রুবেল হোসাইন সংগ্রাম-
মিঠাপুকুর উপজেলার ০৩ নং-পায়রাবন্দ ইউনিয়ন এবং ০২ নং-রানীপুকুর ইউনিয়নের বলদীপুকুর আবাসন প্রকল্পের গুচ্ছ গ্রামে মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ এবং দাফন কার্য সম্পন্ন করেনি অত্র এলাকার মুসল্লীরা।দিনভর আলাপ আলোচনা করার পর মসজিদের ঈমাম,মুয়াজ্জিন এবং মসজিদ কমিটি কেউ সম্মতি জ্ঞাপন না করায় শেষে অন্য গ্রামে দাফন কার্য সম্পন্ন করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম মোঃ সাইদুল ইসলাম (৫২) তার বাবার নাম মৃত- মঈনুদ্দিন।
এলাকাবাসী ও স্হানীয়রা জানান, ৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ৬ ঘটিকার সময় সাইদুল ইসলাম কয়েকদিন থেকে অসুস্থ থাকার পর নিজ বাড়িতে মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর পর সাইদুলের দাফনকাজ সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেন তার স্বজনরা। সে অনুযায়ী অত্র সমাজের বিভিন্ন লোকজনের সহিত দাফনের সময়সূচী এবং কবরস্থানের জায়গা নির্বাচনে মসজিদ কমিটির সিধান্ত নিতে গেলে কমিটির লোকজন মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ততা থাকায় তার জানাজা করবেনা বলে জানিয়ে পূর্বের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। এরপর সারাদিন চলে দফায় দফায় আলোচনা।
লহনী কোনাপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি তোজাম্মল হোসেন, মিজানুর রহমান (ঈমাম) মোসলেম উদ্দিন (মোয়াজ্জিন) সহ কয়েকজন জানান, মসজিদের আশেপাশে কয়েকজন চোলাইমদ তৈরি এবং বিক্রি করে আসছিলো। বেশ কিছুদিন আগে মসজিদে নামাজরত কয়েকজন ব্যক্তি দেখতে পান মসজিদ ঘরের ভিতরে চোলাই মদের কয়েকটি বোতল পড়ে রয়েছে। পরে তারা জানতে পারেন মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য কৌশলে মসজিদ ঘরের বারান্দায় টাইগারের বোতলে মদ রেখে বিক্রি করতেন। মাদক ব্যবসায়ীরা ফজরের নামাজের সময় চোলাইমদ তৈরি করার কারনে চোলাইমদের গন্ধে মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের সমস্যা হতো। বিভিন্ন সময়ে তাদের সচেতন করার পরেও তারা চোলাই মদ উৎপন্ন ও বিক্রি বন্ধ করেনি। থানায় অভিযোগ দিয়েও মসজিদ সংলগ্ন মাদক ব্যবসা বন্ধ করা যায়নি। বরং মসজিদ কমিটির লোকজনকে মাদক ব্যবসায়ীরা হেনস্তা করতেন।
মাদক ব্যবসার হাত থেকে সমাজ রক্ষা এবং মসজিদ সংলগ্ন বাড়ি গুলোতে চোলাইমদ বন্ধে মসজিদ কমিটি, গ্রামবাসী সমাজ সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদক কারবারিদেরকে জানিয়ে দেয়া হয়, কেউ মাদক ব্যবসা বন্ধ না করে মাদক ব্যবসা চলমান রাখলে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান,মিলাদ মাহফিল,এমনকি কেউ মাদক ব্যবসা চলাকালীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তাদের জানাজা বর্জন করা হবে। এতেও কেউ কেউ চলমান রাখে মাদক ব্যবসা।
মৃত-সাইদুল ইসলামের ছেলে ওয়াজেদ আলী জানান, বারবার অনুরোধ করেও বাবার জানাজা এবং দাফনকার্যে কেউ এগিয়ে আসেনি। শেষে মাগরিবের নামাজের পর রাতে আমার বাবার গ্রামের বাড়ি উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামে রাত আনুমানিক ৯ টায় কবরস্থ করা হয়। সে জানায়, আমার বাবা আগে মাদক ব্যবসা করলেও এখন আর করতো না। তিনি সামাজিক ব্যবস্হার উপর খোভ ঝাড়েন। এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা চান। তার মা ওয়ারেছা বেগম জানান, সুদখোর, ঘুসখোর, জেনাকারী এদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্হা নিয়েছিলো সমাজ।তার স্বামী মাদক ব্যবসায়ি ছিলোনা।
এ বিষয়ে ইউপি-চেয়ারম্যান ফয়জার রহমান (খাঁন) জানান, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। কেউ আমাকে কোন অভিযোগ করেনি। তাই আমি কিছু বলতে পারবোনা।