বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০২২ উপলক্ষে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও সুরক্ষার জন্য অসাধারণ অবদান রাখায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পুরষ্কারে ভূষিত হন । তার প্রতিষ্ঠান এন. আই. খান ফাউন্ডেশন নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টকে অটিজম সচেতনতা দিবস- ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হয়।
এছাড়াও, কামরুন্নেছা আশরাফ দীনা ২০১৮ সালে নেত্রকোনা জেলা পর্যায়ে "জাতীয় শ্রেষ্ঠ সমবায় পুরস্কার" এবং ময়মনসিংহ বিভাগীয় ও নেত্রকোনা জেলা "জয়িতা পুরস্কার-২০১৬" তে ভূষিত হয়েছেন।
দেশব্যাপী অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিদের জন্য দীর্ঘ এক দশকের বেশী সময় ধরে নিরলস কাজ করে যাচ্ছিলেন কামরুন্নেছা আশরাফ দীনার প্রতিষ্ঠান এন. আই. খান ফাউন্ডেশন।
নেত্রকোনা শহর সমাজসেবা সমবায় সমিতির সভাপতি কামরুন্নেছা আশরাফ দীনা সুইড বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক। সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি ক্রীড়া বিষয়ক কর্মকাণ্ডেও সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ছোট বেলা থেকেই ভালোবাসেন খেলাধুলা। খেলাধুলা করেছেন দীর্ঘ সময়। তিনি ছিলেন নেত্রকোনা জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটি, প্রধান উপদেষ্টা, লেডিস ক্লাব, নেত্রকোনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক, সহ-সভাপতি, কার্যনির্বাহী কমিটি, নেত্রকোনা জেলা ক্রীড়া সংস্থা শেখ রাসেল স্পোর্টস একাডেমি, সভাপতি, বিশেষ অলিম্পিক, নেত্রকোনা জেলা।
কামরুন্নেছা আশরাফ দীনা বাংলাদেশ টার্গেট বল অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী সদস্য। তিনি ২০০৮ সাল থেকে ময়মনসিংহ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ছিলেন। কামরুন্নেছা আশরাফ দীনা জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী খেলোয়াড়, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন (১৯৭৬-১৯৮০)। তিনি ১৯৮৬ সালে ভলিবলে জাতীয়ভাবে রানার আপ পজিশন লাভ করেন।
আসলে, কামরুন্নেছা আশরাফ দীনার জীবন কর্মবহুল ও সাফল্যমণ্ডিত। তিনি একাধারে যেমন রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেকে বিকশিত করেছেন, তেমনি সমাজসেবায় তার উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা প্রশংসনীয় এবং অনবদ্য।
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন কামরুন্নেছা আশরাফ দীনা। তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক, নেত্রকোনা জেলা, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, নেত্রকোনা শিল্পকলা একাডেমির আহবায়ক। একইসাথে তিনি নেত্রকোনার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ড্রাগস এবং ড্রাগ অপব্যবহার সংগঠন, গার্লস গাইড, স্কাউটসের সাথে যুক্ত ছিলেন।
কামরুন্নেছা আশরাফ দীনা মানবকল্যাণে, সমাজসেবায়, শিক্ষা-ক্রীড়া-সাংস্কৃতিক সর্বোপরি সমাজের নানা ক্ষেত্রে, নানা কর্মে দীর্ঘ সময় ধরে নিরলস কাজ করে চলেছেন। 'ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো' বলে মহানব্রতে আত্মনিয়োগ করেছেন। তাকে নিয়ে বলতে গেলে শুধু তার কর্মজীবন আর সাফল্যগাথাই উঠে আসে। আলাদা করে কিছু বলতে গেলে তা যেন শুধু অতিরঞ্জিতই করা হবে। আপন আলোয় উদ্ভাসিত এক অনন্য মহিয়সী নারী, কামরুন্নেছা আশরাফ দীনা।
কামরুন্নেছা আশরাফ দীনার পিতা সাইদুর রহমান ও মাতা মেহেরুন্নেছা। তিনি কিডনী জনিত অসুস্থ হয়ে কয়েকদিন যাবৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতালে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১জুন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০ টা ২০ মিঃ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্বামী আত্মীয় স্বজনসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।