নিয়ে রাখা হয়। তা দেখে বিক্রেতার ওয়ারিশদের মধ্যে আবুল হোসেন মৃধা নামে একজনে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
সেখানেও দালান তৈরীর মালামাল এনে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ১ডিসেম্বর দিবাগত (২ডিসেম্বর সোমবার) রাত ২টায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও বহু মামলার আসামী হাবিলের নেতৃত্বে ১৫/২০জন বেআইনীভাবে জমিতে প্রবেশ করে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। অস্থায়ী ঘরে রক্ষিত দালান তৈরীর মালামাল, বেড়া দেয়া টিন ও তারকাটা সরিয়ে ফেলে বসবাস শুরু করে।
বিষয়টি ঝালকাঠি সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ দিলে উভয়পক্ষকে ডেকে রাজাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মধ্যস্থতায় বসেন। তার দেয়া নির্দেশনা উপেক্ষা করে আবুল হোসেন মৃধা গং এখনও ওই ঘরে বসবাস করছে। শুক্রবার ফজরের নামাজ পড়ে হাটতে বের হলে প্রতিপক্ষ আবুল, হাবিল, নিক্সন, সুজন, সোহেল, শুভ, মোদারেচ, পারভিন, হালিমা ও নাজমা আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে আমাদের চারজন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজন রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সন্ধ্যায় নাম কেটে বিশ্রামে আছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিৎিসা নিয়েছে। আমরাও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
রাজাপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, নারিকেল বাড়িয়া গ্রামে শুক্রবার ভোরে দু'গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় আমি নিজেই ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। উভয় পক্ষকেই লাঠিসোটা হাতে থাকা অবস্থায় লাটিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। উভয় পক্ষের অভিযোগ নিয়েছি। একটি অভিযোগ মামলা হিসেবে রুজু করেছি। আসামীদের আটকে অভিযান চালানো হয়েছে। পরবর্তি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।