মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: পেনশনের সব টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা। তাকে প্রলোভন দেখানো হয়, ‘ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট’ নামের অ্যাপে বিনিয়োগ করলে মুনাফা মিলবে সঞ্চয়পত্রের চেয়ে অনেক বেশি। প্রলোভনে পড়ে অবসর জীবনের শেষ সম্বলটুকু এই ব্যক্তি বিনিয়োগ করেছিলেন ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টে। তারপর হয়েছেন প্রতারিত।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার তিনি রাজশাহীর আদালতে প্রতারণার মামলা করেছেন। এ নিয়ে ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় রাজশাহীতে মোট ১০টি মামলা হলো। এছাড়া নাটোরে একটি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার মামলা করা ব্যক্তি সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হওয়ার ভয়ে গণমাধ্যমে নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
তবে তিনি জানিয়েছেন, প্রতারক চক্রের প্রলোভনে পড়ে তিনি ৩৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। এছাড়া তার মামলার পাঁচজন সাক্ষী বিনিয়োগ করেছিলেন আরও ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। প্রতারিত এই পাঁচজনের মধ্যে একজন দীর্ঘদিন ব্যাংকে চাকরি করে অবসরে যাওয়া ব্যক্তিও আছেন। মামলায় মোট চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
তারা হলেন- অ্যাপটির বাংলাদেশ প্রধান সজিব কুমার ভৌমিক ওরফে মাহাদি ইসলাম (৩৩), রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান মোঃ ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ (৩৮), সোহাগের স্ত্রী ও বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ফাতেমা তুজ জহুরা ওরফে মিলি (৩২) এবং জেলা এজেন্ট মিঠুন মল (৩৬)। এদের মধ্যে মাহাদি হলেন অ্যাপের মূলহোতা।
নতুন এ মামলার বাদীর আইনজীবী শামীম আখতার হৃদয় জানান, বৃহস্পতিবার রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার আমলি আদালতে মামলাটি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক ফয়সাল তারেক মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৪ এপ্রিল মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ রয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, ইউএস-অ্যাগ্রিমেন্ট দেশের একটি প্রতারকচক্রের তৈরি করা মোবাইল অ্যাপ। প্রতি এক লাখ টাকা বিনিয়োগে প্রতিমাসে ১১ হাজার ২০০ টাকা মুনাফা রেমিটেন্স আকারে দেওয়ার লোভনীয় প্রলোভন দিয়ে এই অ্যাপে বিনিয়োগ করানো হয়। মামলার আসামিদের মধ্যে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা তুজ জহুরা মিলির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন রাজশাহীর আদালত। অন্য আসামিরা পলাতক।
এ প্রতারণার ঘটনায় প্রথম মামলাটি দায়ের হলে রাজশাহী মহানগর পুলিশ আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগে চিঠি দেয়। এছাড়া তাদের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিত করতেও পুলিশের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ফাতেমা তুজ জহুরা মিলি কারাগারে যাওয়ার আগে উল্টো এ অ্যাপের ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধেই ভয়ভীতি দেখানো ও হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা করেছিলেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আদালত এ মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। ফাতেমা তুজ জহুরা মিলি এখনো কারাগারে। তার স্বামী সোহাগ গত জানুয়ারিতেই ভারতে পালিয়ে গেছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪,ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]
দৈনিক বাংলার আলো নিউজ জিএমএস বাংলার আলো গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান।