ঢাকা ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, যোগাযোগ: মোবাইল : 01712-446306, 01999-953970
ব্রেকিং নিউজ ::
নোবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৬ পুঠিয়া উপজেলাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেল ৫৯৮টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার বাল্যবিবাহের প্রস্তুতির সময় একজন ভুয়া কাজীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪ বুড়িচংয়ে চতুর্থ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেল ৯৯ টি পরিবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফলে এক শিক্ষার্থীর ছুরিকাঘাতে দুই শিক্ষার্থী নিহত,গুরুত্বর আহত ১ পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে বাজার তদারকি বিদ্যালয়ের সংস্কৃতি অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদ করায় আহত শিক্ষার্থী নাটোরের নলডাঙ্গায় ২ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সুনামগঞ্জে জে.পি.এল’র ফাইনাল খেলা ও পুরষ্কার বিতরণ সম্পন্ন মানবিক ও সামাজিক কাজে বিশেষ অবদান রাখায় সন্মাননা পেলেন দেব বিশ্বাস পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় বিশ্ব পানি দিবস পালন করা হয়েছে আজ নেত্রকোণার ৯ উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা নারায়ণগঞ্জের শীতলেখা নদীতে অজ্ঞাত নারীর লাশ ধানক্ষেত দেখতে গিয়ে নেত্রকোণায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু নীলফামারীতে এমপি রানার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করায় জাতীয়পার্টির মানববন্ধন

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে!!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২
  • ১৭৩৭ বার পড়া হয়েছে

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে!!

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভিডিও প্রতিযোগিতা: বিস্তারিত ফেইসবুক পেইজে

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

‘বাক বাকুম পায়রা, মাথায় দিয়ে টায়রা, বউ সাজবে কাল কি, চড়বে সোনার পালকি। ছড়াটিতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি সংস্কৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। রামগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের বর ও কণের বহনের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি এখন আর আগের মত দেখা যায় না। শোনাও যায় না। চতুর দোলাতে চড়ে বধূ যায় হুন্ন, হুন্না। ৪০/৪৫ বছর পূর্বে দেশে বিবাহের সময়ে অত্র এলাকায় একমাত্র ব্যবহার হত পালকি।

 

পালকি ঘিরে কত হাসি তামাশার গল্প আজ ও শোনা যায় দাদা-দাদি বা মায়ের কাছ থেকে তা নিতান্তই রোমাঞ্চকর বটে। নানা ঘটনার সাক্ষী এই পালকি আজ হারিয়ে গেছে। এ ছাড়াও পালকি যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হত। এই বাহনে এক বা দুইজন যাত্রী নিয়ে পালকি ব্যবহার করা হত। এটিকে কাঁধে তুলে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যেত ৪ বা ৮জন বাহক। রাতে বিবাহ হত ভোরবেলা পালকীতে করে বর ও কনেকে ৮জন বাহক দিয়ে দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিয়ে তাদেরকে নিয়ে আসা হত। সেকি আনন্দ তা আজ আর নেই।

 

আসার পথে বাহকরা বর-কনেকে নিয়ে বিভিন্ন ছন্দে ছন্দে গান পরিবেশন করে গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা পাড়ি দিত। অপরদিকে বরের বাড়িতে কুলোতে ধান দূর্বা নিয়ে নববধূকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত বরের মাতা ও বোনেরা। পালকীতে চড়ে বর ও কনে বাড়িতে পৌছা মাত্র ধান ও দুর্বা ছিটিয়ে তাদেরকে বরণ করত এবং বাড়ির লোকজনরা কাদামাটি ও রং ছিটিয়ে উল্লাস করত।

 

সেই রং বেরঙের পালকী সন্ধান আর নেই। আধুনিক যানবাহন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে অভিজাত শ্রেণির লোকেরা পালকিতে চড়েই যাতায়াত করত। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও অন্যান্য শুভ অনুষ্ঠানে বর-কণের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল।

 

এছাড়াও অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসালয়ে নেওয়ার জন্য পালকি ব্যবহার হত। পালকি বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে ছোট সাধারণ পালকি ডুলি দুইজনে ব্যবহার করে। সবচেয়ে বড় পালকি বহন করে ৪-৮ জন বাহক। পালকির বাহকরা এর পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন কাজ করত। বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ১০/১২ দিন পূর্ব থেকেই পালকির বাহকদের ও মালিকদের বুকিং করে রাখা হত।

 

তবে পালকি সচরাচর তিন ধরণের হয়ে থাকে। সাধারণ পালকি, আয়না পালকি ও ময়ূরপঙ্খী পালকী। ওইসব পালকীতে কাঠের তৈরি পাখি, পুতুল ও লতাপাতা নকশা দিয়ে তৈরি হত। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর শিলাইদহে অবস্থানকালে তার জমিদারী কাছারি পরিদর্শনের সময় পালকী ব্যবহার করতেন। ১৯৩০ এর দশকে শহরাঞ্চলে রিক্সা প্রচলন হওয়ার পর থেকে পালকীর ব্যবহার ক্রমশ উঠে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্রমাগত প্রসার, সড়ক ও নদীপথে মোটর ও অন্যান্য যান চলাচল এবং প্যাডেল চালিত রিক্সা জনপ্রিয় হওয়ার ফলে পালকীর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

নোবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৬

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে!!

আপডেট সময় ০৪:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

‘বাক বাকুম পায়রা, মাথায় দিয়ে টায়রা, বউ সাজবে কাল কি, চড়বে সোনার পালকি। ছড়াটিতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি সংস্কৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। রামগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের বর ও কণের বহনের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি এখন আর আগের মত দেখা যায় না। শোনাও যায় না। চতুর দোলাতে চড়ে বধূ যায় হুন্ন, হুন্না। ৪০/৪৫ বছর পূর্বে দেশে বিবাহের সময়ে অত্র এলাকায় একমাত্র ব্যবহার হত পালকি।

 

পালকি ঘিরে কত হাসি তামাশার গল্প আজ ও শোনা যায় দাদা-দাদি বা মায়ের কাছ থেকে তা নিতান্তই রোমাঞ্চকর বটে। নানা ঘটনার সাক্ষী এই পালকি আজ হারিয়ে গেছে। এ ছাড়াও পালকি যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হত। এই বাহনে এক বা দুইজন যাত্রী নিয়ে পালকি ব্যবহার করা হত। এটিকে কাঁধে তুলে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যেত ৪ বা ৮জন বাহক। রাতে বিবাহ হত ভোরবেলা পালকীতে করে বর ও কনেকে ৮জন বাহক দিয়ে দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিয়ে তাদেরকে নিয়ে আসা হত। সেকি আনন্দ তা আজ আর নেই।

 

আসার পথে বাহকরা বর-কনেকে নিয়ে বিভিন্ন ছন্দে ছন্দে গান পরিবেশন করে গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা পাড়ি দিত। অপরদিকে বরের বাড়িতে কুলোতে ধান দূর্বা নিয়ে নববধূকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত বরের মাতা ও বোনেরা। পালকীতে চড়ে বর ও কনে বাড়িতে পৌছা মাত্র ধান ও দুর্বা ছিটিয়ে তাদেরকে বরণ করত এবং বাড়ির লোকজনরা কাদামাটি ও রং ছিটিয়ে উল্লাস করত।

 

সেই রং বেরঙের পালকী সন্ধান আর নেই। আধুনিক যানবাহন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে অভিজাত শ্রেণির লোকেরা পালকিতে চড়েই যাতায়াত করত। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও অন্যান্য শুভ অনুষ্ঠানে বর-কণের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল।

 

এছাড়াও অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসালয়ে নেওয়ার জন্য পালকি ব্যবহার হত। পালকি বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে ছোট সাধারণ পালকি ডুলি দুইজনে ব্যবহার করে। সবচেয়ে বড় পালকি বহন করে ৪-৮ জন বাহক। পালকির বাহকরা এর পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন কাজ করত। বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ১০/১২ দিন পূর্ব থেকেই পালকির বাহকদের ও মালিকদের বুকিং করে রাখা হত।

 

তবে পালকি সচরাচর তিন ধরণের হয়ে থাকে। সাধারণ পালকি, আয়না পালকি ও ময়ূরপঙ্খী পালকী। ওইসব পালকীতে কাঠের তৈরি পাখি, পুতুল ও লতাপাতা নকশা দিয়ে তৈরি হত। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর শিলাইদহে অবস্থানকালে তার জমিদারী কাছারি পরিদর্শনের সময় পালকী ব্যবহার করতেন। ১৯৩০ এর দশকে শহরাঞ্চলে রিক্সা প্রচলন হওয়ার পর থেকে পালকীর ব্যবহার ক্রমশ উঠে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্রমাগত প্রসার, সড়ক ও নদীপথে মোটর ও অন্যান্য যান চলাচল এবং প্যাডেল চালিত রিক্সা জনপ্রিয় হওয়ার ফলে পালকীর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।