হবিগঞ্জে দুই ভাবীর পরকিয়ার বলি হয়েছে দেবর মোস্তাকিন

আপলোড সময় : ০৯-১২-২০২৪ ১২:২৮:৪৭ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৯-১২-২০২৪ ১২:৫৫:১৪ পূর্বাহ্ন


লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি, 

আদালতে প্রধান আসামী রায়হানের স্বীকারোক্তি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পুরানগাও গ্রামের বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর কিশোর মোস্তাকিন হত্যা কান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোস্তাকিনের আপন দুই ভাবী রোজিনা বেগম (২৮) ও তাছলিমা বেগম (২০) পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
মামলার প্রধান আসামী রায়হান উদ্দীন দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত শুক্রবার তাদের গ্রেফতার ও কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার বিজ্ঞ আদালতে রায়হান উদ্দীন স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে। উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের মৃত জফর মিয়ার ৪র্থ ছেলে মোস্তাকিন মিয়া (১৭)কে গত ২৪ নভেম্বর রাতে তার শয়ন কক্ষে জবাই করে হত্যা করা হয়। ঘটনার প্রথম থেকেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংবাদকর্মীরা ভাবীদের পরকীয়ার বলি হয়েছে কিশোর মোস্তাকিন এমন ধারনা পোষন করে আসছিল। কিন্তু নিহতের মা ফুলবানু বিবি ছেলের বউয়েরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা বিশ্বাস করতে নারাজ।

তিনি একই গ্রামের রায়হান উদ্দীন সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন পিপিএম এর নেতৃত্বে পুলিশ আসামী গ্রেফতার করতে নানা স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। ঘটনার ১১ দিন পর র‌্যাব-৯ এর সহযোগিতায় যৌথ অভিযান চালিয়ে সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানা এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামী রায়হান উদ্দীনকে গ্রেফতার করে। গতকাল শুক্রবার সে আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি প্রদান করে। তার দেখানো মতে জমি থেকে একটি তালা চাবী এবং তার শয়ন কক্ষে তল্লাশি করে রায়হানের পরনের জিন্সের প্যান্ট এর পকেট থেকে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট উদ্ধার করে ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমুলক জবান বন্দি প্রদান করে ঘাতক রায়হান জানায়, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে প্রথমে নিহতের মেজো ভাবী তাছলিমা বেগমের সাথে পরে বড় ভাবী রোজিনা বেগমের সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়।

বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে গ্রামে বিচার শালিস হয় বিচারে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপরও রায়হান উদ্দীন প্রায়ই তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো গত ২৪ নভেম্বর রাত অনুমান ৮/৯ টার দিকে তাদের বাড়িতে যায়। প্রথমে মেজো ভাবী তাছলিমা বেগমের সাথে মেলামেশা করে। পরে বড় ভাবী রোজিনা বেগমের রুমে যাওয়ার সময় নিহত মোস্তাকিন দেখে ফেলে। এ সময় মোস্তাকিন তাকে বলে, এর আগেও তুমি আসা যাওয়া করছো, তোমাকে নিষেধ করলেও শুননা। মা ফুলবানু বিবি বাড়িতে আসলে সব বলবো


তখন দুই বউ ও রায়হান পরিকল্পনা করে মোস্তাকিনকে হত্যা করার। পরিকল্পনানুযায়ী রায়হান ইমামবাড়ী বাজার থেকে ১ টি ছুরি ও দুইটি তালা কিনে আনে। পরে ৩ জন নিহত মোস্তাকিন মিয়ার শয়ন কক্ষে যায়। সেখানে মেজো বউ তাছলিমা বেগম তার দুই পা ধরে রাখে। বড় বউ রোজিনা বেগম তার হাত ও শরীরে ধরে রাখে এসময় রায়হান উদ্দীন বাম হাত দিয়ে।


মোস্তাকিনের মুখ চেপে ধরে ডান হাত দিয়ে গলায় ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে পরে রায়হান পালিয়ে যায়। এদিকে পরিকল্পনা নুযায়ী নিহত মোস্তাকিনের ভাবীরা সুর চিৎকার করে কান্না করতে থাকে উল্লেখ্য, ওই গ্রামের মৃত জফর মিয়ার ৫ ছেলে। প্রায় ৬ বছর আগে জফর মিয়া মৃত্যুবরণ করেন। মৃত জফর মিয়ার বড় ছেলে ফজলু মিয়া দুবাই এবং মেজো ছেলে সজলু মিয়া ওমান প্রবাসী, ৩য় ছেলে সজল মিয়া মৌলভীবাজার থানার সরকার বাজারে ইটভাটায় কাজ করে, চতুর্থ নিহত মোস্তাকিন মিয়া বাড়িতে থেকে রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করতো। ছোট ছেলে তামিম মিয়া ৩য় শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। বড় দুই ছেলের স্ত্রী রোজিনা বেগম (২৮) ও তাসলিমা আক্তার (২০) সহকারে মামলার বাদী ফুলবানু বেগম ৪ বেডরুমের বসতঘরে বসবাস করে আসছিলেন।




 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]