মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ
মহাষষ্ঠীর দিন দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে। উলুধ্বনি, শঙ্খনাদ, কাঁসা আর ঢাকের তালে কেঁপে উঠবে বাংলার আকাশ বাতাস। পর্যায়ক্রমে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীতে ভাগ ভাগ হয়ে দুর্গাপূজা পালিত হবে। দশমীতে হবে প্রতিমা বিসর্জন। এবারও আসন্ন দূর্গা পূজার দূর্গা আসছে নৌকায় চড়ে। আর ফিরে যাবে ঘটকে করে।
মাতৃত্ব ও শক্তির প্রতীক দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর মাধ্যমে শুরু হয়েছে, বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। মহালয়ার মাধ্যমে দেবী দুর্গা পা রাখেন মর্ত্যলোকে। আর মাত্র তের দিন পর ষষ্ঠীতে হবে দেবীর বোধন। তাদের মতে, এই দিন দেবী দুর্গা তার সন্তানদের নিয়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যে বাপের বাড়ি আসেন। সঙ্গী হবেন পুত্ররূপে ঠাঁই পাওয়া অশুরও। দূর থেকে শিব অনুসরণ করবেন দেবীকে। আর একেবারে শেষমুহূর্তে রঙ-তুলির আঁচড়ে দেবীকে সাজিয়ে তুলতে নির্ঘুম রাত কাটছে প্রতিমা শিল্পীদের। দেবী দুর্গাকে সকল দুঃখের নাশকারিণী বলে মানা হয়।
রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, রংতুলির আঁচড়ে একেকটি প্রতিমা ফুটিয়ে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। তারা জানান, পূজার মন্ডপের আনুষঙ্গিক কাজ প্রায় শেষ। এখন বাকি মন্ডপের ভেতরের কাজ ও প্রতিমায় রংতুলি। প্রতিটি প্রতিমা রংতুলিতে ফুটিয়ে তোলার জন্য প্রতিমা শিল্পীদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। ধুপ-ধুনুচি আর ঢাকের তালে কদিন পরেই মেতে উঠবে রামগঞ্জের প্রতিটি পূজা মণ্ডপ।
এরই মধ্যে দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে মণ্ডপ সাজানো ও নতুন জামা-কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। রঙ আর তুলির আঁচরে শেষ রূপায়নের কাজ করছেন, প্রতিমা শিল্পিরা। বোধনের মধ্যে দিয়ে আগামী ২০ অক্টোবর দেবী দর্শন দিবেন তার অজস্র ভক্তকে। তাই শারদ প্রাতে রামগঞ্জে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা বেড়েই চলেছে। নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় সাজিয়ে তুলছেন দেবী প্রতিমাকে। প্রতিমা দেখতে দেবীর ভক্তরা ছুটছেন মন্দির থেকে মন্দিরে। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে জানাচ্ছেন দেবীকে বরণে নিজেদের প্রস্তুতির কথাও। দুর্গার পাশাপাশি গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতীর দৃষ্টিনন্দন প্রতিমাও ফুটে উঠছে এক এক করে। সেই সঙ্গে দেবীর সিংহবাহিনী আর অসুরের বিনাশের চিত্রও। দেবীকে বরণের আগে নবরাত্রি পূজা-অর্চনা করছেন,
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। পুরোহিত বলছেন, এবার গজে চড়ে দেবী আসছেন শস্য, সমৃদ্ধি আর কল্যাণ নিয়ে। উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অপুর্ব কুমার সাহা বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শারদীয় দুর্গাপূজা। আর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে ৫ দিনব্যাপী এই উৎসব শুরু হতে যাচ্ছে। আমরা প্রতিটি পূজা মণ্ডপের কমিটির সাথে সারাক্ষণ যোগাযোগ রাখছি এবং নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে সকল প্রকার সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা মেনে শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। তবে এ নির্দেশনায় তাদের উৎসবের কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না
অন্যদিকে দূর্গোৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে পালন লক্ষে রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ এমদাদুল হক জানিয়েছেন, প্রতিটি পুজা মণ্ডপে কয়েক স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও সক্রিয় ভূমিকায় মাঠে থাকবে ও কাজ করবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]