নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :
নবীগঞ্জ উপজেলার ৬নং কুর্শি ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান গঠনের ৪ মাস পর নির্বাচিত ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ শামসুল ইসলাম সুজনকে পরিবর্তন করে জাকির হোসেনকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ এবং ৩নং প্যানেল চেয়ারম্যান সুমি বেগমকে পরিবর্তন করে রুনা বেগমকে প্যানেল চেয়ারম্যান-৩ ঘোষনা করার ঘটনায় কুর্শি ইউনিয়নের সর্বত্র আলোচনার ঝড় বইছে। তবে গোপন ভোটে নির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যান-২ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি বাবলু আহমদকে বহাল রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদ ও সচিব নীলয় দাশের বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতির অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত দরখাস্ত দাখিল করেছেন ৩ বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য এবং নির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যান-১ শাহ সামসুল ইসলাম সুজন। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে ১৯ ফের্রুয়ারি ২০২২ইং তারিখে নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠনকল্পে এক সভা অনুষ্টিত হয়। চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদ এর সভাপতিত্বে ওই সভায় উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক কাজী ওবায়দুল কাদের হেলালসহ পরিষদের সকল সদস্যবৃন্দ, ইউপি সচিব, ওয়ার্ড ও ইউপি আওয়ামীলীরে নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত সভায় প্যানেল চেয়ারম্যান-১ হিসেবে দু জন তাদের প্রার্থীতা ঘোষনা করেন। মেম্বার শাহ শামসুল ইসলাম সুজন ও মেম্বার জাকির হোসেন। প্যানেল চেয়ারমান-২ হিসেবে মেম্বার বাবলু আহমদ ও মেম্বার অলিউর রহমান তাদের প্রার্থীতা ঘোষনা করেন। কোন প্রকার সমঝোতা না হওয়ায় ভোটের মাধ্যমে শাহ শামসুল ইসলাম সুজন ৬ ভোট, প্রতিদ্বন্ধি জাকির হোসেন ৫ ভোট পান। প্যানেল চেয়ারম্যান-২ হিসেবে বাবলু আহমদ-৭ ভোট এবং অলিউর রহমান-৪ ভোট পান।
ফলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ হিসেবে শাহ সুজন ও প্যানেল চেয়ারম্যান-২ হিসেবে বাবলু আহমদ এবং সমঝোতায় ৩নং প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে সুমি বেগমকে ঘোষনা করা হয়। তবে মেম্বার দিলকাছ মিয়া প্যানেল গঠনে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকেন। প্যানেল গঠনের সংবাদটি স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় ছবিসহ ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ইতিমধ্যে উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান বা সচিব কোন প্রকার বক্তব্য প্রদান করেন নি।
দীর্ঘ ৪ মাস পর বিগত ২৯ মে ইউনিয়ন পরিষদের এক সভায় ( ওই দিন শাহ সুজনের ভাইয়ের বিয়ে থাকায় অনুপস্থিত) চেয়ারম্যান ও সচিব র্যাজুলেশন করে নির্বাচিত ১নং ও ৩ নং প্যানেল চেয়ারম্যান পরিবর্তন করে মেম্বার জাকির হোসেনকে ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান ও রুনা বেগমকে ৩নং প্যানেল চেয়ারম্যান হিসবে লিখা হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ইউনিয়নের সর্বত্র ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউনিয়নের সচিব নীলয় দাশ বলেন, ১৯ ফের্রুয়ারি প্যানেল গঠনে নির্বাচন হয়নি। সমঝোতায় সর্ব সম্মতিক্রমে জাকির হোসেনকে ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান দেয়া হয়েছে। পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদ বলেন, প্যানেল গঠনে কোন নির্বাচন হয়নি। ১০ জন সদস্য নিজ হাতে লিখে তাদের পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে দেন।
এতে সকলই জাকির হোসেনের নাম লিখেন। ফলে তাকেই প্যানেল চেয়ারম্যান-১ করা হয়েছে। এদিকে নাম অপ্রকাশের শর্তে একাধিক লোকজন বলেছেন, ১৯ ফের্রুয়ারি কন্ঠ ভোটে শাহ শামসুল ইসলাম সুজন ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান, বাবলু আহমদ ২নং প্যানেল চেয়ারম্যান এবং সুমি বেগম ৩নং প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষনা দেয়া হয়। ৪ মাস পর কিভাবে তা পরিবর্তন হলো তাদের বোধগোম্য নয়।