লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের মাধবপুরে এ বছর গত ফাল্গুন মাসে হঠাৎ করে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় চা বাগানের জন্য আর্শিবাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টিতে বালু দোঁআশ মাটি ভিজে বাগানের চা গাছগুলো তরতর করে বেড়ে উঠেছে।
এ কারণে এখন খরা মৌসুম চললেও মাধবপুরে ৫টি চা বাগানে চা পাতা উত্তোলন শুরু হয়েছে। নারী চা শ্রমিকরা চা পাতা উত্তোলনের জন্য সকালেই দুটি পাতা একটি কুঁড়ি তোলার জন্য চা বাগানে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাগান সংশ্লিষ্টদের আশা সামনের দিনগুলো আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চা উৎপাদন করা সম্ভব হবে। দেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল চায়ের চাহিদা এবং দাম সারাদেশে ও বিদেশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ কারণে বাগান কর্তৃপক্ষ নতুন বাগান সৃজনের পাশাপাশি কারখানার পরিধিও বৃদ্ধি করেছে। তেলিয়াপাড়া চা বাগানে আনুষ্ঠানিকভাবে নারী শ্রমিকরা চা পাতা উত্তোলন শুরু করেছেন। এ উপলক্ষ্যে বাগানের ভেতরে হিন্দু- মুসলিম-খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ শ্রমিকরা আলাদা আলাদা ভাবে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করেছে। পরে বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক দীপংকর সিনহা ও সনত কুমার দত্ত বিগত বছরে কর্মক্ষেত্রে চাপাতা উত্তোলনে বিশেষ দক্ষতার জন্য ৭ নারী শ্রমিককে পুরস্কার প্রদান করেন।
ব্যবস্থাপক এমদাদুর রহমান মিঠু বলেন, এখন সারা দেশে চায়ের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে চায়ের গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে। চা চাষের পরিধি বৃদ্ধির জন্য পতিত এলাকায় নতুন চারা গাছ রোপনের কাজ চলছে। সুরমা চা বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল কাশেম বলেন, এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম চা বাগান হচ্ছে সুরমা চা বাগান। এ বাগানে প্রায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ৩ হাজার শ্রমিক চা বাগানের কাজের সঙ্গে জড়িত।
গত বছর চায়ের উৎপাদন কম হলেও দাম ভালো ছিল। এবছর ফাল্গুন মাসে বৃষ্টিপাত হওয়ায় চা বাগানের মাটিতে এখনও আর্দ্রতা রয়েছে। চা গাছ মাটি থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয়েছে এ কারণে সবুজে ভরে যাচ্ছে চা বাগান। সুরমা চা বাগানে গত ১৫ বছর ধরে কয়েকশত একর পতিত জায়গায় নতুন বাগান করায় এখন কারখানা দ্বিগুণ করা হয়েছে।
এবছরও পতিত জায়গায় নতুন চা বাগান করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই চাপাতা উত্তোলন শুরু করা হয়েছে। প্রকৃতি সদয় হলে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চা উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এতে করে মালিক শ্রমিকপক্ষ অনুপ্রাণিত হয়েছে।