রুহুল আমিন, জেলা প্রতিনিধি মানিকগঞ্জ।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে র্যাব পরিচয়ে আপহরন করে মুক্তিপণ দাবি করা অপহরণকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার ও অপহৃতকে উদ্ধার করেছে র্যাব ৪ এর একটি দল।
সোমবার বিকেলে র্যাব ৪ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। উদ্ধার হওয়া অপহৃত সাটুরিয়া উপজেলার সাফুল্লি গ্রামের মোঃ বিল্লাল হোসেন এর পুত্র দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্র মোঃ রানা আহমেদ (১৯)।
আর গ্রেফতার হওয়া আপহরনকারীরা হচ্ছে, রাজশাহীর মোঃ আশিকুর রহমান (২৯), চাঁদপুরের শাহ মোঃ দোজাহান (২২), ঢাকার মোঃ মিঠুন (১৮), মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার সাফুল্লির মোঃ হাবিবুর রহমান (২৭), মোঃ শরিফুল ইসলাম (৩২)।
জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যার দিকে সাটুরিয়ার সাফুল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ফুটবল খেলা শেষে বাড়ী ফেরার পথে ভিকটিম মোঃ রানা আহমেদকে র্যাবের জ্যাকেট ও র্যাবের লোগো সম্বলিত মাস্ক পরিহিত অবস্থায় কতিপয় ব্যক্তি র্যাব পরিচয় দিয়ে পথরোধ করে মাথায় পিস্তল ঠেকায় এবং পকেটে ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকিয়ে তাকে মাদক পাচারকারি হিসেবে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাতে অপহরনকারী দলের এক সদস্য ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে তার পিতার কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলে হুমকি দেয়। ভিকটিমের বাবা মুক্তিপনের টাকা কমানোর জন্য বার বার অনুরোধ করে ৫ লক্ষ টাকা দেবার সিদ্ধান্ত হয়। মুক্তিপণের দাবিকৃত ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে অপহরনকারীরা ভুক্তভোগীর বাবাকে মিরপুর ১ গোল চত্তর এলাকায় আসতে বলে।
এ ঘটনায় অপহৃতের বাবা র্যাব ৪ এ লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করে যে, দ্বাদশ শ্রেনীতে অধ্যয়নরত তার ছেলে মোঃ রানা আহমেদ (১৯) কে র্যাব পরিচয়ে কিছু লোক একটি সাদা মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে অপহরণকারীরা ভিকটিমের পিতার নিকট ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।
পরে র্যাবের আভিযানিক দলের পরিকল্পনায় ও তত্ত্বাবধানে ভিকটিমের বাবা কাছে মুক্তিপণের টাকা নিতে এসে অপহরকারীর এক সদস্য উপস্থিত হলে র্যাবের আভিযানিক দল কর্তৃক গ্রেফতার করা হয় এবং উক্ত অপহরনকারীকে জিজ্ঞাসাবাদে পল্লবী থানাধীন মিরপুর সাগুপ্তা হাউজিং লিঃ সমিতির প্লট হতে অপহৃত ভুক্তভোগীসহ ১টি পিস্তল, ১টি গুলি, ৯৮ পিস ইয়াবা, র্যাব জ্যাকেট, সেনা আইডি কার্ড, ভুয়া র্যাব আইডি কার্ড, র্যাব লোগো সম্বলিত স্টিকার, র্যাব মনোগ্রামযুক্ত মাক্স উদ্ধারপৃর্বক অপহরনকারীর আরো ২ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে অভিযানে অপহরনকারী দলের মূল সহযোগী হাবিবুর এবং অপর সহযোগী শরিফুলকে সাটুরিয়ার সাফুল্লি এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ধৃত আসামীরা একে অপরের পূর্ব পরিচিত। ভিকটিমের বাবা এলাকার ব্যবসায়ী। ভিকটিমের পরিবার তুলনামূলক ভাবে অর্থশালী হওয়ায় প্রতিবেশী মোঃ শরিফুল ইসলাম এবং হাবিবুর রহমানের পরিকল্পনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাকি অপহরণকারীরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
অপহরণকারীরা অপহরণের পর ভিকটিমের উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চালায়, অপহৃত ভিকটিম উদ্ধার এবং অপহরনকারী গ্রেফতারের অভিযান চলাকালীন র্যাবের আভিযানিক দলের ৫ সদস্য আহত হয়।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন এবং এই ধরনের অপহরণকারীর বিরুদ্ধে র্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।