বাংলাদেশ ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
শের-ই- বাংলা পাবলিক লাইব্রেরীতে পিরোজপুর সাহিত্য পরিষদের ঈদপূনর্মিলনী অনুষ্ঠিত সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী’কে শোকজ করল আ.লীগ যশোরে তিনদিন ব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী শুরু  এক পিস ডাবের দাম ১৮০ টাকা! সার্বজনীন পেনশন স্কিম নিবন্ধনে ‘রাজশাহী’ এগিয়ে ভান্ডারিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ কটিয়াদীতে ভাতিজার হাতে চাচা খুন শিক্ষক আবু তালেবের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া কাউনিয়ায় কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন মুলাদীতে শালিণ্যর উদ্যোগে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে পাঠকসভা হামিদপুর ইউনিয়নের পাতরা পাড়ায় সংসদ সদস্যের সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত॥ হত্যার মামলায় পলাতক আসামী টুন্ডা আমিন র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিড়িবি) বোদা উপজেলা শাখা দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন হয়। বুড়িচংয়ে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন  কাউখালীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাসিন জোমাদ্দার আর নেই। 

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে!!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২
  • ১৮৭৪ বার পড়া হয়েছে

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে!!

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

‘বাক বাকুম পায়রা, মাথায় দিয়ে টায়রা, বউ সাজবে কাল কি, চড়বে সোনার পালকি। ছড়াটিতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি সংস্কৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। রামগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের বর ও কণের বহনের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি এখন আর আগের মত দেখা যায় না। শোনাও যায় না। চতুর দোলাতে চড়ে বধূ যায় হুন্ন, হুন্না। ৪০/৪৫ বছর পূর্বে দেশে বিবাহের সময়ে অত্র এলাকায় একমাত্র ব্যবহার হত পালকি।

 

পালকি ঘিরে কত হাসি তামাশার গল্প আজ ও শোনা যায় দাদা-দাদি বা মায়ের কাছ থেকে তা নিতান্তই রোমাঞ্চকর বটে। নানা ঘটনার সাক্ষী এই পালকি আজ হারিয়ে গেছে। এ ছাড়াও পালকি যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হত। এই বাহনে এক বা দুইজন যাত্রী নিয়ে পালকি ব্যবহার করা হত। এটিকে কাঁধে তুলে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যেত ৪ বা ৮জন বাহক। রাতে বিবাহ হত ভোরবেলা পালকীতে করে বর ও কনেকে ৮জন বাহক দিয়ে দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিয়ে তাদেরকে নিয়ে আসা হত। সেকি আনন্দ তা আজ আর নেই।

 

আসার পথে বাহকরা বর-কনেকে নিয়ে বিভিন্ন ছন্দে ছন্দে গান পরিবেশন করে গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা পাড়ি দিত। অপরদিকে বরের বাড়িতে কুলোতে ধান দূর্বা নিয়ে নববধূকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত বরের মাতা ও বোনেরা। পালকীতে চড়ে বর ও কনে বাড়িতে পৌছা মাত্র ধান ও দুর্বা ছিটিয়ে তাদেরকে বরণ করত এবং বাড়ির লোকজনরা কাদামাটি ও রং ছিটিয়ে উল্লাস করত।

 

সেই রং বেরঙের পালকী সন্ধান আর নেই। আধুনিক যানবাহন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে অভিজাত শ্রেণির লোকেরা পালকিতে চড়েই যাতায়াত করত। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও অন্যান্য শুভ অনুষ্ঠানে বর-কণের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল।

 

এছাড়াও অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসালয়ে নেওয়ার জন্য পালকি ব্যবহার হত। পালকি বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে ছোট সাধারণ পালকি ডুলি দুইজনে ব্যবহার করে। সবচেয়ে বড় পালকি বহন করে ৪-৮ জন বাহক। পালকির বাহকরা এর পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন কাজ করত। বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ১০/১২ দিন পূর্ব থেকেই পালকির বাহকদের ও মালিকদের বুকিং করে রাখা হত।

 

তবে পালকি সচরাচর তিন ধরণের হয়ে থাকে। সাধারণ পালকি, আয়না পালকি ও ময়ূরপঙ্খী পালকী। ওইসব পালকীতে কাঠের তৈরি পাখি, পুতুল ও লতাপাতা নকশা দিয়ে তৈরি হত। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর শিলাইদহে অবস্থানকালে তার জমিদারী কাছারি পরিদর্শনের সময় পালকী ব্যবহার করতেন। ১৯৩০ এর দশকে শহরাঞ্চলে রিক্সা প্রচলন হওয়ার পর থেকে পালকীর ব্যবহার ক্রমশ উঠে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্রমাগত প্রসার, সড়ক ও নদীপথে মোটর ও অন্যান্য যান চলাচল এবং প্যাডেল চালিত রিক্সা জনপ্রিয় হওয়ার ফলে পালকীর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে!!

আপডেট সময় ০৪:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

‘বাক বাকুম পায়রা, মাথায় দিয়ে টায়রা, বউ সাজবে কাল কি, চড়বে সোনার পালকি। ছড়াটিতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি সংস্কৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। রামগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের বর ও কণের বহনের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি এখন আর আগের মত দেখা যায় না। শোনাও যায় না। চতুর দোলাতে চড়ে বধূ যায় হুন্ন, হুন্না। ৪০/৪৫ বছর পূর্বে দেশে বিবাহের সময়ে অত্র এলাকায় একমাত্র ব্যবহার হত পালকি।

 

পালকি ঘিরে কত হাসি তামাশার গল্প আজ ও শোনা যায় দাদা-দাদি বা মায়ের কাছ থেকে তা নিতান্তই রোমাঞ্চকর বটে। নানা ঘটনার সাক্ষী এই পালকি আজ হারিয়ে গেছে। এ ছাড়াও পালকি যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হত। এই বাহনে এক বা দুইজন যাত্রী নিয়ে পালকি ব্যবহার করা হত। এটিকে কাঁধে তুলে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যেত ৪ বা ৮জন বাহক। রাতে বিবাহ হত ভোরবেলা পালকীতে করে বর ও কনেকে ৮জন বাহক দিয়ে দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিয়ে তাদেরকে নিয়ে আসা হত। সেকি আনন্দ তা আজ আর নেই।

 

আসার পথে বাহকরা বর-কনেকে নিয়ে বিভিন্ন ছন্দে ছন্দে গান পরিবেশন করে গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা পাড়ি দিত। অপরদিকে বরের বাড়িতে কুলোতে ধান দূর্বা নিয়ে নববধূকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত বরের মাতা ও বোনেরা। পালকীতে চড়ে বর ও কনে বাড়িতে পৌছা মাত্র ধান ও দুর্বা ছিটিয়ে তাদেরকে বরণ করত এবং বাড়ির লোকজনরা কাদামাটি ও রং ছিটিয়ে উল্লাস করত।

 

সেই রং বেরঙের পালকী সন্ধান আর নেই। আধুনিক যানবাহন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে অভিজাত শ্রেণির লোকেরা পালকিতে চড়েই যাতায়াত করত। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও অন্যান্য শুভ অনুষ্ঠানে বর-কণের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল।

 

এছাড়াও অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসালয়ে নেওয়ার জন্য পালকি ব্যবহার হত। পালকি বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে ছোট সাধারণ পালকি ডুলি দুইজনে ব্যবহার করে। সবচেয়ে বড় পালকি বহন করে ৪-৮ জন বাহক। পালকির বাহকরা এর পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন কাজ করত। বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ১০/১২ দিন পূর্ব থেকেই পালকির বাহকদের ও মালিকদের বুকিং করে রাখা হত।

 

তবে পালকি সচরাচর তিন ধরণের হয়ে থাকে। সাধারণ পালকি, আয়না পালকি ও ময়ূরপঙ্খী পালকী। ওইসব পালকীতে কাঠের তৈরি পাখি, পুতুল ও লতাপাতা নকশা দিয়ে তৈরি হত। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর শিলাইদহে অবস্থানকালে তার জমিদারী কাছারি পরিদর্শনের সময় পালকী ব্যবহার করতেন। ১৯৩০ এর দশকে শহরাঞ্চলে রিক্সা প্রচলন হওয়ার পর থেকে পালকীর ব্যবহার ক্রমশ উঠে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্রমাগত প্রসার, সড়ক ও নদীপথে মোটর ও অন্যান্য যান চলাচল এবং প্যাডেল চালিত রিক্সা জনপ্রিয় হওয়ার ফলে পালকীর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।