ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারীতা, বিধিবহির্ভূত কর্মকান্ড, অফিসস্টাফদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও কাউন্সিলরদের অকথ্যভাষায় গালাগাল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান মাসুমের বিরুদ্ধে।
তিনি নিয়মিত অফিস করেন না। এছাড়াও অফিসে আসলেও নিজের কক্ষের মধ্যে বসে ধূমপান করার অভিযোগ রয়েছে। এসব কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহেদ খান উপসহকারী প্রকৌশলীকে অন্যত্র বদলির জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এতেও কোন সুফল আসেনি। এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন এই উপসহকারী প্রকৌশলী।
অভিযোগে জানা যায়, রবিবার দুপুরে পৌরসভার কম্পিউটার অপারেটর নাঈমকে প্যানেল মেয়র পলাশ তালুকদার কাজে পাঠান। এসময় উপসহকারী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান মাসুম নাঈমকে ফোনে তাঁর কক্ষে ডাকেন। নাঈমের আসতে একটু দেড়ি হওয়ায় অকথ্যভাষায় তাকে গালাগালি করেন উপসহকারী প্রকৌশলী। কেন আসতে দেড়ি হলো, এ কথার জবাবে নাঈম তাকে বলেন, প্যানেল মেয়র তাকে কাজে পাঠিয়েছে। এ কথা শুনেই উপসহকারী প্রকৌশলী প্যানেল মেয়রসহ কাউন্সিলরদের গালাগাল করতে থাকেন। পাশের কক্ষে বসে গালাগাল শুনে প্যানেল মেয়র ও কয়েকজন কাউন্সিলর উপসহকারী প্রকৌশলীকে গালাগাল কেন করছেন জানতে চাইলে, প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলরদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
অভিযোগ রয়েছে গত দের বছর আগে নলছিটি পৌরসভায় উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে যোগদান করেন মো. মাহাবুবুর রহমান মাসুম। যোগদানের পর থেকে তিনি পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। পৌরসভার সচিব ও নির্বাহী কর্মকর্তার কোন কথা শোনেন না তিনি। নিজের ইচ্ছেমত পৌরসভায় আসে এবং যায়। তিনি অফিস কক্ষে বসে প্রকাশ্যে ধূমপান করেন। তাকে এ বিষয়ে নিষেধ করা হলেও কারো কথাই কর্নপাত করছেন না তিনি। তাঁর এসব কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তিনি পৌরসভার স্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত বলেও জানান পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহেদ খান।
এ ব্যাপারে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন মীরবহর বলেন, উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নানা ধরণের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তিনি পৌরসভার স্টাফ ও কাউন্সিলরদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। আমরা তাঁর আচরণে অতিষ্ঠ।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র পলাশ তালুকদার বলেন, আমার বাবা-মাকে তুলে উপসহকারী প্রকৌশলী গালাগাল করলে আমিসহ অন্যন্য কাউন্সিলররা এ বিষয়ে জানতে চাই। এতে তিনি আরো ক্ষেপে যান। পরে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পৌরসভার কোন নিয়ম কানুন মানেন না এই উপসহকারী প্রকৌশলী। তাকে এখান থেকে অপসারণ করার দাবি জানাচ্ছি।
পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ খান বলেন, পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী আমার কোন কথা শোনেন না। নিজের ইচ্ছেমত অফিস করেন। সময় মতো তাকে পাওয়া যায় না। বিধিবহির্ভূত কাজের জন্য চাপ দিচ্ছেন। তাকে অন্যত্র বদলির জন্য আমি গত বছরের ১৫ নভেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি। আবেদনের এখনো কোন সুরহা হয়নি।
উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. মাহাবুবুর রহমান মাসুম বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। আমি কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করি না।