প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ৫:১৬ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ২১, ২০২৩, ৮:৫১ পি.এম
ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী ধরতে দাবীকৃত ঘুষের টাকা না দেয়ায় বাদীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ
মির্জাগঞ্জ পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই) এর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলার ওরেন্টভুক্ত আসামি ধরতে বাদীর কাছে অর্ধ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত উপরিদর্শক (এসআই) এর নাম আবুল হোসেন। টাকা না দেওয়ায় উল্টো বাদীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন ওই এসআই। সবশেষ আসামীর কাছ থেকে একটি চুরির অভিযোগ নিয়ে ওই বাদীকে আটক করার হুমকি দেন সে।
এ ধরনের হুমকি পেয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী সোমবার (২১ আগস্ট) বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজির কাছে প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
মামলার বাদী জানান, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে পারিবারিকভাবে মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের মানসুরাবাদ গ্রামের মৃত জিন্নাত আলী জোমাদ্দারের ছেলে শামসুল হক জোমাদ্দারের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় তার। এটা ছিলো তাদের উভয়েরই দ্বিতীয় বিবাহ। বিবাহের সময় স্বামী শামসুল হককে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দেয়া হয় বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগী স্ত্রী। পুনরায় বিবাহের এক বছর পরে স্বামী তার কাছে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। স্বামীর চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় সে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করলে এ ঘটনায় আমি চলতি বছরের ৪ এপ্রিল পটুয়াখালী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করি। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা মির্জাগঞ্জ থানায় আসলে থানার এসআই আবুল হোসেন আমাকে ফোন করে বার বার দেখা করতে বলেন। জীবিকার তাগিদে আমি ঢাকায় থাকলেও বার বার এসআই এর হুমকি-ধামকির ঘ্যারাকলে ঢাকা থেকে আসতে বাধ্য হই। ঢাকা থেকে এসে আমি এসআই আবুলের সাথে দেখা করলে সে আসামি গ্রেফতার করার জন্য টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে না পেয়ে আমার বৃদ্ধা মায়ের কাছে ৫০,০০০ টাকা দাবি করেন। পরে মামলার তারিখ আসলে আদালতে হাজির হয়ে সংসার করতে রাজি হওয়ার শর্তে আমার স্বামীর জামিন হয়। জামিনের পরে আমার স্বামী ৫/৭জন লোকসহ আমার বাবার বাড়ি থেকে এসে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। আমার স্বামী তার বাড়িতে আমাকে রেখে পরের দিন পালিয়ে যায়।
এরপর ২৬ জুন এস আই আবুল হোসেন একটি নোটিশের ফটোকপি নিয়ে এসে আমার তালাক হয়েছে বলে আমার গায়ে হাত দিয়ে টেনেহিঁচড়ে অর্ধ উলঙ্গ করে ঘরের বাহিরে ফেলে দিয়ে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে সে তার হাতের মোবাইল ফোন দিয়ে সবকিছুর ভিডিও করে আর হুমকি-ধামকি দিতে দিতে চলে যায়। কিছু দূর যাওয়ার পরে আমার মুঠোফোনে কল করে সমাধান করে দেবে বলে আবারও টাকা দাবি করে। এই ঘটনার কিছুদিন পরে আমি আমার শশুর বাড়ির অন্যান্যদের জ্বালা-যন্ত্রণায় দিশেহারা হয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য আবারো আমার বাবার বাড়ি চলে আসি। এখন ২/৩ দিন ধরে আমি সহ আমার পরিবারের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ হয়েছে বলে জানিয়ে আবারো টাকা দাবি করছেন এসআই আবুল। যদি টাকা দেওয়া না হয় তাহলে আমাদের এরেস্ট করে থানায় নিয়ে যাবে বলে হুমকি দিয়ে গেছেন সে।
ভুক্তভোগী শারমিনের মা বলেন, গত শনিবার আবুল হোসেন বাড়িতে এসে এই বলে হুমকি দেয় যে আপনাদের বিরুদ্ধে চুরির মামলা হয়েছে। যদি টাকা দেওয়া না হয় তাহলে আপনার দুই নাতিসহ আপনাদের সবাইকে এরেস্ট করে থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মির্জাগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক(এসআই) আবুল হোসেনর মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে থানায় গিয়ে তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন, উক্ত ঘটনা ঘটেছে আমি এই থানায় যোগদানের পূর্বে। তাই এই বিষয়ে আমি অবগত নই। আগে ঘটনাটি জেনে তারপর আমি বক্তব্য দিতে পারবো এবং ঘটনাটি যদি আমার কাছে আসে তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী অফিসিয়াল ফর্মালিটিজ মেনে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি জামিল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, তদন্ত করে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]
দৈনিক বাংলার আলো নিউজ জিএমএস বাংলার আলো গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান।