গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি ঃ
গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ও খেলাধূলার সাথে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে দিনব্যাপী চডুইভাতি ও বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলাধূলা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। স্বেচ্ছসেবী সংগঠন গৌরীপুর রক্তদান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদের প্রাচীন দ্বীপে বুধবার (১৮ডিসেম্বর) দিনব্যাপী চডুইভাতি ও বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসবের আয়োজন করা হয়।
গৌরীপুর রক্তদান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসবের মধ্যে ছিল বিলুপ্তপ্রায় মার্বেল খেলা, মোরগ লড়াই, নই খেলা, টায়ার দৌড়, দাড়িয়াবান্দা, গোল্লাছুট, কুতকুত, কানামাছি, বৌচি, হাড়িভাঙ্গা, ফুলটুক্কা ইত্যাদি। দিনব্যাপী এ ক্রীড়া উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খেলাধূলায় অংশগ্রহণ ও পুরস্কার বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ।
মার্বেল খেলায় অংশ নেন গৌরীপুরের ইউএনও মো. শাকিল আহমেদ, গৌরীপুর পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু, ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল মালেক, গৌরীপুর মহিলা কলেজের প্রভাষক সেলিম আল রাজ, একাডেমিক সুপারভাইজার কমল কুমার রায়। ইউএনও গুণে গুণে সকলের কাছ থেকে মার্বেল সংগ্রহ করেন। এরপর ইউএনও সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন মার্বেল খেলায়। সেই মার্বেল খেলায় শিক্ষকদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন ইউএনও।
ইউএনও মো. শাকিল আহমেদ বলেন, গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলার সাথে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে আজকে গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসবে আমি অতিথি হয়ে এসেছি। এখানে এসে আমি শিক্ষকদের সাথে মার্বেল খেলা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। খুব ভালো লেগেছে, মনে হয় খানিকটা সময়ের জন্য শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। আমি মনে করি এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা থাকলে নতুন প্রজন্মকে মোবাইল আসক্তি, ভিডিও গেম ও ডিজিটাল ডিভাইসের নেশা থেকে অনেকটাই দূরে রাখা যাবে।
গৌরীপুর পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, গ্রামীণ বিলুপ্তপ্রায় এসব খেলাধূলা আমাদের শেকড়, যা আজ মোবাইল আসক্তি, ভিডিও গেম ও ডিজিটাল ডিভাইসের নেশায় হারিয়ে যেতে বসেছে। কিশোর বয়সে আমরা মার্বেল খেলেছি। আজ মার্বেল খেলায় আমি অল্পের জন্য ইউএনও সাহেবের কাছে হেরে গেছি। আমি রানার আপ হয়েছি। তৃতীয় হয়েছে ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের শিক্ষক আব্দুল মালেক।
গৌরীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা আহমেদ বৃষ্টি বলেন, আমরা ছোট বেলায় কুতকুত খেলেছি। প্রায় ১৫ জনকে হারিয়ে আমি চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রফি জিতেছি। আমি খুব আনন্দিত।গৌরীপুর রক্তদান ফাউন্ডেশনের সভাপতি আশিকুর রহমান রাজীব বলেন, আমাদের সংগঠনে প্রায় তিন শতাধিক রক্তদাতা রয়েছে। যারা জরুরী প্রয়োজনে রক্তসংগ্রহ ও রক্তদান করে থাকে। প্রতিবছর আমরা তাদের নিয়ে চডুইবাতির আয়োজন করি। তবে এবারের চড়–ইবাতিতে ব্যতিক্রম কিছু তাড়না থেকেই আমরা গ্রামীণ খেলাগুলো আয়োজন করেছি।
মার্বেল খেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আয়োজক কমিটি ইউএনও’র হাতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে দেন। পরে অন্যান্য বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তোলে দেন প্রধান অতিথি ইউএনও মো. শাকিল আহমেদ