মোঃ আলী হোসেন নবীগঞ্জ থেকে:
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে মোঃ ফয়েজ আহমদ নামের এক ব্যবসায়ী যুবক অপহরণের ৮-মাস পর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেছে পুলিশ! কিন্তু এখনো নিখোঁজ ফয়েজের কোনো তথ্য পায়নি পরিবার কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহীনি। চরম হতাশা ও আতঙ্ক এর মধ্যে তিনপাত পাড় করছেন অপহৃত ফয়েজ এর পরিবারের লোকজন।
গত (১৫ জুন ২০২৩) মোবাইল ট্রাকিং এর মাধ্যমে, মারকুলি কবির এলাকায় আশুতোষ বৈষ্ণব (৩৫) নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ফয়েজের ব্যবহৃত মোবাইল Samsung ফোটি উদ্ধার করেছে বানিয়াচং এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে।
এরপর আশুতোষ বৈষ্ণব কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে, অপহরণ ও নিখোঁজ মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে, ডিবি পুলিশ হবিগঞ্জ কোর্টে পাঠিয়ে দেয়।
পরে ডিবি পুলিশ উক্ত আসামীর ৫-দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ৩-জুলাই সোমবার রিমান্ড শোনানি হলে, আদালত আশুতোষ বৈষ্ণব এর দুই দিনের রিমান্ড মনজুর করেন। মামলার আয়ু সাব ইন্সপেক্টর, আলমগীর হোসেন জানান আশুতোষ বৈষ্ণব এর রিমান্ড কার্যকর করা হবে হবিগঞ্জ এসপি অফিস ডিবি কার্যালয়ে।
এবিষয়ে পুলিশ জানায়:- নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার ছেলে জিয়াপুর মোঃ ফয়েজ আহমদ (২৩) কে সাথে নিয়ে তার বন্ধু একই এলাকার বাদে রায়ঘর গ্রামের আতা মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (২৮) গত ৩০ সেপ্টেম্বর (২০২২) শুক্রবার সন্ধায় নিজ বাড়ী হতে বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলি বাজারে ফয়েজ আহমেদ কে সাথে নিয়ে, আসামী জাকির হোসেন এর বোনের বাড়ী বিয়ের অনুষ্ঠানে যায়।
এরপর থেকেই ফয়েজ আহমেদ নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর থেকেই জাকির বিভিন্ন টালবাহানা করে এক পর্যায়ে ফয়েজের বড় ভাই কয়েছ আলী ইমন এর কাছ থেকে বিকাশে কিছু টাকা নেয় এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাকির হোসেন এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্বগোপনে চলে যায়।
এরই প্রেক্ষিতে অপহৃত ব্যবসায়ী ফয়েজের মাতা খাদেজা বেগম তার ছেলে উদ্ধারের জন্য গত ২৪ অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কগ-৫ আদালতে অপহরণ, নিখোঁজ (মামলা নং জিআর ২১৫/২২ নবী, বিজ্ঞ, আমল আদালত) ফয়েজের বন্ধু জাকির হোসেন সহ ৪-জনের নাম উল্লেখ করে এবং গং আরো ৪ জনের নাম গোপন রেখে আসামী দের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে উক্ত মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর গন্যে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে। কিন্তু পুলিশ উক্ত মামলায় কোনো আসামী কে ধরতে পারেনি।
পরে মামলার বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে মামলাটি হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। ডিবি পুলিশও মামলার আসামীদের ধরতে ব্যর্থ হয়। দীর্ঘ ৭মাস আসামী পলাতক থাকার পর গত বছরের ২৮ নভেম্বর মামলার ২নং আসামী বানিয়াচং থানার নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত মজর উল্লার পুত্র সামছুল হক (৩২) বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বেচ্ছায় হাজিরা দিলে তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন আদালত। দীর্ঘ দেড় মাস জেল হাজতে থাকার পর, বিজ্ঞ আদালত হইতে অস্থায়ী জামিনে মুক্তি পায়৷
মামলার প্রধান আসামী মোঃ জাকির হোসেন ৭মাস ১৫ দিন পর স্বেচ্ছায় হাজিরা দিতে গেলে বিজ্ঞ বিচারক আসামীর জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।