বাংলাদেশ ০২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা হতে বিপুল পরিমাণ ভয়াবহ মাদক বুপ্রেনরফিনসহ ০৩ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে এক নারী সহ মোট ১৩ জনকে আটক করেছে আহমদ হোসেন এর সাথে পূর্বধলার গণমাধ্যম কর্মীদের কুশল বিনিময়   রোগ মুক্তি কামনায় ধনবাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের  উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মায়ের হত্যার বিচার করতে, বিপাশা হতে চায় পুলিশ বিএনপি জামায়াত সবাই কইব বিয়া কর-বিয়া কর, চুন কিন্তু কেউ দিত না নওগাঁর বদলগাছীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত  খনিজ পদার্থের সন্ধানে পীরগঞ্জে কূপ খনন উদ্বোধন পিরোজপুরের নেছারাবাদে অসহায় ও দুস্থ রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব  রাঙ্গাবালীতে যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম এর আহ্বায়ক কমিটি গঠন নেত্রকোণা সংসদীয়  ৫টি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন ৩৬ জন মধুপুরে আবারও বেড়ে গেল পেঁয়াজের দাম রাজস্থীতে শান্তি চুক্তি ২৬ বছর পূর্তি উদযাপন  কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় রায়গঞ্জে দিন দিন বাড়ছে ভূট্টা চাষ

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে!!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২
  • ১৮০৯ বার পড়া হয়েছে

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে!!

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভিডিও প্রতিযোগিতা: বিস্তারিত ফেইসবুক পেইজে

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

‘বাক বাকুম পায়রা, মাথায় দিয়ে টায়রা, বউ সাজবে কাল কি, চড়বে সোনার পালকি। ছড়াটিতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি সংস্কৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। রামগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের বর ও কণের বহনের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি এখন আর আগের মত দেখা যায় না। শোনাও যায় না। চতুর দোলাতে চড়ে বধূ যায় হুন্ন, হুন্না। ৪০/৪৫ বছর পূর্বে দেশে বিবাহের সময়ে অত্র এলাকায় একমাত্র ব্যবহার হত পালকি।

 

পালকি ঘিরে কত হাসি তামাশার গল্প আজ ও শোনা যায় দাদা-দাদি বা মায়ের কাছ থেকে তা নিতান্তই রোমাঞ্চকর বটে। নানা ঘটনার সাক্ষী এই পালকি আজ হারিয়ে গেছে। এ ছাড়াও পালকি যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হত। এই বাহনে এক বা দুইজন যাত্রী নিয়ে পালকি ব্যবহার করা হত। এটিকে কাঁধে তুলে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যেত ৪ বা ৮জন বাহক। রাতে বিবাহ হত ভোরবেলা পালকীতে করে বর ও কনেকে ৮জন বাহক দিয়ে দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিয়ে তাদেরকে নিয়ে আসা হত। সেকি আনন্দ তা আজ আর নেই।

 

আসার পথে বাহকরা বর-কনেকে নিয়ে বিভিন্ন ছন্দে ছন্দে গান পরিবেশন করে গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা পাড়ি দিত। অপরদিকে বরের বাড়িতে কুলোতে ধান দূর্বা নিয়ে নববধূকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত বরের মাতা ও বোনেরা। পালকীতে চড়ে বর ও কনে বাড়িতে পৌছা মাত্র ধান ও দুর্বা ছিটিয়ে তাদেরকে বরণ করত এবং বাড়ির লোকজনরা কাদামাটি ও রং ছিটিয়ে উল্লাস করত।

 

সেই রং বেরঙের পালকী সন্ধান আর নেই। আধুনিক যানবাহন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে অভিজাত শ্রেণির লোকেরা পালকিতে চড়েই যাতায়াত করত। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও অন্যান্য শুভ অনুষ্ঠানে বর-কণের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল।

 

এছাড়াও অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসালয়ে নেওয়ার জন্য পালকি ব্যবহার হত। পালকি বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে ছোট সাধারণ পালকি ডুলি দুইজনে ব্যবহার করে। সবচেয়ে বড় পালকি বহন করে ৪-৮ জন বাহক। পালকির বাহকরা এর পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন কাজ করত। বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ১০/১২ দিন পূর্ব থেকেই পালকির বাহকদের ও মালিকদের বুকিং করে রাখা হত।

 

তবে পালকি সচরাচর তিন ধরণের হয়ে থাকে। সাধারণ পালকি, আয়না পালকি ও ময়ূরপঙ্খী পালকী। ওইসব পালকীতে কাঠের তৈরি পাখি, পুতুল ও লতাপাতা নকশা দিয়ে তৈরি হত। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর শিলাইদহে অবস্থানকালে তার জমিদারী কাছারি পরিদর্শনের সময় পালকী ব্যবহার করতেন। ১৯৩০ এর দশকে শহরাঞ্চলে রিক্সা প্রচলন হওয়ার পর থেকে পালকীর ব্যবহার ক্রমশ উঠে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্রমাগত প্রসার, সড়ক ও নদীপথে মোটর ও অন্যান্য যান চলাচল এবং প্যাডেল চালিত রিক্সা জনপ্রিয় হওয়ার ফলে পালকীর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।

 

 

ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা হতে বিপুল পরিমাণ ভয়াবহ মাদক বুপ্রেনরফিনসহ ০৩ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে!!

আপডেট সময় ০৪:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

‘বাক বাকুম পায়রা, মাথায় দিয়ে টায়রা, বউ সাজবে কাল কি, চড়বে সোনার পালকি। ছড়াটিতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি সংস্কৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। রামগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের বর ও কণের বহনের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি এখন আর আগের মত দেখা যায় না। শোনাও যায় না। চতুর দোলাতে চড়ে বধূ যায় হুন্ন, হুন্না। ৪০/৪৫ বছর পূর্বে দেশে বিবাহের সময়ে অত্র এলাকায় একমাত্র ব্যবহার হত পালকি।

 

পালকি ঘিরে কত হাসি তামাশার গল্প আজ ও শোনা যায় দাদা-দাদি বা মায়ের কাছ থেকে তা নিতান্তই রোমাঞ্চকর বটে। নানা ঘটনার সাক্ষী এই পালকি আজ হারিয়ে গেছে। এ ছাড়াও পালকি যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হত। এই বাহনে এক বা দুইজন যাত্রী নিয়ে পালকি ব্যবহার করা হত। এটিকে কাঁধে তুলে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যেত ৪ বা ৮জন বাহক। রাতে বিবাহ হত ভোরবেলা পালকীতে করে বর ও কনেকে ৮জন বাহক দিয়ে দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিয়ে তাদেরকে নিয়ে আসা হত। সেকি আনন্দ তা আজ আর নেই।

 

আসার পথে বাহকরা বর-কনেকে নিয়ে বিভিন্ন ছন্দে ছন্দে গান পরিবেশন করে গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা পাড়ি দিত। অপরদিকে বরের বাড়িতে কুলোতে ধান দূর্বা নিয়ে নববধূকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত বরের মাতা ও বোনেরা। পালকীতে চড়ে বর ও কনে বাড়িতে পৌছা মাত্র ধান ও দুর্বা ছিটিয়ে তাদেরকে বরণ করত এবং বাড়ির লোকজনরা কাদামাটি ও রং ছিটিয়ে উল্লাস করত।

 

সেই রং বেরঙের পালকী সন্ধান আর নেই। আধুনিক যানবাহন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে অভিজাত শ্রেণির লোকেরা পালকিতে চড়েই যাতায়াত করত। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও অন্যান্য শুভ অনুষ্ঠানে বর-কণের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল।

 

এছাড়াও অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসালয়ে নেওয়ার জন্য পালকি ব্যবহার হত। পালকি বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে ছোট সাধারণ পালকি ডুলি দুইজনে ব্যবহার করে। সবচেয়ে বড় পালকি বহন করে ৪-৮ জন বাহক। পালকির বাহকরা এর পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন কাজ করত। বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ১০/১২ দিন পূর্ব থেকেই পালকির বাহকদের ও মালিকদের বুকিং করে রাখা হত।

 

তবে পালকি সচরাচর তিন ধরণের হয়ে থাকে। সাধারণ পালকি, আয়না পালকি ও ময়ূরপঙ্খী পালকী। ওইসব পালকীতে কাঠের তৈরি পাখি, পুতুল ও লতাপাতা নকশা দিয়ে তৈরি হত। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর শিলাইদহে অবস্থানকালে তার জমিদারী কাছারি পরিদর্শনের সময় পালকী ব্যবহার করতেন। ১৯৩০ এর দশকে শহরাঞ্চলে রিক্সা প্রচলন হওয়ার পর থেকে পালকীর ব্যবহার ক্রমশ উঠে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্রমাগত প্রসার, সড়ক ও নদীপথে মোটর ও অন্যান্য যান চলাচল এবং প্যাডেল চালিত রিক্সা জনপ্রিয় হওয়ার ফলে পালকীর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।