লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের জেলা উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি প্রবাহ হ্রাস এবং অব্যাহত চর পড়ায় স্বাভাবিক নৌ-চলাচল ও সেচ কার্য ব্যাহত হচ্ছে খোয়াই, করাঙ্গী, সুতাং, সোনাই, ভেড়ামোহনা, সুটকী, রত্না, বিজনা ও কুশিয়ারা নদীতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ না থাকায় মালবাহী বড় বড় নৌকা ও লঞ্চ চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে ভারতের ত্রিপুরা পাহাড় থেকে বয়ে আসা খরস্রোতা খোয়াই নদীর পানির সাথে প্রচুর পলিমাটি আসায় নদীর গভীরতা পূর্বের ২০ ফুটের স্থলে বর্তমানে ১১ হতে ১৪ ফুটে দাঁড়িয়েছে ১৫০ ফুট প্রশস্ত এই নদীতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ৫ হাজার হতে ৮ হাজার কিউসেক বর্ষাকালে তা দ্বিগুণ এবং শীতকালে ১০০ কিউসেকে দাঁড়ায়।
নদীর উজানে ভারতের খোয়াই মহকুমার পদ্মবিল নামক স্থানে নির্মিত বাধের মাধ্যমে খোয়াই নদীর পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করার ফলে নদীতে পানির প্রবাহ অস্বাভাবিক ভাবে কমে গেছে, একই কারণে অপরাপর নদীগুলোতে শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে ফলে জেলার ভাটি অঞ্চলে নৌ চলাচল ব্যাহত হওয়া ছাড়াও বোরো ধান চাষাবাদে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলী বাজারের পূর্ব দিকে কুশিয়ারা ও বিবিয়ানা নদীর সংযোগ স্থলে চর পড়ায় বর্ষাকালে ও স্বাভাবিক নৌ চলাচল ব্যাহত হয় মার্কুলী হতে হিলাল নগর পর্যন্ত স্থানে নদীতে চর পড়ে নদীর পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
আজমিরীগঞ্জ হতে শেরপুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ নদী পথের বিভিন্ন স্থানে চর পড়ায় যাত্রী ও মালবাহী লঞ্চ চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। জেলার ভাটি অঞ্চলে বিশেষ করে বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ লাখাই ও নবীগঞ্জ উপজেলার ব্যবসা বাণিজ্য সারাবছরই স্বাভাবিক নৌ-চলাচলের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। নদীগুলোতে পানি প্রবাহ হ্রাস পেয়ে নৌ-চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহন ব্যয়ও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহানেওয়াজ তালুকদার বলেন।
জেলার নদী গুলোর নাব্যতা পানির ধারণ ক্ষমতা ও সেচ সুবিধা বৃদ্ধি এবং নৌ-যোগাযোগ অব্যাহত রাখার জন্য ড্রেজিং সহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে লাখাই থেকে কামড়াপুর পর্যন্ত খোয়াই নদীতে ৪৫ কিলোমিটার এবং কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রামের খলাগাঁও থেকে হবিগঞ্জের রত্না-ধলেশ্বরী নদীর মোহনা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার অংশ ড্রেজিং এর জন্য ১৪শ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ একটি পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করার পর অনুমোদন পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় কাজ করা হবে।