ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: তদন্তকারী কর্মকর্তার দ্বারে দ্বারে ঘুরে নানাভাবে হেনস্থার শিকার মামলার বাদী প্রায় এক বছরেও খোঁজ মিলেনি অপহৃত স্কুল শিক্ষার্থী সুমাইয়ার, মেয়ের খুঁজে পাগল প্রায় মা। অপহরনের শিকার এক স্কুল ছাত্রীর অসহায় মাতার আহাজারিতে আকাশ বাতাস যেন কাঁপছে। খাওয়া নেই, পড়া নেই।
টানা প্রায় দশ মাস ধরে অপহৃত মেয়েকে খুঁজে খুঁজে পাগল প্রায় সেই মা। মেয়েকে খুঁজে পেতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ব্যর্থ হচ্ছে। উল্টো সিআইডি পুলিশের কর্মকর্তা অশালীন মন্তব্য করে ও অঙ্গ ভঙ্গি প্রদর্শন করে তাড়িয়ে দিয়েছে অফিস থেকে। বিচারের আশায় পথে পথে ঘুরেও কুল কিনারা পাচ্ছেন না তিনি।
এই অফিস থেকে সেই অফিস। তদন্তকারী কর্মকর্তার দ্বারে দ্বারে ঘুরে নানাভাবে হেনস্থার শিকার মামলার বাদী। আত্মীয়ের দোহাই দিয়ে মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে। মেয়ে জীবিত আছে নাকে মৃত তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় কাটে তার প্রতিদিন। গত বছরের ২০ জুন শহরের সাবেরা সোবহান উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া সুলতানা অ্যাসাইম্যান্ট জমা দিতে বের হওয়ার পর অপহরণের শিকার হয়।
এ ঘটনায় থানায় মামলা দিতে গিয়ে বাঁধার মুখে পড়ে পরিবারটি। পরবর্তীতে শহরের পুনিয়াউটের সন্ত্রাসী রিফাত হাসানসহ চারজনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত স্বাক্ষীদের জবান বন্দি গ্রহণ করে অপহরণের শিকার স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধারে পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। দীর্ঘ সময়েও পিবিআই উদ্ধার করতে না পেরে গত বছরের ২৩ নভেম্বর একজনকে আসামী করে প্রতিবেদন দাখিল করে। মামলার বাদী এতে আপত্তি জানিয়ে বিজ্ঞ আদালতে আসামীদের মামলার অর্ন্তভুক্ত করার দাবি জানান।
পরে আদালত মামলাটি অধিক তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশের কাছে নেস্ত করে। সে সাথে সাত কার্য দিবসে মধ্যে অপহৃতকে উদ্ধার করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্যা করে নানা টালবাহানা শুরু করে তদন্তকারী কর্মকর্তা। নানা ভাবে হয়রানি শুরু করে বাদীকে। অশোভন আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে বাদীকে তাচ্ছিল্য করে। এর মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তার পরিবর্তনও হয়। এরপরও একই অবস্থা।
উদ্ধারের পরিবর্তে চোখ রাঙ্গাতে থাকে বাদীকে। অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করে। অপহৃত স্কুল ছাত্রী জীবিত কিনা মৃত তাও জানাতে পারেনি।তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অপহরণ কারীদের মোবাইল নাম্বার বন্ধের কথা জানানো হয়। সে সাথে মোবাইল কললিস্টে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল নাম্বার পাওয়া যায়। মামলার বাদী উম্মে হানি বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাকে ডেকে এনে ঘটনার মিমাংসা করার প্রস্তাব দেয়।
তারা বলেন, জীবিত থাকলে উদ্ধার করতে দুই বছর সময় লাগবে। এ নিয়ে আমার পরিবারে চরম হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে মেয়ে নিখোঁজ অন্যদিকে তদন্তকারী কর্মতর্তার প্রচন্ড চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছি আমি। তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার মেয়েকে উদ্ধারের পরিবর্তে আসামীদের সাথে যোগসাজশ করে আসামীদের বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পরিদর্শক মো: আকতার হোসেন বলেন, ভিকটিমকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি কিন্তু খুঁজে পাচ্ছি না। ভিকটিম পেলে রিপোর্ট দেব। আসামীদের কোন মোবাইলই নেই। আগে যে কললিস্ট ছিলো তা বিশ্লেষণ করে সার্বিক প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে।