মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁয় আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শফিকুর রহমান ওরফে মামুনকে (৪৫) পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদের নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে আহত শফিকুর রহমান ও তাঁর সমর্থকেরা অভিযোগ করেছেন। হামলার পর শহরে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য হামলাকারীরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে মহড়া দেন।
গত বুধবার দুপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় নাসিম আহমেদসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শফিকুর রহমানের ছোট ভাই শাফিউর রহমান।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শফিকুর রহমান একটি দরপত্রের বিষয়ে কথা বলতে গত বুধবার বেলা একটার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জাহিদ নজরুল চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর অফিসে যান। তত্ত্বাবধায়ককে অফিসে না পেয়ে তাঁর সাক্ষাতের জন্য হাসপাতালের পুরোনো ভবনের দ্বিতীয় তলায় তত্ত্বাবধায়কের অফিস কক্ষসংলগ্ন স্টাফ কক্ষে বসে অপেক্ষা করছিলেন। বেলা দেড়টার দিকে রাজনৈতিক পূর্বশত্রুতার জেরে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদের নির্দেশে আগ্নেয়াস্ত্র, চাকু, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ২০ থেকে ৩০ জন তাঁর ওপর হামলা চালান। হামলাকারীরা তাঁর মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরে হাসপাতালের স্টাফ ও সেখানে উপস্থিত রোগীর স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হামলার পর শহরে আতঙ্কে সৃষ্টির জন্য হামলাকারীরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে মহড়া দেন এবং মুক্তির মোড়ে শফিকুর রহমানের অস্থায়ী কার্যালয়ে আসবাব ভাঙচুর করেন।
আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শফিকুর রহমান ওরফে মামুন বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। নওগাঁ পৌরসভা নির্বাচনে আমি মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম। তখন থেকেই মূলত নিজ দলের কিছু লোকের বিরাগভাজন হয়েছি। রাজনীতির পাশাপাশি আমার ঠিকাদারি ব্যবসাও রয়েছে। সম্প্রতি নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে একটি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সেই দরপত্রের শর্তপত্র দেখার জন্য এবং হাসপাতালের রোগী ও স্বজনদের খাবারদাবারের খোঁজখবর নিতে তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে গেলে আমার ওপর হামলা করা হয়। নাসিমের নির্দেশে ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদধারী বেশ কিছু নেতা-কর্মী এই হামলা চালান। মূলত আমাকে ভয় দেখিয়ে তাঁরা দাবিয়ে রাখতে চায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহম্মেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি ঘটনার দিন হাসপাতাল এলাকাতেই যাইনি। হাসপাতালের সিসিটিভি আছে ফুটেজ দেখলে বুঝাযাবে ঘটনার সাথে জড়িত কারা। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফয়সাল বিন আহসান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে সত্যতা পেলে বিষয়টি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।