স্টাফ রিপোর্টার : পরপর ৪ বার ৪ জনের সাথে বিয়ে বাণিজ্যের প্রতারণা, জিম্মি ও হত্যাচেষ্টার অপরাধে সাংবাদিক সোহেলের মামলায় গত (২৬ মে) বৃহস্পতিবার ঢাকা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মাহিসহ চার জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায় মাহির মা বাবা প্রথমে সদরপুরের একটি ছেলের সাথে মাহিকে দিয়ে বিয়ের আংটি পড়ানোর নাটক সাজিয়ে দুই মাস পর্যন্ত সেই ছেলের নিকট থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে অবশেষে সেই ছেলেকে এ্যাংগেজমেন্টের আংটি ফেরত নিতে বাধ্য করলে ছেলেটি মাহিদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকটি মোটর সাইকেল যোগে ৮/১০ জন লোকজন নিয়ে মাহিদের বাড়িতে এসে টাকা ফেরত দিতে চাপ সৃষ্টি করলে মাহিরা কয়েক দফা সেই টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও আজো তা ফেরত দেয়নি।
দ্বিতীয়বার মাহির মা বাবা মাহিকে দিয়ে কুতুবপুরের একটি ছেলের সাথে বিয়ের নাটক সাজিয়ে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাহিকে বাসর ঘরে পাঠায়। মাহি স্বামীর বিছানার নিচে সেই ইয়াবা রেখে সুকৌশলে স্বামীকে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে বাপের বাড়ি ফিরে আসার পরেই মাহিরা সেই ছেলেকে জোরপূর্বক ডিভোর্স মেনে নিতে বাধ্য করে।
তৃতীয়বার মাহিরা মাদারীপুরের সিয়াম নামের একটি ছেলের বাবা ও মামার সাথে কথা বলে পারিবারিক ভাবে বিয়ের লোভ দেখিয়ে মাহি তার নিজের বিকাশ একাউন্টে সিয়ামের নিকট থেকে টাকা হাতানোর পর বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করার মূহুর্তে মাহিরা তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে প্রতারণা করে।
উল্লেখিতো ৩ টি প্রতারণা ছাড়াও মাহি নায়িকা হিসেবে সাংবাদিক ও পরিচালক সোহেলের সিনেমার শ্যুটিং করার শর্তে পারাবারিক টানাপোড়েন দেখিয়ে অনেক টাকা অগ্রিম নিয়েছিলো। পরবর্তীতে মাহি শ্যুটিং করে দিতে অনিচ্ছুক হয়ে অগ্রিম টাকা ফেরত না দেওয়ায় সাংবাদিক সোহেল শিবচর থানায় মাহির নামে জিডি করলে ৪ জন পুলিশ মাহিদের বাড়ি এসে এলাকার মেম্বার ও অন্যান্য মাদবরদের উপস্থিতিতে সোহেলের সঙ্গে ঝামেলা মীমাংসা করার হুঁশিয়ার দিয়ে যায়।
এমতাবস্থায় মাহির মা বাবা পরিকল্পিতভাবে বিষয়টা নিজেরা মীমাংসা করার কথা বলে এক রাতে সোহেলকে ডেকে তাদের ঘরে নিয়ে মাহিকে দিয়ে ফাঁসিয়ে জরিমানা আদায়ের লক্ষ্যে জিম্মি করে মোবাইল কেড়ে নিয়ে ফ্লাশ দিয়ে মূল্যবান অনেক প্রমাণাদি ভ্যানিশ করে তৎক্ষণাৎ মাদবর ও গ্রামবাসীদের ডেকে বিচার বসায়। সেই বিচারে সোহেল নির্দোষ প্রমাণিত হয় এবং মাহিরা দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বিচারের মধ্যেই মানুষেরা মাহিকে ও তার মা’কে মারধর করেছিলো।
পরবর্তীতে মাহি ও তার মা বাবা সোহেলকে কয়েক দফা মারার হুমকি দিয়েছে যা মোবাইলের ভয়েস রেকর্ড ও মেসেজে প্রমাণিত। সম্প্রতি আচমকা রাতের আঁধারে মাহিরা সোহেল’কে লাঠিসোটা নিয়ে ঘেরাও করেও হত্যাচেষ্টা করে ব্যার্থ হয়েছে।
আমাদের রিপোর্টার কর্তৃক সরেজমিনে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় যে, সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ হাওলাদারসহ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ নিয়ে সোহেল ও মাহিদের মধ্যকার ঝামেলা নিয়ে বিগত ৩ বছরে ৯ বার দরবার শালিস হয়েছে।
সম্প্রতি মাহির বাবা একটি স্হায়ী মীমাংসার আশ্বাস দিলেও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারিসহ দুই পক্ষের অভিভাবকরা দরবারে বসলেও অবশেষে মাহিদের পক্ষের গড়িমসির কারনে মীমাংসা হয়নি বিধায় সাংবাদিক সোহেল ঢাকা কোর্টে নির্ধারিত ৪ জন ও অজ্ঞাতনামা কয়েক জনের নামে মামলা দায়ের করেছিলো।
সেই মামলায় আজ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবার পর সাংবাদিক সোহেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে, আসামীদের গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড চেয়ে মাহিরা ইয়াবা ব্যবসার সাথেও জড়িত কিনা তা উদঘাটন সহ সোহেলকে জিম্মি ও রাতের আঁধারে হত্যাচেষ্টার প্লানে আর কারা কারা জড়িত ছিলো তাও উদঘাটন করে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।