রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর করপাড়া ইউনিয়নের শ্যামপুর ও চাটখিল উপজেলার সাহাপুর সড়কটিতে পিচ ঢালাই করে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয় ২০০১ সালে। এতে দুই উপজেলার মানুষের চলাচলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হয়। ৬-৭ কিলোমিটার সড়ক দিয়ে ঘুরে যাওয়া থেকে পরিত্রাণ পায় এলাকাবাসী। অধিক সময় নষ্ট এবং অতিরিক্ত টাকা খরচ থেকে রক্ষা পায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার লোকজন। রামগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর থেকে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সাহাপুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। সড়কের বেশির ভাগ অংশে খানাখন্দ।
https://youtu.be/tnGWlaeW9-U
এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে কাদামাটিসহ ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় লোকজন ও পরিবহণ শ্রমিকরা। ওই সব গর্তের উপর দিয়ে অটোরিকশা, ইজিবাইক, মালবাহী গাড়ি, কিংবা যাত্রীবাহী ছোট ছোট যানবাহন উল্টে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার মতো ঘটনাও ঘটছে। এতে চলাচলে দুর্ভোগে পড়ে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় লোকজনের কাছে সড়কটি হয়ে ওঠে চলাচলের অন্যতম মাধ্যম। অথচ কয়েক বছর ধরে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় এর বেশির ভাগ অংশেই খানাখন্দে সয়লাব হয়ে গেছে। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ-খোয়া উঠে গেছে অনেক আগেই। এখন সেখানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দের। এবড়োখেবড়ো সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। বৃষ্টি হলে পানি জমে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী ৬-৭ কিলোমিটার দূরত্বের অন্য সড়ক ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিভিন্ন সময় এ সড়ক সংস্কারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদসহ এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চেষ্টা-তদবির করে কোনো ফল পায়নি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাটিয়ালপুর গ্রামের মো. মিন্টু বলেন, ২০১৯ সালে শেষবারের মতো সড়কটি সংস্কার করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটি সংস্কারে ব্যাপক অনিয়ম করায় এলাকাবাসী বাধা দেয়। ঠিকাদার আমাদের কোনো আপত্তি কানে না নিয়ে কাজ শেষে বিল নিয়ে যান। মাত্র কয়েক মাসের মাথায় ঢালাই উঠে গিয়ে সড়কটিতে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়। সাবেক পোস্টমাস্টার মো. আবদুল ওয়াহাব মাস্টার, ব্যবসায়ী শাহ আলম বাবুল ও চাকরিজীবী ইকবাল হোসেনের সঙ্গে কথা হয়।
তাঁরা বলেন, বছর তিনেক আগে সড়কটি সংস্কার হলেও আগের সড়কের পিচ ঢালাই ব্যবহার করে পুনরায় সড়ক নির্মাণ করায় কয়েক দিনের মাথায় সড়কের ওপরের অংশ উঠে যায়। এতে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। শাহজকি ও সাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী চরম কষ্টে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে কাদা-পানি মাড়িয়ে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা অনেক আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জাহীদ মীর্জা বলেন, ‘আমি কয়েক দিন আগে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি।
এ এলাকার অধিকাংশ সড়কেরই দৈন্যদশা। চেষ্টা করছি, যত দ্রুত সম্ভব সমিতির বাজার-শ্যামপুর ও শ্যামপুর-সাহাপুর বাজার সড়কটি সংস্কারে ব্যবস্থা করা হবে। রামগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহীদুল হাসান বলেন, রামগঞ্জ উপজেলায় পাকা করার জন্য অনেক সড়কের তালিকা করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করা হবে। তিনি এ সময় শ্যামপুর-সাহাপুর সড়ক সংস্কার তালিকায় আছে কি না, সে ব্যাপারে জানাতে পারেননি।