৩. পরামর্শ গ্রহণ করা : একজন আদর্শ মানুষের অপরিহার্য গুণ হলো পরামর্শ গ্রহণ করা। ব্যক্তিগত, সামাজিক,রাষ্ট্রিয় ও আন্তর্জাতিক যে কোন মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল কাজে পরিষদের কিংবা জ্ঞানী-গুণীদের পরামর্শ গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে। এটি আল্লাহর নির্দেশ। এমনকি রাসূল (সা.) এর ওপরও এই নির্দেশ ছিল। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, এবং কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করুন। (সূরা তালাক : আয়াত ৩)
৪. তাওয়াককুল : সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা’য়ালার ওপর নির্ভর করা একজন মুসলিম আদর্শ মানুষের জন্য একান্ত অপরিহার্য। বিপদ আপদে আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হতে হবে। একজন আদর্শ মানুষকে সর্বাবস্থায় তায়াককুলের গুণে গুণান্বিত হতে হবে। আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে,আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট। (সূরা ত্বলাক : আয়াত ৩)
৫. অস্থিরতা পরিহার করা : একজন আদর্শবান মানুষকে অবশ্যই অস্থিরতা পরিহার করতে হবে। চরম বিপর্যয়ের সময়েও ধৈর্যশীল হতে হবে। রাসূল (সা.) বলেন,’ ধীরস্থীরতা আসে আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ থেকে, আর তাড়াহুড়ো আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। (তিরমিযি)।
৬. সত্যবাদিতা : একজন আদর্শ মানুষের মধ্যে যে সকল গুণ থাকা আবশ্যক তার মধ্যে অন্যতম হলো সত্যবাদিতা। সত্য মুক্তি দেয়, মিথ্যা ধ্বংস করে। আল-কোরআনে এসেছে, হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমরা সত্যবাদীদের সঙ্গে থাক। (সূরা তাওবা : আয়াত ১১৯)।
৭. ন্যায় বিচার : একজন আদর্শ মানুষকে অবশ্যই ন্যায়বিচারকের গুণে গুণান্বিত হতে হবে। কেননা, ন্যায় বিচার করা আল্লাহর নির্দেশ। কোরআনে এসেছে, আল্লাহ তা’য়ালা তোমাদেরকে ন্যায়পরায়ণতা ও সদাচরণের নির্দেশ দেন। (সূরা নাহল : আয়াত ৯০)। অন্যত্র বলেছেন, মানুষের প্রতি ন্যায়বিচার করো। (সূরা নিসা : আয়াত ৫৮)।
৮. ধৈর্যশীলতা : একজন আদর্শ মানুষকে অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে। কেননা, ধৈর্যশীলতা একটি মহৎ গুণ। আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমারা সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। (সূরা বাকারা : আয়াত ১৫৩)।
৯. বীরত্ব : যিনি আদর্শ মানুষ হবেন তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তাকে অবশ্যই সাহসী ও বীরত্বপূর্ণ হতে হবে। কোন ভীতু, দুর্বল লোক আদর্শ মানুষ হতে পারে না।
ইসলামি জীবনাচার, আদব-কায়দা ও শিষ্টাচারই মানুষকে শান্তিপূর্ণ জীবনের নিশ্চয়তা দিতে পারে। ইসলামে শিষ্টাচার বা আদবকে ঈমানের অংশ বলা হয়েছে। ইহকালে সুমহান মর্যাদার অধিকারী হতে হলে সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে হবে, কোনোরকম দাম্ভিকতা ছাড়াই সকলের সাথে মিশতে হবে। মুমিনের সম্প্রীতিবোধ সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নম্র-বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উচ্চাসনে আসীন করেন। (মিশকাত)।