বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় এক সাংবাদিককে মারধর ও ক্যামেরা, মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় অপর এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা রজু হয়েছে।
ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক মুক্ত খবর পত্রিকার কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে কুমিল্লা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত -২ এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামী করা হয় বুড়িচং উপজেলার জগতপুর গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক পরিচয়দানকারী আব্দুল মোমেন ও মাহবুব নামে আরেক ড্রেজার ব্যবসায়ীকে।
বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৬ মার্চ কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার জগতপুর এলাকায় প্রকাশ্যেই অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার সংবাদ সংগ্রহে যান সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিক।
ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার ছবি ও ভিডিও সংগ্রহকালে আব্দুল মোমেন উপস্থিত হয়ে নিজেকে প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে রিপোর্টারকে এলোপাথাড়ি চড়থাপ্পর দিয়ে সঙ্গে থাকা ক্যামেরা, এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও পেশাগত পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করেন।
একপর্যায়ে আব্দুল মোমেন মামলার ভয় দেখিয়ে সাংবাদিক এর কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং এ ঘটনায় নিউজ প্রকাশ বা আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ার শর্তে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বলেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিক অস্বীকৃতি জানালে আব্দুল মোমেন সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেয় এবং ড্রেজার ব্যবসায়ী মাহবুব ও তাদের সাথে থাকা ৮-১০ জনের সহযোগিতায় আব্দুল মোমেন রাত সাড়ে ৮টায় আবু বকর সিদ্দিকে বুড়িচং থানায় নিয়ে আসে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে মোবাইল ও আইডি কার্ড দিয়ে আবু বকর সিদ্দিক প্রকৃত সাংবাদিক কিনা যাচাই বাছাই করতে বলেন। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উভয়ের বক্তব্য শুনে সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিক এর বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
পরে আবু বকর সিদ্দিক কুমিল্লা এসে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে অভিযুক্তদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে ২২ মার্চ কুমিল্লা আদালতে একটি মামলার আবেদন করেন।
স্থানীয়র সাংবাদিকরা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে আব্দুল মোমেন নামে ওই ব্যক্তি নিজেকে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে আসছেন এবং বিভিন্ন জায়গাই প্রভাব বিস্তার করে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে এ ঘটনায় বুড়িচং উপজেলায় কর্মরত পেশাদার সকল সাংবাদিকরা আব্দুল মোমেনের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানান।