মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলে চলতি বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে বলছেন চাষিরা। তবে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে আশানুরূপ ভুট্টার দাম না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি বছর যমুনা চরাঞ্চলসহ উপজেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে, ৩ হাজার ১০ হেক্টর এবং ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে ২৭ হাজার ৬৪২ মেট্রিকটন।
চলতি বছরের বন্যায় উপজেলার অর্জুনা, গাবসারা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার এই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে যমুনার বুকে জেগে উঠা বালুচরে ভুট্টা চাষ করেন ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষকরা। বন্যা পরবর্তী সময়ে যমুনার বুকে জেগে উঠা বালুচরে ভুট্টা চাষ করে তাদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেন এখানকার কৃষকেরা। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রতি মন শুকনো ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকায়।
উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের যমুনা চরাঞ্চলের ভুট্টা চাষি কোরবান তালুকদার, আব্দুল মালেক, সিরাজুল ইসলাম বলেন- প্রতি বছর বন্যায় আমাদের বীজতলা, সবজি খেত সহ সকল ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে আমরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হই। আর এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বন্যা পরবর্তী সময়ে যমুনার বুকে জেগে উঠা চরে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি আমরা ভুট্টা চাষ করে থাকি। ভুট্টা চাষে খরচ অনেক কম হলেও বাজারে ভালো দাম না পেলে তেমন একটা লাভ হবে না। দাম কম হওয়ায় এবছর আমাদের তেমন একটা লাভ হবে না ।
রামপুর গ্রামের ভুট্টা চাষি চান্দু শেখ বলেন, এখানকার মাটি ভুট্টা চাষের উপযোগী হওয়ার আমাদের চরাঞ্চলের ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। এবছর আমি প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ২৫ থেকে ৩০ মণ ফলন পেয়েছি। বাজার ভালো থাকলে ১৫ বিঘাতে খরচ বাদে প্রায় তিন লক্ষ টাকা লাভ হতো। গত বছর প্রতি মন ভুট্টা বিক্রি করেছি ১ হাজার ২’শ থেকে ১ হাজার ৫’শ টাকায় । সেই ভুট্টা এবছর বিক্রি করছি ৮’শ থেকে ১ হাজার টাকায়।
উপজেলার গোবিন্দাসী হাটে ভুট্টা বিক্রি করতে আসা কৃষক সিরাজ মিয়া বলেন, আমাদের স্থানীয় হাট-বাজার গুলোতে চরাঞ্চলের অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টার চাহিদা ও দাম মোটামটি ভালো। এবছর বিঘা প্রতি প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মন ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। বাজারে প্রতি মন ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ভুট্টা ৮ থেকে ৯’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমাদের যমুনা চরাঞ্চলের বালি মাটি ভুট্টা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বন্যা পরবর্তী সময়ে এখানকার কৃষকরা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ভুট্টা চাষ করেন। গত বছর বাজারে ভুট্টার ভালো দাম পাওয়ায় এবছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ভুট্টা আবাদ।
আমরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে উন্নত মানের ভুট্টার বীজ ও সার বিতরণ করেছি। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আমরা কৃষকদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি। গতবছর উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলের ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১৫২ হেক্টর।
এবছর এর লক্ষ্যমাত্রা এর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ১০ হেক্টর। ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে ২৭ হাজার ৬৪২ মেট্রিকটন। আগামীতে চরাঞ্চলসহ উপজেলায় ভুট্টার আবাদ আরো ব্যাপক পরিসরে বৃদ্ধি পাবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]