বাংলাদেশ ০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ গণধর্ষণ মামলায় গ্রাম পুলিশসহ গ্রেপ্তার-২ ৪ বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই নানা আয়োজনে যশোর মুক্ত দিবস উদযাপন  বড় ভাইয়ের ইটের আঘাতে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা নারী নির্যাতন মামলা করায় বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ  মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ও সদস্য সচিব সহ চার নেতাকে গ্রেফতারে বিএনপির নিন্দা অবাধে চলছে মোবাইলে টাকা দিয়ে লুডু খেলা প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দূর্ঘটনা  বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে মারা গেলেন ছোট ভাই স্ত্রীর পরকীয়া সইতে না পেরে স্বামীর আত্মহত্যা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক পক্ষকাল ব্যাপি প্রচারাভিযান ইবি শিক্ষার্থী মানবতার সেবক মুরাদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার পিরোজপুর জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আর নেই প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

রামগঞ্জে প্রশাসনের নজরদারি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার পরও থামছে না ট্রাক্টর!!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:১৮:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ মার্চ ২০২২
  • ১৬৭৫ বার পড়া হয়েছে

রামগঞ্জে প্রশাসনের নজরদারি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার পরও থামছে না ট্রাক্টর!!

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভিডিও প্রতিযোগিতা: বিস্তারিত ফেইসবুক পেইজে

 

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

হ্যালো, আজ কি অভিযান চলবে? অপর প্রান্তের কথায় ফোনদাতা কিছুটা আশ্বস্ত হলেন। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের সোনাপুর চৌরাস্তার একটি চা দোকানে গতকাল সকালে ফোনদাতাকে এ ধরনের আলাপ করতে শোনা গেছে। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের নজরদারি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার পরও থামছে না ট্রাক্টরের অবৈধ চলাচল।

 

সম্প্রতি উপজেলাজুড়ে মালবাহী ট্রলি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে অভিযান। তাই ট্রাক্টর মালিক ও চালকেরা নিয়েছেন ভিন্ন কৌশল। এক সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চললে সেই খবর পৌঁছে যায় তাঁদের কাছে।

 

এই সুযোগে তাঁরা ট্রলি নিয়ে অন্য সড়কে চলে যান। গতকাল উপজেলা শহর ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি নিয়ে এখন হাসি-ঠাট্টা করেন। গতকাল রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রামগঞ্জ আসনের সাংসদ ড. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ট্রলির দানবীয় চাকার কারণে সদ্যনির্মিত সড়কগুলো ভেঙে যাচ্ছে।

 

 

মাটি বা ইট বোঝাই করে জমি থেকে মূল সড়কে উঠতে গিয়ে ট্রলির মাঝখানের বড় চাকার কারণে সড়কের পাশ ভেঙে যাচ্ছে। এতে সরকারি বরাদ্দে নির্মিত কোটি টাকার রাস্তার চরম ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনাও।

 

 

এ সময় তিনি চাষাবাদের জমি নিয়েও ট্রলি মালিক সমিতির লোকদের অনুরোধ করেন, যেন জমিতে ট্রলি না নামায়। চাষাবাদ যেন ট্রলি কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ট্রলি চলাচলে নির্দেশনা পেয়ে মাঠে নামেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা খাতুন। দফায় দফায় চলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।

 

 

তিন দিনের অভিযানে নগদ ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০টি মামলা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। ১ মার্চ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মনির হোসেন রানাকে জমির টপ সয়েল বিক্রির অপরাধে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, দুটি ট্রলি মালিকের ৩০ হাজার টাকা ও ৩টি মামলা, ৩ মার্চ দুই ট্রলি মালিকের ৩২ হাজার টাকাসহ ৩টি মামলা ও ৮ মার্চ ৪টি মামলাসহ ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা খাতুন।

 

 

দফায় দফায় জরিমানা করার পরও কীভাবে সড়কে অবাধে চলছে ট্রলির মতো নিষিদ্ধ মালবাহী বাহনটি তা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন অনেকেই। রামগঞ্জ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্সের ছাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তায় চলা যায় না। একদিকে ভাঙা রাস্তা, অন্যদিকে বেপরোয়া গতির এসব ট্রলির কারণে ধুলোয় ধূসর হয়ে থাকে চারদিক।

 

 

এ ছাড়া বেপরোয়া গতির কারণে আমরা দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকি। ট্রলিচালক রাসেল মিয়া বলেন, ‘যত দোষ ট্রলির চালক ও মালিকদের। রাস্তাঘাটের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ড্রাম ট্রাকের কারণে। আর আমরা শিখেছি ট্রলি চালানো। কয়েক ট্রলির মালিক ও চালকদের সঙ্গে হাজারো মানুষের রিজিক। আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা করে দিলে আর ট্রলি চালাব না।

 

 

উপজেলা ট্রলি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, আমরা লাখ লাখ টাকা খরচ করে ট্রলি কিনেছি। বছরের পর বছর তা চলছে। ট্রলিতে মালামাল আনা-নেওয়ার খরচ কম হওয়ায় এলাকার লোকজনও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এ ছাড়া আমাদের পরিবারের সদস্যরাও দুবেলা খেতে পারছে।

 

 

এ সময় তিনি প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা জানেন না বলেও দাবি করেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা খাতুন বলেন, মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে কোনো ধরনের ট্রলি চলাচল করতে পারবে না। আর যেহেতু এসব ট্রলির বৈধ কাগজপত্র নেই, সেহেতু ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ট্রলি চালক ও মালিকদের জরিমানার পাশাপাশি জেল দেওয়ার বিধান রয়েছে। এ সময় তিনি ট্রলি বা অবৈধ বাহন চলাচলে কঠোর নির্দেশনার বিষয়েও কথা বলেন।

 

 

 

রামগঞ্জে প্রশাসনের নজরদারি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার পরও থামছে না ট্রাক্টর!!

আপডেট সময় ০৩:১৮:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ মার্চ ২০২২

 

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

হ্যালো, আজ কি অভিযান চলবে? অপর প্রান্তের কথায় ফোনদাতা কিছুটা আশ্বস্ত হলেন। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের সোনাপুর চৌরাস্তার একটি চা দোকানে গতকাল সকালে ফোনদাতাকে এ ধরনের আলাপ করতে শোনা গেছে। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের নজরদারি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার পরও থামছে না ট্রাক্টরের অবৈধ চলাচল।

 

সম্প্রতি উপজেলাজুড়ে মালবাহী ট্রলি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে অভিযান। তাই ট্রাক্টর মালিক ও চালকেরা নিয়েছেন ভিন্ন কৌশল। এক সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চললে সেই খবর পৌঁছে যায় তাঁদের কাছে।

 

এই সুযোগে তাঁরা ট্রলি নিয়ে অন্য সড়কে চলে যান। গতকাল উপজেলা শহর ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি নিয়ে এখন হাসি-ঠাট্টা করেন। গতকাল রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রামগঞ্জ আসনের সাংসদ ড. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ট্রলির দানবীয় চাকার কারণে সদ্যনির্মিত সড়কগুলো ভেঙে যাচ্ছে।

 

 

মাটি বা ইট বোঝাই করে জমি থেকে মূল সড়কে উঠতে গিয়ে ট্রলির মাঝখানের বড় চাকার কারণে সড়কের পাশ ভেঙে যাচ্ছে। এতে সরকারি বরাদ্দে নির্মিত কোটি টাকার রাস্তার চরম ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনাও।

 

 

এ সময় তিনি চাষাবাদের জমি নিয়েও ট্রলি মালিক সমিতির লোকদের অনুরোধ করেন, যেন জমিতে ট্রলি না নামায়। চাষাবাদ যেন ট্রলি কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ট্রলি চলাচলে নির্দেশনা পেয়ে মাঠে নামেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা খাতুন। দফায় দফায় চলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।

 

 

তিন দিনের অভিযানে নগদ ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০টি মামলা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। ১ মার্চ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মনির হোসেন রানাকে জমির টপ সয়েল বিক্রির অপরাধে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, দুটি ট্রলি মালিকের ৩০ হাজার টাকা ও ৩টি মামলা, ৩ মার্চ দুই ট্রলি মালিকের ৩২ হাজার টাকাসহ ৩টি মামলা ও ৮ মার্চ ৪টি মামলাসহ ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা খাতুন।

 

 

দফায় দফায় জরিমানা করার পরও কীভাবে সড়কে অবাধে চলছে ট্রলির মতো নিষিদ্ধ মালবাহী বাহনটি তা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন অনেকেই। রামগঞ্জ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্সের ছাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তায় চলা যায় না। একদিকে ভাঙা রাস্তা, অন্যদিকে বেপরোয়া গতির এসব ট্রলির কারণে ধুলোয় ধূসর হয়ে থাকে চারদিক।

 

 

এ ছাড়া বেপরোয়া গতির কারণে আমরা দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকি। ট্রলিচালক রাসেল মিয়া বলেন, ‘যত দোষ ট্রলির চালক ও মালিকদের। রাস্তাঘাটের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ড্রাম ট্রাকের কারণে। আর আমরা শিখেছি ট্রলি চালানো। কয়েক ট্রলির মালিক ও চালকদের সঙ্গে হাজারো মানুষের রিজিক। আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা করে দিলে আর ট্রলি চালাব না।

 

 

উপজেলা ট্রলি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, আমরা লাখ লাখ টাকা খরচ করে ট্রলি কিনেছি। বছরের পর বছর তা চলছে। ট্রলিতে মালামাল আনা-নেওয়ার খরচ কম হওয়ায় এলাকার লোকজনও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এ ছাড়া আমাদের পরিবারের সদস্যরাও দুবেলা খেতে পারছে।

 

 

এ সময় তিনি প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা জানেন না বলেও দাবি করেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা খাতুন বলেন, মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে কোনো ধরনের ট্রলি চলাচল করতে পারবে না। আর যেহেতু এসব ট্রলির বৈধ কাগজপত্র নেই, সেহেতু ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ট্রলি চালক ও মালিকদের জরিমানার পাশাপাশি জেল দেওয়ার বিধান রয়েছে। এ সময় তিনি ট্রলি বা অবৈধ বাহন চলাচলে কঠোর নির্দেশনার বিষয়েও কথা বলেন।